হঠাৎ করেই অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে টেস্ট অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৯০ টেস্টে ৩৮.১০ গড়ে ৪৮৭৬ রান করে আলবিদা জানিয়েছিলেন দীর্ঘতম ফরম্যাটকে। ২০০৫-এ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্টে ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ মহাতারকার। তার একদশক পরে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত। আচমকাই।
ধোনির এই হঠাৎ সরে দাঁড়ানোয় নির্ভেজাল আত্মত্যাগের কাহিনীই দেখছেন জাতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। সেই সময় ধোনির অবসরের সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ না করলেও রবি শাস্ত্রী অবশ্য এখন উপলব্ধি করতে পেরেছেন, ধোনি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: KBC-তে গিয়ে লাখ লাখ টাকা শেওয়াগ, সৌরভের পকেটে! কীভাবে খরচ, জানালেন নিজেরাই
শাস্ত্রী সম্প্রতি নিজের বই, "স্টার গেজিং: দ্যা প্লেয়ার্স ইন মাই লাইফ"-এ বলেছেন, "এমএস সেই সময় ভারতের এমনকি বিশ্বের সবথেকে বড় ক্রিকেটার ছিল। তিনটে আইসিসি খেতাব সমেত। দুটো বিশ্বকাপ তো বটেই আইপিএল থেকে মনিমানিক্য কিছু কম ছিল না ওঁর। দারুণ ফর্মে ছিল, সেই সঙ্গে ১০০ টেস্ট ম্যাচ থেকে মাত্র ১০ ম্যাচ দূরে ছিল।"
"দলের সেরা তিনজন ফিট প্লেয়ারের একজন ছিল এমএস। ও চাইলেই নিজের কেরিয়ারের পরিসংখ্যান উন্নত করতেই পারত। হ্যাঁ ওঁর বয়স কমছিল না। তবে এতটাও বয়স হয়ে যায়নি ওঁর। সেই সময় ওঁর সিদ্ধান্ত যুক্তিহীন মনে হয়েছিল।" লিখেছেন শাস্ত্রী।
শাস্ত্রী জানিয়েছেন, টিম ডিরেক্টর হিসাবে তিনি এই অবসর আটকানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। তবে ধোনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
আরও পড়ুন: সৌরভ না ধোনি, সেরার সেরা ক্যাপ্টেন কে! মুখ খুলে মুকুট পরালেন শেওয়াগ
শাস্ত্রী লিখেছেন, "অনেক ক্রিকেটারই বলেন, ক্রিকেটের ব্যক্তিগত নজির, মাইলস্টোন তাঁদের স্পর্শ করে না। তবে কিছু কিছু বিষয় তো তাঁদের ছুঁয়ে যায়। আমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ধোনির মন ভাঙানোর চেষ্টা করেছিলাম। তবে ওঁর কন্ঠস্বরে এমন কাঠিন্য ছিল, যে আমি আর এগোতে পারিনি। আমার মনে হয় ওঁর সিদ্ধান্ত একদম ঠিকঠাক ছিল- সাহসী এবং নিঃস্বার্থ। ক্রিকেট বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী পজিশন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ নয়।"
শাস্ত্রী বলেছেন, শচীন, কপিল দেবের সঙ্গেই ধোনি ভারতীয় ক্রিকেটের প্রভাবশালী ক্রিকেটারদের একজন। "ক্রিকেটার হিসেবে ধোনির প্রভাব বিশাল। খেলোয়াড় হিসেবে শচীন, কপিল দেবের সঙ্গেই একই ব্র্যাকেটে থাকবেন ধোনি। যে ব্র্যাকেটে থাকার অন্যতম শর্ত একাধিক ফরম্যাটে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা। (কোহলি যদি আরও কয়েক বছর নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারে, তাহলে এই তালিকায় চলে আসবে)। যদিও ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম আবির্ভাবে মনেই হয়নি ও এই উচ্চতায় পৌঁছবে।"
২০১৪-য় বর্ডার গাভাসকার ট্রফিতে মেলবোর্ন টেস্ট ড্র হওয়ার পরই আচমকা বিশ্বক্রিকেটকে স্তম্ভিত করে ধোনি অবসর ঘোষণা করেছিলেন। ভারতের সর্বকালের সফলতম ক্যাপ্টেন ধরা হয় ধোনিকে। উইকেটকিপার হিসেবেও ৮০০ আউটের নজির রয়েছে তাঁর নামের পাশে। টেস্ট থেকে অবসর নিলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে গিয়েছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পরেই অবসরের গ্রহে চলে যান তিনি গত বছর ১৫ অগাস্ট। আসন্ন আইপিএলে ফের একবার মাহিকে বাইশ গজে দেখা যাবে। চিরপরিচিত সিএসকের হলুদ জার্সিতে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন