Advertisment

চাকরি অধরা, সাজানো লটারির টেবিলেই স্বপ্ন বুনছেন ‘এমএ পাশ লটারিওয়ালা’!

আমতলা যতীন্দ্র রাজেন্দ্র মহাবিদ্যালয়য়ের স্নাতক তন্ময় এখন একচিলতে এই লটারির দোকান থেকেই আগামীর স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
‘এমএ পাশ লটারিওয়ালা তন্ময়, lottery, unemployment

রাস্তার ধারে সাজানো লটারির টেবিলেই স্বপ্ন বুনছেন ‘এমএ পাশ লটারিওয়ালা’

একচিলতে চায়ের দোকান বুকে আগলে স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে অবিচল ‘চায়েওয়ালি’ টুকটুকি এই খবর তোলপাড় ফেলেছিল সমাজে। প্রশ্ন উঠেছে চাকরি বাকরির বেহাল দশা নিয়েও। করোনা পরিস্থিতি মানুষের জীবনে বয়ে নিয়ে এসেছে এক ভয়ঙ্কর অভিশাপ। সংসার চালাতে উচ্চ শিক্ষিত হয়েও অনেকেই বেছে নিয়েছেন এমন অনেক পেশাকে। হাবড়ার কৈপুকুরের বাসিন্দা টুকটুকি দাসের পর মুর্শিদাবাদের তন্ময় চুনারি, এম.এ পাশ করেও সংসার চালাতে বেছে নিয়েছেন লটারির দোকান!

Advertisment

টুকটুকির চায়ের দোকানের নাম ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’(MA English Chaiwali)।তাঁর দোকানের এই নাম এখন সমাজকে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক পাশ করে টুকটুকি। রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর হয়েছেন। এমএ পাশ করলেও অনেক চেষ্টার পরেও মেলেনি মনের মতো ভাল চাকরি। লড়াই তবে থামাননি টুকটুকি, শুরু হয় তাঁর ইউটিউব ঘাঁটা। ইউটিউব থেকেই চা বিক্রির মাথায় আসে টুকটুকির।

আবারও উঠে এসেছে তেমনই এক ঘটনা। এমএ পাশ করেও জোটেনি চাকরি। অনেক চেষ্টা করেও ফল মেলেনি। সংসার চালাতে তাই লটারির দোকান বেছে নিয়েছেন মুর্শিদাবাদের নওদার বাসিন্দা এমএ পাশ লটারিওয়ালা তন্ময় চুনারি। তাঁর এই দোকান ফের সমাজের চাকরি বাকরির বেহাল অবস্থাকে আরও একবার আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সংবাদ মাধ্যম কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তন্ময় বলেন,  ‘সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই প্রয়াত হন বাবা। সংসারের হাল ধরতে তখনই এক সাইকেলের দোকানে কাজে ঢোকেন তিনি। দিন কয়েক পর দাদা জয়দেব একটি লটারির দোকান দেন, ফের স্কুলে ভর্তি হন তন্ময়। ২০১১ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তন্ময়। পড়াশুনায় বরাবরই ভাল তন্ময়। পেটের তাগিদে কখন রাজমিস্ত্রি, কখনও জোগাড়ের কাজও করতে হয় তাকে। ২০১৮ সালে স্নাতক এবং গত বছরই এমএ পাশ করেন তন্ময়’।

আরও পড়ুন: <‘আজ রাতে, এই খাটে, টুকটুক’! অপ্রতিরোধ্য মীর, নাচে তোলপাড় নেটদুনিয়া>

তাঁর কথায়, ‘অনেক চেষ্টা করেও ভাল কোন কাজের সুযোগ মেলেনি। বয়ে থাকলে বয়সটাই বেড়ে যাবে তাই এক লটারির দোকান’! রাজ্য পুলিশের এসআই, কনস্টেবল, কেন্দ্রে সিআইএসএফ থেকে ব্যাঙ্ক, রেল সহ একাধিক পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। কিছু ক্ষেত্রে প্রিলি পাস করলেও মেন পরীক্ষায় আটকে যান তিনি। সংসারের হাল ধরতে দাদার পথই বেছে নেন তন্ময়। আমতলা বাজারের কাছেই একটি টেবিল পেতে লটারির দোকান শুরু করেন তন্ময়। তাতে লেখা ‘এমএ পাশ লটারিওয়ালা তন্ময়”। এরপরই প্রচারের আলোয় আসতে শুরু করেন তন্ময়।

আরও পড়ুন: <মাত্র তিন শব্দে ইস্তফা! চাকরি ছাড়ার এই চিঠি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল>

তন্ময় জানিয়েছেন, সারাদিন লটারি বিক্রি করে ৩০০ টাকা মত কমিশন আসে, তাতেই কোনমতে সংসার চলে। তবে এত কিছুর মাঝেও চাকরির খোঁজ খবরও রাখেন তন্ময়। যদি ভাল কিছু কপালে জোটে। তন্ময়য়ের পছন্দ পুলিশে বা সামরিক বাহিনীতে চাকরি, তার জন্য প্রতিদিন নিয়মিত চলে প্রশিক্ষণও। আজকের সমাজে তন্ময় এক অনন্য নজির গড়েছেন। আমতলা যতীন্দ্র রাজেন্দ্র মহাবিদ্যালয়য়ের স্নাতক তন্ময় এখন একচিলতে এই লটারির দোকান থেকে নিজের আগামীর স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন।

Murshidabad viral news
Advertisment