জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেট সংস্থার তরফে এবার পিচ রোলার চুরির অভিযোগ আনা হল তারকা পারভেজ রসুলের বিরুদ্ধে। সংস্থার তরফে পিচ রোলার ফিরিয়ে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে জাতীয় দলের হয়ে খেলা তারকাকে। পাল্টা রসুল নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করে দিয়ে জানিয়ে দিলেন, "জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেটকে নিজের সর্বস্ব দেওয়ার পরে এমন ব্যবহার কি একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের প্রাপ্য?"
জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেট পরিচালনার জন্য বোর্ডের তরফে তিন সদস্যের এক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির এক সদস্য ব্রিগেডিয়ার অনিল গুপ্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "শুধুমাত্র পারভেজ রসুল নয় শ্রীনগর থেকে জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেট সংস্থার ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম নিয়েছে, সেই সমস্ত জেলা ক্রিকেট সংস্থাকেও ইমেল করা হয়েছে। কোনও ভাউচার ছাড়াই জেলা সংস্থাগুলিকে ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম বিলি করা হয়েছিল। অনেক জেলা সংস্থার ইমেল এড্রেস আমাদের নেই। তাই সংশ্লিস্ট জেলায় যাঁর নামে ইমেল এড্রেসে আমাদের কাছে নথিভুক্ত করা রয়েছে, তাঁদেরই মেল করা হয়েছে। পারভেজ রসুল এই কারণেই অপমানিত হয়েছেন।"
আরও পড়ুন: আফগান ক্রিকেট দফতরে তালিবান হানা, দখল হয়ে গেল রশিদদের হেডকোয়ার্টার্স
জম্মু কাশ্মীর হাইকোর্টের অর্ডারে বলা হয়েছিল বিসিসিআইয়ের রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা পরিচালনা করা উচিত। তার পরেই দুজন বিজেপির মুখপাত্র অনিল গুপ্তা এবং এডভোকেট সুনীল শেঠিকে সাব কমিটিতে নিয়োগ করা বিসিসিআই। সেই সঙ্গে কমিটিতে রাখা হয়েছে প্রাক্তন ক্রিকেটার মিঠুন মানহাসকেও। মজিদ দারকে ক্রিকেট উন্নয়নের দায়িত্বে আনা হয়েছে। তিনি এই সাব কমিটিকে রিপোর্ট দেবেন।
অনিল গুপ্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আরও বলছিলেন, "আমরা একটা অডিট রিপোর্ট তৈরি করতে চাইছি। যায় ব্যয়ের হিসাবে নিকেশ রাখতে হবে। কোর্টের অর্ডার মেনে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরেই দেখা যায় বহু ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম পাওয়া যাচ্ছে না।"
পারভেজ রসুলকে লেখা ইমেলে পুলিশি ব্যবস্থারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। "জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেট সংস্থার সরঞ্জাম আপনার কাছে রয়েছে। হার্দিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই দ্রুত সেই সরঞ্জাম ফিরিয়ে দিন। একসপ্তাহের মধ্যে ফেরত না দিলে পুলিশি অভিযোগ জানানো হবে।"
গুপ্তা বলছিলেন, দ্বিতীয় ইমেলে এটাচ করে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কারণ, অনেক জেলা ক্রিকেট সংস্থাই মনে করে ক্রিকেট সংস্থার সরঞ্জাম নিয়েও কোনও সমস্যা হবে না।
এমন ইমেলের জবাবে পারভেজ রসুল কড়া ইমেলে পাল্টা লিখেছেন, "আমিই প্রথম কাশ্মীরি ক্রিকেটার হিসেবে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছি। আইপিএল, ইরানি ট্রফি, বোর্ড সভাপতি একাদশ, দলীপ ট্রফি, দেওধর ট্রফি, ইন্ডিয়া এ- দলে খেলেছি। জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেট দলের শেষ ছয় বছরের অধিনায়ক। জম্মু কাশ্মীরের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বোর্ডের সেরা অলরাউন্ডারের পুরস্কার পেয়েছি দুবার। একটা চিঠি পেলাম যেখানে বলা হয়েছে আমি নাকি জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেট সংস্থার রোলার নিয়েছি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমার একমাত্র কাজ ক্রিকেট খেলা।"
আরও পড়ুন: দিল্লি ক্যাপিটালসে কি নেতৃত্ব হারাচ্ছেন পন্থ, বড়সড় আপডেট দিল ফ্র্যাঞ্চাইজি
সেইসঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, "আমি স্রেফ জিজ্ঞাসা করতে চাই এভাবেই কি একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত? জম্মু কাশ্মীর ক্রিকেটের জন্য নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছি। প্রত্যেক জেলায় ক্রিকেট সংস্থার অনুমোদিত সংস্থা রয়েছে। আমাকে জিজ্ঞাসা করার পরিবর্তে আপনাদের উচিত সেই সমস্ত জেলা সংস্থার কাছে জবাবদিহি করা।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন