ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি বরাবর বিতর্কিত। গ্রেগ চ্যাপেল ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে ক্ষত হয়েই রয়ে গিয়েছে। বিতর্ক, বিদ্রোহ, আগুনে মন্তব্য- দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও সেই অধ্যায় এখনো শুকিয়ে যায়নি। সৌরভ-শচীনদের সঙ্গে গুরু গ্রেগের সম্পর্ক এখনো মেরামতি হয়নি।
এর মধ্যেই গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে প্রশংসা করে বসলেন সুরেশ রায়না। সৌরভদের মূল্যায়ণের বিরুদ্ধে গিয়েই রায়না জানিয়ে দিলেন, গ্রেগ চ্যাপেলের জন্যই ভারতীয় ক্রিকেটে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার উঠে এসেছিলেন যাঁরা ভবিষ্যতে ভারতের সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন।
আরো পড়ুন: সোমবারই শুরু মেসি-নেইমারদের কোপা! কবে-কখন নামছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, জেনে নিন
নিজের আত্মজীবনী 'বিলিভ, হোয়াট লাইফ এন্ড ক্রিকেট টট মি-তে রায়না লিখেছেন, "আমার মতে ভারতের তরুণ ক্রিকেট প্রজন্ম তৈরির জন্য গ্রেগ চ্যাপেলকে বাহবা দেওয়া প্রয়োজন। যে বীজ উনি বপন করেছিলেন, সেটাই ফল দিয়েছিল ২০১১ বিশ্বকাপে। যখন আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। সমস্ত এই বিতর্কের মধ্যেও কোথাও আমার মনে হয় উনি ভারতকে জিততে ল, জেতার গুরুত্ব বোঝাতে সমর্থ হয়েছিলেন।"
জন রাইটের পরে ভারতীয় ক্রিকেটে কোচ হিসাবে গ্রেগ চ্যাপেল নিযুক্ত হন ২০০৫ সালে। ২০০৭-এ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ভারত। সঙ্গেসঙ্গেই চ্যাপেলকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। আর যে তরুণ ক্রিকেটারদের বারবার সুযোগ দেওয়ার কথা বলতেন চ্যাপেল, সেই নীতিতেই জাতীয় দলে আত্মপ্রকাশ করেন সুরেশ রায়না। যিনি ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। চ্যাপেলের আমলেই অভিষেক ঘটানো রায়না দুরন্ত ব্যাটিং করার পাশাপাশি কার্যকরী অফস্পিনও করতে পারতেন। সেই সঙ্গে ফিল্ডিংয়েও তুখোড় ছিলেন তিনি।
আরো পড়ুন: নেতা হয়ে ছড়ি ঘোরাতে চাইত সৌরভ! বিস্ফোরক আক্রমণে আগুনে চ্যাপেল, ভিডিও দেখুন
আর রায়নাদের মত তরুণ ক্রিকেটার উঠে আসার আগে ভারত নির্ভরশীল ছিল শচীন, সৌরভ, লক্ষ্মণ, দ্রাবিড়দের ওপর। শতকের প্রথম দশকে রান চেজ করার জন্য সিনিয়র ক্রিকেটাররাই ছিলেন একমাত্র ভরসা। তবে চ্যাপেল এসেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর খড়গহস্ত হন। বদলে তরুণ রক্ত আমদানি করার ওপরে জোর দেন।
জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য সেই কারণে রায়না এখনো কৃতজ্ঞ অজি কোচের কাছে। নিজের আত্মজীবনীতে তিনি আরো লিখেছেন, "গ্রেগ চ্যাপেল দেখিয়ে দিয়েছিলেন, কীভাবে রান চেজ করতে হয়। আমরা সেই সময় বেশ ভালো খেলেছিলাম। তবে উনি একাধিকবার টিম মিটিংয়ে জোর দিতেন রান চেজ করার প্ল্যানিংয়ে। এই কৃতিত্ব পুরোটাই রাহুল ভাই এব্বগ5 গ্রেগ চ্যাপেলের প্রাপ্য।"
জাতীয় দলের জার্সিতে সুরেশ রায়না মোট ১৮টি টেস্ট, ২২৬টি একদিনের ম্যাচ এবং ৭৮টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। তিন ধরণের ফরম্যাটে তাঁর রানসংখ্যা যথাক্রমে ৭৬৮, ৫৬১৫ এবং ১৬০৫ রান। গত বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন সতীর্থ ধোনির সঙ্গেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে এখনো আইপিএলে খেলছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন