WTC Final 2025: ২০২৩-২৫ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল (South Africa Cricket Team)। ফাইনাল ম্য়াচে অস্ট্রেলিয়ার (Australia Cricket Team) বিরুদ্ধে তারা খেলতে নেমেছিল। এই ম্য়াচে যথেষ্ট চড়াই-উতরাই দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত ৫ উইকেটে তারা জয়লাভ করল। তবে এই জয়ের পিছনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে দলের ওপেনিং ব্যাটার এইডেন মারক্রাম (Aiden Markram)। তাঁর শতরানের দৌলতেই দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের রাস্তা অনেকটাই মসৃণ হয়ে গিয়েছিল। যদিও তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (Temba Bavuma)।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এই অন্তিম লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া বরাবরই অ্যাডভান্টেজ পজিশনে ছিল। কিন্তু, জোড়া ইনিংসে তারা ব্য়াট হাতে একেবারেই ভাল পারফরম্য়ান্স করতে পারেনি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংও যে খুব একটা আহামরি হয়েছে, সেকথাও বলা যায় না। এমনকী দ্বিতীয় ইনিংসে তো ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭০ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু, এরপর শুরু হয় আসল লড়াই। এইডেন মারক্রাম এবং টেম্বা বাভুমার মধ্যে একটা ম্যাচজয়ী পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে। ১৪৭ রানের এই যুগলবন্দিই এই ম্য়াচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।
SA vs AUS WTC Final: ফাইনাল হতে পারে হাতছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের পথে 'ভিলেন' কে?
তৃতীয় দিনের শেষে যখন স্টাম্প ঘোষণা করা হয়, সেইসময় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের জন্য মাত্র ৬৬ রান দরকার ছিল। এই পরিস্থিতিতে ম্য়াচের মোড় যে কোনদিকে ঘুরতে চলেছে, সেটা একেবারে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আশা করা হয়েছিল, ফাইনাল ম্য়াচে দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ত ৮ উইকেটে জয়লাভ করতে পারবে। কিন্তু, দিনের শুরুতেই প্যাট কামিন্সের বলে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বাভুমা। ১৩৪ বলে তিনি ৬৬ রান করেন। এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে টেম্বা বাভুমা দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে নাম লিখিয়ে ফেললেন, যিনি হাফসেঞ্চুরি হাঁকাতে সফল হয়েছে। ইতিপূর্বে এই কৃতিত্ব ২০২১ সালে গড়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন। ভারতের বিরুদ্ধে আয়োজিত ফাইনাল ম্য়াচে অপরাজিত ৫২ রান করেছিলেন।
WTC Final 2025: ইতিহাসের দোরগোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা, ভাঙতে চলেছে অস্ট্রেলিয়ার 'অহংকার'?
একনজরে ফাইনাল ম্যাচের হাল-হকিকত
টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল প্রোটিয়া ব্রিগেড। প্রথম ইনিংসে স্টিভ স্মিথ (৬৬) এবং বিউ ওয়েবস্টারের (৭২) হাফসেঞ্চুরির দৌলতে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ২১২ পর্যন্ত পৌঁছয়। এর জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় দিন ১৩৮ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল। আফ্রিকান ব্যাটারদের মধ্যে প্রথম ইনিংসে কেউ হাফসেঞ্চুরি পর্যন্ত করতে পারেননি। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমেও অজি ব্রিগেড খুব বেশি দাপট দেখাতে পারেনি। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বাধিক ৫৮ রান (১৩৬ বল) করেন মিচেল স্টার্ক। সেইসঙ্গে জস হ্যাজেলউডের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি দশম উইকেটে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। সেইসঙ্গে তাঁরা এক নয়া ইতিহাস লিখে ফেলেন।
Temba Bavuma Record: বাবরের সম্মান ধুলোয় মেশালেন বাভুমা, লজ্জায় মুখ লুকোচ্ছে পাকিস্তান
২৮২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় দিন দুর্দান্ত ব্যাট করল। তৃতীয় উইকেটে এইডেন মারক্রাম এবং টেম্বা বাভুমা শতরানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। যদিও এই টার্গেট তাড়া করতে নেমে মাত্র ৯ রানের মাথায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেটের পতন হয়। রায়ান রিকলটনের উইকেট তুলে নেন মিচেল স্টার্ক। এরপর ৭০ রানের মাথায় দলের হাত ছেড়ে দেন বিয়ান মুল্ডার। কিন্তু, মারক্রাম এবং বাভুমার সাহসী ব্যাটিং অস্ট্রেলিয়াকে একেবারে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়।
Aiden Markram Century: এক সেঞ্চুরিতেই বাজিমাত! সৌরভের এই স্পেশাল রেকর্ডে ভাগ বসালেন মারক্রাম
মারক্রাম ২০৭ বলে ১৩৬ রান করে আউট হয়ে যান। যদিও বাভুমা ৬৬ রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। বাভুমার জায়গায় ব্যাট করতে নামেন ট্রিস্টান স্টাবস। যদিও খুব বেশিক্ষণ তিনি উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। মাত্র ৮ রান করেই তিনি স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে যান। এরপর ব্যাট করতে নামেন বেডিংহ্যাম।