রাতের অন্ধকারে রাস্তার উপরেই পড়েছিল 'খাদ্যসাথী' প্রকল্পের বস্তা-বস্তা চাল। তা চোখে পড়তেই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানায় খবর দেন সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে জনৈক ব্যক্তি। সেই খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ জৌগ্রাম-জামালপুর সড়কপথের কোলসরার বাবলারি বাঁক এলাকায় পৌঁছোয়। তখনও সেখানেই রাস্তার উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল ১১টি বস্তায় ভর্তি সরকারি ’খাদ্যসাথীর’ চাল। পুলিশ ওই চালের বস্তাগুলি উদ্ধার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে বস্তা-বস্তা ’খাদ্যসাথীর’ চাল রাতের অন্ধকারে সড়ক পথে কীভাবে এল সেই বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদেরও ভাবিয়ে তুলেছে।
জামালপুরের আবুজহাটি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কোলসরা গ্রামে সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। মঙ্গলবার তিনি জানান, নিজের কিছু কাজ মেটাতে সোমবার বর্ধমান শহরে গিয়েছিলেন। রাতে গাড়িতে চড়ে বর্ধমান থেকে কোলসরা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত ১০টার পর তিনি জৌগ্রাম-জামালপুর রোডে কোলসরার বাবলারি বাঁকের কাছে পৌঁছোন। তখন গাড়ির আলোয় তিনি দেখতে পান সড়ক পথে একের পর এক বস্তায় ভর্তি কিছু পড়ে আছে। এমনটা দেখে গাড়ির হেডলাইট জেলে তিনি বস্তার কাছে গিয়ে দেখেন, মুখ সেলাই করা প্রতিটি বস্তার উপরে ’খাদ্যসাথীর’ লোগো ও চালের কথা উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন- বিচার ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ: ক্ষুব্ধ দু’দলই, BJP-কে দুষে মমতার পাশে দাঁড়াল সিপিএম?
এরই পাশাপাশি চালের বস্তা গুলিতে 'ফর পিডিস সাপ্লাই’ বলেও লেখা রয়েছে বলে তিনি দেখতে পান। সুদীপ্তবাবু বলেন, “সরকারি খাদ্যসাথী প্রকল্পের চালের একাধিক বস্তা রাতের অন্ধকারে রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকার বিষয়টি আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়। তাই আমি জামালপুর থানায় ঘটনার কথা জানাই। পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সবকিছু খতিয়ে দেখে চালের বস্তাগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।"
আরও পড়ুন- সুজনের বাড়িতে ‘দিদির দূত’ লাভলি, চায়ের নিমন্ত্রণের জবাবে কি বললেন বিধায়ক?
এদিকে খাদ্যসাথীর চাল ভর্তি বস্তা রাস্তায় পড়ে রয়েছে জেনে অবাক হয়ে যান জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিক। এদিন তিনি বলেন, “ঘটনার কথা আমি ব্লকের বিডিও এবং ফুড ইন্সপেক্টরকে জানিয়েছি। কীভাবে 'খাদ্যসাথীর' চালভর্তি বস্তা গুলি রাতে সড়কপথে পড়ে থাকলো সেটাই আশ্চর্যের। আমার মনে হয় কোনও চক্র রাতের অন্ধকারে ’খাদ্যসাথীর“ চাল অবৈধভাবে কোথাও পাচার করতে গিয়ে এমন বিপত্তি ঘটিয়ে বসেছে।" পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করে যাতে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করে সেই আর্জি রেখেছেন সভাপতি ভূতনাথ মালিক।
আরও পড়ুন- কলকাতা থেকে সকালে বেরিয়ে সন্ধেয় ফিরুন, মন জুড়োবে অসাধারণ এই নদীপাড়
এই বিষয়ে জামালপুর থানার এক পুলিশ কর্তা জানান, খাদ্যসাথীর চাল ভর্তি ১১টি বস্তা সড়ক পথ থেকে মিলেছে। এই চালের বিষয়ে ব্লকের ফুড ইন্সপেক্টরকে জানানো হয়েছে। সরকারি চাল ভর্তি বস্তাগুলি কীভাবে সড়ক পথে এল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে ওই পুলিশ কর্তা জানান। বিডিও (জামালপুর) শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরে আমি পুলিশের কাছে খোঁজ নিয়েছি। জানতে পেরেছি, উদ্ধার হওয়া ’খাদ্যসাথীর’ চালের বিষয়ে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে’।