তিন প্রধানেই চুটিয়ে খেলেছেন। ইউনাইটেড স্পোর্টসের জার্সিতেও মাতিয়েছেন কলকাতার ফুটবল। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফিতেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। তারকা ফুটবলার রাধাকৃষ্ণণ ধনরাজনই এবার চলে গেলেন না দেখার দেশে। কেরালার পেরিনতালমান্নায় সেভেন আ সাইড প্রদর্শনী ম্যাচে মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটল তাঁর। রবিবার রাতের দিকে এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ ফুটবল মহল।
পেরিনতালমান্না এফসি-র হয়ে খেলছিলেন তিনি। প্রতিপক্ষ ছিল স্বাস্থ্য মেডিকেলস ত্রিশূর। সেই ম্যাচের ২৭ মিনিটে মাঠে হঠাৎ পড়ে যান তিনি। তারপরেই নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ষীয়ান ডিফেন্ডারকে। সেখানেই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যু ঘটেছে তাঁর।
সেভেন্স ফুটবল টুর্নামেন্টের অন্যতম আয়োজক তথা ধনরাজনের বন্ধু আমিরুদ্দিন কেরালা থেকে জানিয়েছেন, "খেলার মাঝে হঠাৎই ধনরাজন মাটিতে পড়ে যায়। আমরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে সেখানে কোনও আশা মেলেনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হৃদরোগে মাঠেই মৃত্যু ঘটেছে আমার বন্ধুর।"
আরও পড়ুন বিরাট ধাক্কা নিউজিল্য়ান্ড শিবিরে, এক মাসের জন্য় মাঠের বাইরে বোল্ট
তিনি আরও বলছিলেন, "সাড়ে ৯টায় ম্যাচ শুরু হয়েছিল। ৯টা ৫৭ নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। হঠাৎ করে কী ঘটল, তা আমাদের বোধগম্য নয়। ম্যাচে ভালই খেলছিল ও। ভাল ক্লিয়ারও করছিল। তবে আচমকা ও বাঁ হাত তুলে মাটিতে পড়ে যায়।"
কেরালার অন্যতম জনপ্রিয় এই সেভেন্স ফুটবল টুর্নামেন্ট। আয়োজক অল কেরালা সেভেন্স ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। আইএম বিজয়ন, ডেনসন দেবদাস, জো পল আনচেরি, সিকে বিনীতের মতো কেরালার তারকা ফুটবলারা এই টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। টি২০ ক্রিকেটের ধাঁচে পুরো নব্বই মিনিট নয়, ৬০ মিনিট করে খেলা হয়ে থাকে। দুই অর্ধে ৩০ মিনিট করে। ধনরাজন ফুটবলার হিসেবে অবসর নিলেও এই প্রদর্শনী টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন ডোপ করে নির্বাসিত বক্সার সুমিত সাঙ্গওয়ান
কেরালার পালাক্কাডে জন্ম ধনরাজনের। আইলিগে খেলা ভিভা কেরালা এফসির জার্সিতে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে প্রথম নজর কাড়েন তিনি। তারপরে তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। কেরালা থেকে সটান পাড়ি দিয়েছিলেন কলকাতায়। এখানকার মোহনবাগান, মহামেডান, ইস্টবেঙ্গল তিন ক্লাবের হয়েই অংশ নিয়েছেন তিনি।
দারুণ ফুটবলার হওয়ার পাশাপাশি নেতৃত্ব দেওয়ার স্বভাবজাত প্রবণতাও ছিল ধনরাজনের। কেরালার সন্তোষ ট্রফি দলে নিয়মিত খেলতেন তিনি। ২০১৩ সালে ৭৩ বছর পরে মহামেডান প্রথম ডুরান্ড কাপ জেতে। সেই টুর্নামেন্টে সাদা-কালো ব্রিগেডকে চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন এই কেরল ফুটবলার। সেই বছরে দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি।