Mohun Bagan fan Umakanta Palodhi: ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর এক স্মরণীয় দিন। কিন্তু মোহনবাগান (Mohun Bagan) সমর্থকদের কাছে এটি শুধুই স্মরণীয় নয়, বরং যন্ত্রণার। সেদিন আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে মোহনবাগান ৫-০ গোলে হেরে যায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কাছে। সেই হার যেন ছুরি চালিয়েছিল সবুজ-মেরুন সমর্থকদের হৃদয়ে। কিন্তু এই হারের সবচেয়ে নির্মম পরিণতি ছিল এক সমর্থকের আত্মহত্যা।
উমাকান্ত পালোধি- এক নিঃশর্ত ভালবাসার নাম
উমাকান্ত পালোধি ছিলেন মোহনবাগানের এক নিবেদিতপ্রাণ সমর্থক। ফুটবল শুধু খেলা নয়, তাঁর জীবনের অস্তিত্ব ছিল। মাঠে যাওয়া, পতাকা নিয়ে গলা ফাটানো, খেলোয়াড়দের নাম মুখস্থ বলে যাওয়া, সবটাই ছিল তাঁর রুটিন।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের সেই দিনটি ভেঙে দিয়েছিল তাঁর সব স্বপ্ন। মোহনবাগান মাঠে ইস্টবেঙ্গলের প্রবল আক্রমণে একের পর এক গোল হজম করতে থাকে মোহনবাগান। শেষ স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-০। কলকাতা ডার্বির (Kolkata Derby) ইতিহাসে এটি ছিল মোহনবাগানের সবচেয়ে লজ্জাজনক হার।
আরও পড়ুন ভেস্তে যাচ্ছে মরশুমের প্রথম ডার্বি! চরম অনিশ্চয়তায় মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল মহারণ
হার মানতে না পেরে চিরবিদায়
খেলার পরে গ্লানিতে ডুবে যান উমাকান্ত পালোধি। খেলার প্রতি তাঁর ভালবাসা এতটাই গভীর ছিল যে সেই হার তিনি সহ্য করতে পারেননি। সে রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন। তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারা শহরে। এক ফুটবলভক্তের মৃত্যু কাঁদিয়ে তোলে গোটা ক্রীড়ামহলকে। একটি সুইসাইড নোটে তিনি লিখে যান, পরের জন্মে মোহনবাগানের ফুটবলার হয়ে এই হারের বদলা নেবেন।
আজও আলোচনায় উমাকান্ত
প্রায় পাঁচ দশক কেটে গেলেও, উমাকান্ত পালোধির নাম এখনও কাঁপায় মোহনবাগান সমর্থকদের হৃদয়। আজও ডার্বি ম্যাচে তাঁর কথা স্মরণ করে অনেকেই বলেন, "এটা শুধু খেলা নয়, কারও কারও জন্য জীবন-মরণ"। ফুটবলে আবেগ কতটা গভীর হতে পারে, তার প্রতীক হয়ে উঠেছেন উমাকান্ত।
আরও পড়ুন মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি নিয়ে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ, পুলিশের চিঠিতে চিন্তায় IFA
তবে এই ঘটনা নিয়ে সমাজে নানা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। কেউ বলেন, খেলায় হার-জিত থাকবেই, জীবন এত তুচ্ছ হতে পারে না। আবার অনেকে বলেন, খেলোয়াড়দের উচিত এমন হার থেকে শিক্ষা নেওয়া, কারণ তাঁদের পারফরম্যান্স হাজারো মনের উপর প্রভাব ফেলে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমরা এই প্রতিবেদন শুধুমাত্র ঐতিহাসিক ঘটনার প্রেক্ষিতে শ্রদ্ধার সঙ্গে উপস্থাপন করছি। আত্মহত্যা কখনওই কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। মানসিক চাপ বা হতাশায় ভোগা ব্যক্তির উচিত সাহায্য চাওয়া ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নেওয়া।
সহায়তা প্রয়োজন?
ভারতের আত্মহত্যা প্রতিরোধ হেল্পলাইন: 9152987821 (AASRA)