Astronaut Diet Plan And Medical Emergency (আইএসএস মেডিকেল ইমার্জেন্সি): মহাকাশে নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতুহলের শেষে নেই, এমন পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই এই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে কোন মহাকাশচারী হঠাৎ করে মহাকাশে অসুস্থ হয়ে গেলে কীভাবে চিকিৎসা পরিষেবা মেলে? ISS-তে রেখেই চিকিৎসা করানো হয় নাকি দ্রুত তাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়? মহাকাশে গবেষণা করতে গিয়ে যদি কোনও মহাকাশচারীর হঠাৎ করে শরীর খারাপ হয়, তাহলে তার চিকিৎসা কীভাবে হয়? পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার দূরে কীভাবে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব? এই প্রশ্ন অনেকের মনে উঁকি দিচ্ছে।
আসলে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা ISS-এ এই ধরনের জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য আগে থেকেই রাখা থাকে প্রয়োজনীয় মেডিকেল সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্রু। সেখানে ছোটখাটো অসুস্থতার জন্য যথেষ্ট ওষুধ, যন্ত্রপাতি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেডিক্যাল স্টাফ থাকেন। থাকে মেডিকেল কিট। যেখানে থাকে ব্যথা কমানোর ওষুধ, ঘুমের ওষুধ, জ্বর, বমি, মাথাব্যথার ওষুধ, রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার পরিমাপক যন্ত্র ছোটখাটো ক্ষত পরিষ্কারের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, ইমার্জেন্সি স্যালাইন ও ইনজেকশন
ক্রুদের কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়?
প্রতিটি মহাকাশচারীকে মহাকাশে পাঠানোর আগে সিপিআর (CPR), ইনজেকশন দেওয়া, চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহার—এই ধরনের মৌলিক চিকিৎসা পদ্ধতি শেখানো হয়। দলে থাকেন একজন "স্পেস মেডিকেল অফিসার", যিনি তুলনামূলকভাবে উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। পৃথিবীতে বসে ডাক্তারদের একটি দল নিয়মিত ISS-এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং প্রয়োজনে টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমে গাইড করেন তিনি। যদি কারোর স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতি হয় এবং পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়, তাহলে "ইমার্জেন্সি রিটার্ন" বা জরুরি প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে তাঁকে অতি দ্রুত তৎপরতার সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। ISS-এ সবসময় একটি লাইফবোট স্পেসক্রাফট (যেমন: SpaceX Dragon বা Soyuz) প্রস্তুত থাকে। বিপদের সময়, তা ব্যবহার করে অসুস্থ মহাকাশচারীকে পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়। তবে,শুধুমাত্র সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষকেই মহাকাশে পাঠানো হয়, তাই গুরুতর অসুস্থতা সাধারণত দেখা যায় না।
বাড়ির খাবার থেকে কতটা আলাদা মহাকাশচারীদের ডায়েট?
ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)-এ পৌঁছেছেন। ১৪ দিনের মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা সরঞ্জামের পাশাপাশি তিনি নিয়ে গিয়েছেন কিছু বিশেষ খাবারও। তালিকায় রয়েছে গাজরের হালুয়া ও আমের রস! অনেকের মনে একটা প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক,মহাকাশচারীরা আদৌ কী খায়? তাঁদের খাবার কী রকম?
মহাকাশে খাবার নিয়ে রয়েছে এক জটিল বিজ্ঞান। যেহেতু সেখানে অন্যরকম পরিবেশ এবং মাধ্যাকর্ষণের অভাব, তাই খাবারও হতে হয় বিশেষভাবে প্রস্তুত এবং প্যাকেজিং করা। মহাকাশচারীরা সাধারণত থার্মো-স্ট্যাবিলাইজড খাবার খেয়ে থাকেন মহাকাশে যেগুলোর মধ্যে আর্দ্রতা কম এবং যেগুলো বহুদিন সংরক্ষণ করা যায়। খাবার সাধারণত পাউচ বা বিশেষ কন্টেইনারে থাকে, অনেক সময় তা জল মিশিয়ে প্রস্তুত করে খেতে হয়। চা, কফি, জুস থাকে পাউডার আকারে, যা জল মিশিয়ে পান করা হয়। ফল, ব্রাউনি, ম্যাকারনি, ফ্রিজ-ড্রায়েড ডিম, চিংড়ি ককটেল, পনির—এইসবই থাকে স্পেস ডায়েটে
কোন খাবার মহাকাশে নেওয়া যায় না?
সব খাবার মহাকাশে উপযুক্ত নয়। কিছু খাবার মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, যেমন: শুকনো রুটি, শুকনো লবণ ও মরিচ। অ্যালকোহল ও তাজা ফলমূল সংরক্ষণে অসুবিধা এবং স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। মহাকাশচারীদের খাদ্যতালিকায় থাকে উচ্চ পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার। যার মধ্যে থাকে যথেষ্ট প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট, যাতে পেশি ও হাড় দুর্বল না হয়ে পড়ে। মহাকাশে থাকার সময় শরীর থেকে ক্যালসিয়াম দ্রুত ঝরে পড়ে, হাড় হয় দুর্বল। তাই খাবারের গুণমান ও পরিমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।