পাকিস্তান দলে, ড্রেসিংরুমে ধর্মের কারণে কোনও বৈষম্য নেই। আগেও ছিল না।
কার্যত এমন ভাষাতেই দানিশ কানেরিয়া ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন শোয়েব আখতার। বলা ভাল, পরিস্থিতির চাপেই হয়তো কিছুটা পিছু হঠলেন।
গত সপ্তাহেই শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের স্পিডস্টার। পাক টিভি চ্যানেলে এক বিতর্ক সভায় অংশ নিয়ে সরাসরি বলে দিয়েছিলেন, "ধর্ম নিয়ে কথা বলায় কেরিয়ারে কয়েকজনের সঙ্গে আমি লড়াই করেছি। এঁরা বলত কে করাচির, কে লাহোরের কে পেশোয়ারের! শুনে ভীষণ রাগ হত। কোনও ক্রিকেটার যদি হিন্দু হয়, আর সে যদি পাকিস্তানের হয়ে পারফর্ম করে, তাহলে ধর্মের প্রশ্ন ওঠে কীভাবে?"
এখানেই না থেমে শোয়েব আরও বলেছিলেন, “অনেকেই তাচ্ছিল্য করে বলত, স্যার ওই ছেলেটা এখান থেকে খাবার নিচ্ছে কেন? অথচ তাঁরা ভাবত না, এই ছেলেটাই ইংল্যান্ডে আমাদের টেস্ট জিতিয়েছিল। জয়ের জন্য আমার নাম নেয়, কিন্তু আমি তো জানি কানেরিয়া দুর্দান্ত বল না করলে আমরা জিততে পারতাম না। অনেকেই ওঁকে কৃতিত্ব দিতে চায় না।”
আরও পড়ুন হিন্দু বলেই বৈষম্য়ের স্বীকার তিনি, আখতারের অভিযোগ সত্য়ি, জানালেন দানিশ কানেরিয়া
এমন বক্তব্যের পরেই ক্রিকেট বিশ্বে ঝড় ওঠে। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কতটা নির্যাতিত, তা ভারতের বিভিন্ন মহল থেকে তুলে ধরা হতে থাকে। পিসিবিও কোনঠাসা হয়ে পড়ে। জাভেদ মিঁয়াদাদ কানেরিয়াকে তুলোধোনা করেন। শোয়েবকে আবার একহাত নেন মহম্মদ ইউসুফ। চাপের মুখে এমন অবস্থাতেই রাওয়ালপিণ্ডি একপ্রেস মুখ খুলে জানিয়ে দেন, তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব জানান, "আমার কথার ভুল অর্থে করা হচ্ছে। ধর্মের কারণে বৈষম্যের সংস্কৃতি পাকিস্তান ক্রিকেট দলে কোনওদিনই ছিল না। আমাদের চুক্তিতে লেখাই ছিল, সবাইকে সম্মান করতে হবে। দু-একজন ক্রিকেটার কানেরিয়া সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য করত। তবে এই ধরনের ক্রিকেটার সর্বত্র দলেই থাকে। আসলে ওই ধরনের মন্তব্য শুনে আমি শুরুতেই প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। শুরুতেই শেষ করে দেওয়া হয়েছিল বিদ্বেষের বীজ।"
আরও পড়ুন দানিশ কানেরিয়া-কাণ্ডে এবার মুখ খুললেন গম্ভীর
পাকিস্তান কীভাবে সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্ত হয়েছে, সেই প্রসঙ্গেও জানাতে গিয়ে শোয়েব এদিন বলেছেন, "শুরু থেকেই আমাদের লড়াই ছিল মৌলবাদের বিরুদ্ধে। তবে আমরা সব ধর্মকে সম্মান দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নিজে করতারপুর খুলে দিয়েছেন শিখ ভাইদের জন্য়।"
দানিশ কানেরিয়ার বাদ পড়ার সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্কই নেই বলে জানিয়েছেন স্পিডস্টার। সুপারস্টারের বক্তব্য, দানিশ সততার সঙ্গে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছে। মুস্তাক আহমেদকে বসিয়ে ওকে খেলানো হয়। ওকে যদি বাদ পড়তে হয়, তাহলে পারফরম্যান্সের কারণে। ওকে নির্বাসনের পিছনেও পাকিস্তানের কোনও হাত নেই। ইসিবি ওকে নিষিদ্ধ করেছিল।
Read the full article in ENGLISH