ইসরোর ডাকে সাড়া দিচ্ছে না বিক্রম, শেষকালে এসে নাসাও চেষ্টা করেছে, তবু কোনো সাড়াশব্দ নেই বিক্রমের। 'হার্ড ল্যান্ডিং', যা করতে একেবারে মানা ছিল, কিন্তু পৃথিবী থেকে ৩৮৪,৪০০ দূরে তা চালনা করা সম্ভব হয়নি। ইসরোর বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকেই দুশ্চিন্তার শেষ পনেরো মিনিট নিয়ে আশঙ্কা করছিলেন। সেই মত হিসাব নিকাশও কষা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। সজোরে আছড়ে পড়ে চাঁদের মাটিতে।
ইসরো বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন চাঁদের মাটি থেকে ৩৩৫ মিটার উচ্চতায় নিখোঁজ হয়ে যায় বিক্রম তথা ল্যান্ডার। অবতরণের সময় লম্বভাবে গতি ছিল ৫৯ মিটার প্রতি সেকেন্ডে, এবং অনুভুমিক ভাবে গতি ছিল ৪৮ মিটার প্রতি সেকেন্ডে। যেখানে গতি পৌঁছানোর কথা ছিল শূন্যতে।
ইউ আর স্পেস সেন্টারের পরিচালক জানিয়েছেন, “ ৩৩৫ মিটারের পর ল্যান্ডার পৃথক ভূখন্ডের কাছে গিয়ে যথাযথ ডেটা হারিয়ে ফেলতে পারে। শেষ যে ডেটা পাওয়া গেছে ল্যান্ডার থেকে তা পর্যালোচনা করলে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হবে। আশা করি বোঝার জন্য ইসরো অবশ্যই এটি করবে ”।
আরও পড়ুন: চোখের আড়ালে চুরি হয়ে গেল ‘আমেরিকা’!
ইসরো'র বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক পি এস বীররাঘবন বলেছেন,“চাঁদ ও পৃথিবীর মধ্যে সময়ের ব্যবধান বাকি ছিল মাত্র ১.২৫ সেকেন্ড। সেসময়ই যোগাযোগের প্রযুক্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। বেতার সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়।"
গত মঙ্গলবার ইসরো জানিয়েছিল লোকেট করা গেছে কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি। তারজন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও ইসরো চেয়ার ম্যান শিভান জানায়, এখনও সিগনাল পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: যৌন সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় জোড়া ছোবল গৃহবধূকে
গত রবিবার রবিবার দুপুরে অরবিটারের পাঠানো ছবি মারফত হদিশ মিলল চাঁদের বুকে হারিয়ে যাওয়া বিক্রমের। ইসরো থেকে জানানো হয়েছিল, সংযোগ স্থাপনের সবরকম চেষ্টা চলছে। ভেঙে যায়নি, অক্ষত রয়েছে বিক্রম, সোমবার সেই বার্তাই দিল ইসরো।অরবিটারের পাঠানো থার্মাল ইমেজে দেখা গেছে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে ঢালু কোনো জায়গায় রয়েছে বিক্রম।আশা ছাড়েনি। প্রাণপন চলছে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা। ল্যান্ডিং এর পর থেকেই নিশ্চুপ হয়ে পড়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। অরবিটার ৯৬x১২৫ কক্ষপথে থেকে চাঁদের মাটিতে পড়ে থাকা ল্যান্ডারের ছবি পাঠায় রবিবার। তবে ল্যান্ডারের কী হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় বিজ্ঞানীদের কাছে। অবতরণের পর ভোরের আলো পাওয়ার পরই ল্যান্ডারের ভিতর থেকে প্রজ্ঞানের বেরিয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি এখনও। এদিকে শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে।