প্রলোভন দেখিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে গিয়ে জোর করে এক ব্যক্তির শরীর থেকে কিডনি কেটে বের করে নেওয়ার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে। এই ঘটনায় তদন্তে নেমে দুজনকে গ্রেফতার করে বারুইপুর থানার পুলিশ। এই কিডনি পাচার চক্রের নেপথ্যে কাদের হাত আছে, সেব্যাপারে ধৃতদের দফায়-দফায় জেরা পুলিশের।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার পেছনে সক্রিয় থাকতে পারে বড়সড় কিডনি পাচার চক্র। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে বারুইপুরের বিডিও অফিসের সামনে দুই ব্যক্তির মধ্যে শুরু হয় বচসা। পরে সেই বচসা হাতাহাতিতে পরিণত হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারুইপুর থানার পুলিশ। দুই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানা যায়, এই ঘটনার পেছনে রয়েছে রীতিমতো রোমহর্ষক কিডনি পাচারের অভিযোগ।
অভিযোগকারী শামসুদ্দিন লস্কর বারুইপুর থানার হিমচি এলাকার বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ করেন, প্রায় তিন মাস আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার নাম করে তাকে উত্তরপ্রদেশ নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘটতে শুরু করে একের পর এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশে একটি হোটেলে তাকে আটকে রাখা হয়। তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর তাকে মারধর করে, ভয় দেখিয়ে জোর করে কিডনি দিতে বাধ্য করা হয়।
আরও পড়ুন- Waqf Act: 'এই আইন রাজ্যে লাগু হবে না, দাঙ্গা কিসের?', উসকানিতে রেয়াত নয়, শান্তির আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর
শামসুদ্দিনের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার কিডনি অস্ত্রোপচার করে কেটে নেওয়া হয়। শর্ত ছিল, কিডনি দেওয়ার বদলে তাকে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, ওই চক্র মাত্র ২ লক্ষ টাকা তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে। বাকি টাকা তারা দেয়নি।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শুভ ভট্টাচার্য নামে হুগলি জেলার বাসিন্দাকে আটক করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, শুক্রবার বারুইপুর বিডিও অফিসে কাজের জন্য এসেছিলেন শুভ। সেই সময় শামসুদ্দিনের পরিবারের লোকজন তাকে দেখে ধরে ফেলে। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়।
আরও পড়ুন- SSC Recruitment Case: DI অফিসে বিক্ষোভ চাকরিহারা শিক্ষকদের, 'বাংলাছাড়া' করার হুঁশিয়ারি তৃণমূল সাংসদের
স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দুজনকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, এই ঘটনার পেছনে বড়সড় কিডনি পাচার চক্র কাজ করছে। তাদের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের কোনও হাসপাতালের যোগ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ।
পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পাশাপাশি, কিভাবে এই চক্র কাজ করে, কারা এর সঙ্গে যুক্ত, তা জানার চেষ্টা চলছে। কিডনি পাচার চক্রের আরও কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষও।