বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি খেলে টেস্টের মতো, টেস্ট খেলে টি-টোয়েন্টি মেজাজে!

কেন এমন অসহায় আত্মসমর্পণ? ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের হিটিংয়ের ক্ষমতা। আগেও বাংলাদেশ জোরে শট মারতে পারত না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bangladesh vs Pakistan

বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর (টুইটার)

পাকিস্তান সফরে কী হওয়ার কথা ছিল আর কী হচ্ছে! ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুরন্ত খেলা বাংলাদেশকে নিয়ে বড় আশা করেছিল দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু পাকিস্তানে গিয়ে সব যেন ধুয়ে মুছে গেল। পরপর দুটো ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেল একেবারে প্রতিরোধ ছাড়াই।

Advertisment

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ ততটা ভাল নয়, এটা জানা কথা। কিন্তু ভারত সফরে মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে অন্য বাংলাদেশকে দেখা গিয়েছিল। দিল্লিতে প্রথম ম্যাচ জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এটাই দেশের সমর্থকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। পাকিস্তানেও দারুণ কিছু ঘটিয়ে ফেলবে মাহমুদউল্লাহর দল। এই ভাবনা আসাটাই তো স্বাভাবিক! ভারতকে ভারতের মাটিতে হারানো গেলে পাকিস্তানকে নয় কেন? ঠিক এ কারণেই আত্মবিশ্বাস যেমন সমর্থকদের বেড়ে গিয়েছিল একই সঙ্গে বাংলাদেশ দলেরও। কিন্তু ম্যাচ শুরু হতেই সব যেন উবে গেল। দুটো ম্যাচ পরপর হেরে গোটা বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙে গেছে।

প্রথম ম্যাচে সাকুল্যে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছিল ১৪১। এই রান ৫ উইকেট হারিয়েই টপকে গেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ করেছে আরও কম, ১৩৬। এই রান ২০ বল হাতে রেখে পাকিস্তান অতিক্রম করেছে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে। এক ম্যাচ আগেই সিরিজ বিসর্জন দিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন শাহরুখের কেকেআরে ৮০ লক্ষের জালিয়াতি, থানায় গেল নাইটরা

Advertisment

কেন এমন অসহায় আত্মসমর্পণ? ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের হিটিংয়ের ক্ষমতা। আগেও বাংলাদেশ জোরে শট মারতে পারত না। মানে যাকে বলে পাওয়ার হিটিং। দলে বলকে পিটিয়ে সীমানা পার ছাড়া করার মতো ব্যাটসম্যান নেই। মনে করা হচ্ছিল, বিপিএল থেকে জোরে শট মারা ব্যাটসম্যান বেরিয়ে আসবে; কিন্তু তা আর হচ্ছে কোথায়!

পাকিস্তানের মাটিতে যেভাবে ডট বল খেলেছে বাংলাদেশ তাতে আর যা-ই হোক টি-টোয়েন্টি হয় না। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের খেলা দেখে মনে হয়েছে তারা টেস্ট খেলছেন। আবার টেস্ট যখন খেলেন তখন টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাট করেন। ভারতের মাটিতে হয়ে যাওয়া সবশেষ দুই টেস্টে তো তাই দেখা গেছে। সেখানে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টিকে থাকার কোনো মানসিকতাই পরিলক্ষিত হয়নি। বাংলাদেশ দলের জন্য ক্রিকেটের সংস্করণ বড় হলেও সমস্য আবার ছোট হলেও সমস্যা।

বিপিএলে পাওয়ার হিটিংয়ের দায়িত্ব নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই ম্যাচ জিতিয়ে দেন বিদেশিরা। ফলে সে অর্থে পাওয়ার হিটার তৈরি হচ্ছে না বাংলাদেশে। আর পাওয়ার হিটার খুঁজে পাওয়া না গেলে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশকে যে ভুগতে হবে সেটি বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই।

আরও পড়ুন হোটেলে ধোনি ‘খুশ’ করেছিলেন এই পাক মডেলকে, ছবিতে রইল অজানা গল্প

বাংলাদেশ দল পাওয়ার হিটার খুঁজছে হন্যে হয়ে। লাহোরে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো স্পষ্ট করেই বললেন, "আমাদের এমন ব্যাটসম্যান দরকার যারা বলটাকে মেরে সীমানার বাইরে পাঠাতে পারেন। বাংলাদেশ দলের এই ধরণের ক্রিকেটারের অভাব রয়েছে।"

আবার বিপিএলে ভাল খেলে আন্তর্জাতিক স্তরে এসে সেটি আর ধরে রাখতে পারছেন না ক্রিকেটাররা। এই যেমন লিটন দাসের কথাই ধরুন। চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে দুর্দান্ত খেলেছেন। সৌম্য সরকার কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের হয়ে অলরাউন্ড নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন। সেই সৌম্য-লিটন পাকিস্তানে গিয়ে ফেল মেরেছেন। যা উদ্বিগ্ন করেছে গোটা বাংলাদেশকে।

আরও পড়ুন কোহলিকে তোপ রায়নার! কেরিয়ার নষ্টের জন্য সরাসরি দায়ী বিরাট

বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্ট ব্যাটিং অর্ডারে রদবদল করে দেখতে চাইছেন এমন কেউ আছেন কিনা যে বলকে পেটাতে পারেন। মুলত সেই ভাবনা থেকেই দ্বিতীয় ম্যাচে অভিষিক্ত মেহেদি হাসানকে তিন নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু বিপিএলের ফর্মটা তিনি লাহোরে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। টিম ম্যানেজমেন্ট যে বাজি ধরেছিল মেহেদিকে নিয়ে আপাতত সেটি ব্যর্থ হয়েছে। ডমিঙ্গো বলছিলেন, "সৌম্য আগে ব্যাটিং অর্ডারে অনেকবার ওপরে খেলার সুযোগ পেয়েছে। ও দারুণ এক ব্যাটসম্যান। দলে আমরা এখন ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন নিয়ে চিন্তা করছি। কাউকে এগিয়ে আবার কাউকে পিছিয়ে দিয়ে দেখছি কে পাওয়ার হিটিংয়ে ভুমিকা পালন করতে পারে।"

Bangladesh pakistan