শাড়ি পরায় ধুন্ধুমার, রেস্তোরাঁয় ঢুকতে বাধা মহিলাকে, তোলপাড় নেটদুনিয়া

শাড়ি পরার ‘অপরাধে’ রেস্তরাঁতে প্রবেশ করতে পারলেন না এক মহিলা।

শাড়ি পরার ‘অপরাধে’ রেস্তরাঁতে প্রবেশ করতে পারলেন না এক মহিলা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

শাড়ি পরার ‘অপরাধে’ রেস্তরাঁতে প্রবেশ করতে পারলেন না এক মহিলা।

শাড়ি পরার ‘অপরাধে’ রেস্তরাঁতে প্রবেশ করতে পারলেন না এক মহিলা। খাস দিল্লির বুকে এই ঘটনা তোলপাড় ফেলেছে নেটদুনিয়ায়। রেস্তরাঁটির এক প্রতিনিধি তাঁকে মুখের উপরই সপাট জানিয়ে দেন, স্মার্ট পোশাক না পরলে তাঁদের রেস্তরাঁয় ঢোকা যায় না। সেই সঙ্গে রেস্তোরাঁ কর্মীর দাওয়াই ‘স্মার্ট’ পোশাক পরে আসার। রেস্তরাঁর কর্মীর এই যুক্তিতে হতবাক মহিলা প্রশ্ন করেছিলেন, রেস্তরাঁটি ভারতের কিনা। শাড়ি এ দেশের জাতীয় পোশাক। এই পরিধান যে ‘স্মার্ট’ তা সর্বজনবিদিত। তবে কেন আটকানো হচ্ছে তাঁকে? জবাবে সাবলীল ভাবেই জবাব রেস্তোরাঁ কর্মীর হতেই পারে শাড়ি জাতীয় পোশাক, কিন্তু তা স্মার্ট ক্যাজুয়াল নয়। আর স্মার্ট ক্যাজুয়াল পোশাক ছাড়া রেস্তোরাঁয় প্রবেশের কোনও অনুমতি নেই,।

Advertisment

দক্ষিণ দিল্লির এক শপিং মলের ভিতর ওই রেস্তরাঁটি আদতে একটি রেস্ট্রো বার। শপিং মলটির নাম আনসল প্লাজা। শাড়ি পরার কারণে যে মহিলাকে তাঁরা রেস্তরাঁয় ঢুকতে দেয়নি, তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। নাম অনিতা চৌধুরি। রেস্তোরাঁর কর্মীর কথায় অপমানিত এবং বাকরুদ্ধ হয়ে যান তিনি। তাঁর কথায়, “এত অপমানিত এর আগে কখনও হতে হয়নি”। এরপর তিনি থেমে থাকেননি। নিজের স্মার্টফোনে সমগ্র ঘটনার ভিডিও করে তা আপলোড করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

আরো পড়ুন : উবের অ্যাপ ব্যবহারে ‘বাবার’ চিরকুট ভাইরাল, নস্ট্যালজিক নেটদুনিয়া!

Advertisment

অনিতা লিখেছেন, ‘আমি শাড়ি পরেছিলাম বলে আমাকে রেস্তরাঁয় বসতে দেওয়া হয়নি। শাড়ি আমার দেশের জাতীয় পোশাক। কিন্তু সেই পোশাক পরার জন্য যে ভাবে আমাকে অপমান করা হয়েছে, তা হৃদয়বিদারক। এর আগে কখনও আমি এতটা অপমানিত বোধ করিনি’। এর সঙ্গেই তিনি তাঁর শাড়ি প্রেমের প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি শাড়ি পরতে ভালবাসি’, ‘ভারতীয় সংস্কৃতিও আমি ভালবাসি। আমি মনে করি শাড়ি হল সবচেয়ে মার্জিত, এবং সুন্দর একটি পোশাক’।

আরো পড়ুন: ছোট হয়ে গেল বার্বন বিস্কুট! নেটিজেনদের প্রশ্নের জবাব দিল Britannia

এই ঘটনার কথা সামনে আসতেই তোলপাড় পড়ে যায় নেটমাধ্যমে। সকলেই ওই মহিলা সাংবাদিকের সঙ্গে এমন ব্যবহারের কথা জানতে পেরে ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন, অনেকেই ওই রেস্তোরাঁর কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনেরও দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার অভিঘাতে বাকরুদ্ধ নেটিজেনরা।

এদিকে শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড করেই থেমে থাকেননি ওই মহিলা, তিনি তাঁর ওই পোস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এমনকি দিল্লি পুলিশেরও নাম জুড়ে দিয়ে অনিতা জানতে চেয়েছেন, 'আপনারা দয়া করে বলুন স্মার্ট পোশাকের সংজ্ঞা কী? সে ক্ষেত্রে শাড়ি যদি স্মার্ট না হয়, তা হলে আমিও শাড়ি পরা বন্ধ করে দেব।' ঘটনার কথা সামনে আসার পর,

রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের মতে, সনাতনী পোশাক করে রেস্তোরাঁতে এলে বাধা দেওকার কোনও নিয়ম নেই। আবার অনেকেরই অভিযোগ, অনিতা রেস্তোরাঁর কর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। এমনকি অভিযোগ করেন মহিলা সাংবাদিক তাদের রেস্তোরাঁর কর্মীকে মারধর করেছেন। যদিও মহিলা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তার কথায় ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন রেস্তোরাঁ কতৃপক্ষই।

আরো পড়ুন: ‘যদি হও সুজন’! ট্রাফিক পুলিশের মানবিক ছবি ভাইরাল, কুর্নিশ জানালেন নেটিজেনরা

তবে পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে বাধা দেওয়ার ঘটনা এটা নতুন কিছু নয়। নানান সময়েই নানান মেট্রো শহরে নানা ধরণের পোশাক পরে রেস্তোরাঁয় যাওয়ার জন্য হেনস্থা হতে হয়েছে। তবে শাড়ি পরে এমন ঘটনার অভিজ্ঞতা এটাই বোধ হয় প্রথম।

ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Viral Video