New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/07/09/international-space-station-2025-07-09-17-12-35.jpg)
International Space Station: শুভাংশু শুক্লা।
International Space Station: দিনে ১৬ বার সূর্যোদয়, মাধ্যাকর্ষণহীন অবস্থা—ISS থেকে পড়ুয়াদের কৌতূহলের জবাব দিলেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা। কীভাবে ঘুমোন, শরীরচর্চা করেন, জানুন বিস্তারিত।
International Space Station: শুভাংশু শুক্লা।
International Space Station: এক দিনে ১৬ বার সূর্য ওঠে, আবার ১৬ বার অস্ত যায়—এমন অভিজ্ঞতা কি কল্পনা করা যায়? পৃথিবীতে নয়, এই অভিজ্ঞতা সম্ভব মহাকাশে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র বা International Space Station (ISS)-এ। আর সেখান থেকেই ভারতের নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কৌতূহলের উত্তর দিলেন।
ISS প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। অর্থাৎ দিনে প্রায় ১৬ বার পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে আসে স্টেশনটি। যার মানে, নভশ্চররা দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখেন। কিন্তু এত বার আলোর পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তাঁরা ঘুমোন?
আরও পড়ুন- কোটি কোটি মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য বড় ধাক্কা! ফের দামি রিচার্জ প্ল্যান, কত শতাংশ মূল্য বাড়তে পারে?
এই প্রশ্নেই কৌতূহল প্রকাশ করেছিল ছাত্রছাত্রীরা। উত্তর দিতে গিয়ে শুভাংশু জানান, 'আমরা সূর্য দেখে দিন-রাত বুঝি না। আমরা গ্রিনিচ মান সময় (GMT) অনুসরণ করি।' GMT হল আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত সময়মাপক, যা ভারতীয় সময় থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা পিছিয়ে।
শুভাংশুর কথায়, 'আমরা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ করি। সময়মতো খাই, কাজ করি এবং ঘুমোই। আলোর পরিবর্তন আমাদের সময়সূচিকে প্রভাবিত করে না।'
আরও পড়ুন- গর্ভাবস্থায় মায়ের এই একটি অভ্যাস শিশু মনে 'খারাপ' প্রভাব ফেলে, জন্ম নিতে পারে 'ভীতু' সন্তান
ঘুমের সময় নভশ্চররা একটি স্লিপিং ব্যাগের মত জায়গায় নিজেদের আটকে রাখেন, কারণ সেখানে মাধ্যাকর্ষণ নেই—তাই শরীর ভেসে থাকে। স্লিপিং পডে চোখ ঢাকার মত ব্যবস্থা থাকে, যাতে সূর্যোদয়ের আলো প্রবেশ না করে।
শূন্য মাধ্যাকর্ষণের কারণে পেশী ও হাড় দ্রুত ক্ষয় হতে শুরু করে। সে জন্য প্রতিদিন ট্রেডমিল, সাইকেলিং এবং স্টেংথ ট্রেনিং মেশিনে একঘণ্টার বেশি সময় ধরে শরীরচর্চা করেন তাঁরা। শুভাংশু বলেন, 'এই ব্যায়ামগুলো না করলে পৃথিবীতে ফিরে হঠাৎ হাঁটতে বা দাঁড়াতে কষ্ট হবে।'
আরও পড়ুন- ১০ বছর ধরে চিকিৎসকরা যা পারলেন না, করে দেখালো ChatGPT! হল রোগের সঠিক নিরাময় !
তাঁর মতে, 'শূন্য মাধ্যাকর্ষণে শরীরে নানা পরিবর্তন হয়। প্রথমদিকে স্পেস সিকনেস হয়। মাথা ঘোরা, বমি ভাব হয়। তবে পৃথিবীতে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা মানিয়ে নিতে শিখে এসেছি।'
ছাত্রদের অনেকের প্রশ্ন ছিল—আপনি কী খান? শুভাংশু বলেন, 'খাদ্যগুলো বিশেষভাবে প্যাকেট করা থাকে। আমরা গরম করে বা জল মিশিয়ে তা খাই। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় খাবার ছড়িয়ে যেতে পারে, তাই সাবধান থাকতে হয়।'
আরও পড়ুন- ফোল্ডেবল ফোন ও Galaxy Watch 8 লঞ্চের অপেক্ষায় টেক দুনিয়া! 'বিশ্ব নজরে' আজ Samsung
ঘুম, খাওয়া, শরীরচর্চা—সবই সময়মাফিক চলে, কারণ ISS একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত গবেষণা কেন্দ্র।
শুধু শরীরচর্চা বা ঘুম নয়, মহাকাশে কাজের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য। অনেক সময় ISS-এ রোবোট বাহুর সাহায্যে উপগ্রহ বা বাইরের অংশে মেরামতের কাজ করা হয়।
শুভাংশু জানালেন, 'ISS-এ কাজ করার জন্য নির্ভুল সময়জ্ঞান ও পারস্পরিক বোঝাপড়া দরকার। এটা শুধু বৈজ্ঞানিক অভিযান নয়, বরং মানুষ ও প্রযুক্তির এক চূড়ান্ত মিলন।'
লখনউয়ের ছেলে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের অংশ হয়ে ভারতকে গর্বিত করেছেন। তিনি স্পেসএক্স-এর ড্রাগন মহাকাশযানে করে ২৬ জুন ২০২৫ তারিখে ISS-এর উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁর সঙ্গীরা হলেন- পেগি হুইটসন, স্লাওস উজানস্কি-উইজনিউস্কি ও টিবর কাপু।
ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে শুভাংশুর বার্তা, 'মহাকাশ শুধুই স্বপ্ন নয়, ভবিষ্যৎ। পড়াশোনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মন দিন, একদিন আপনিও যেতে পারেন মহাকাশে।'