Purba Bardhaman News: নবান্নের নির্দেশ থোড়াই কেয়ার! 'VIP ট্রিটমেন্ট' পেতে নীল বাতিওয়ালা গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে বঙ্গে

Purba Bardhaman News: লাল ও নীল বাতিওয়ালা গাড়ি কারা ব্যবহার করতে পারবেন তার একটি তালিকা তৈরি করে দিয়েছিল নবান্ন। জারি হয়েছিল নির্দেশিকাও। তবে সেসবে গুরুত্বই দিচ্ছেন না সরকারি আধিকারিকদের একাংশ।

Purba Bardhaman News: লাল ও নীল বাতিওয়ালা গাড়ি কারা ব্যবহার করতে পারবেন তার একটি তালিকা তৈরি করে দিয়েছিল নবান্ন। জারি হয়েছিল নির্দেশিকাও। তবে সেসবে গুরুত্বই দিচ্ছেন না সরকারি আধিকারিকদের একাংশ।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
Purba Bardhaman News,Nabanna,burdwan news,vehicles fitted with blue lights,west bengal news,নীল বাতি লাগানো গাড়ি, নবান্ন,পূর্ব বর্ধমানের খবর

vehicles fitted with blue lights: নীল বাতি লাগানো এই গাড়িটি ব্যবহার করেন জামালপুরের বিডিও।

A section of BDOs are using vehicles fitted with blue lights in defiance of government directives: গাড়িতে লাল-নীল বাতির অপব্যবহার নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরেই বেআইনিভাবে গাড়িতে লাল-নীল বাতির ব্যবহার রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। লাল-নীল বাতির গাড়ি কারা কারা ব্যবহার করতে পারবেন তা নির্দিষ্ট করে দেয় নবান্ন। সেই মতো রাজ্য পরিবহণ দফতর নির্দেশিকা জারি করে। সেই নির্দেশিকায় রাজ্যের কোনও বিডিও’কে ফ্ল্যাশার-সহ বা ছাড়া নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপে ঘোরার অধিকার দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও নিজেকে 'VIP' হিসেবে জাহির করতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর-সহ একাধিক ব্লকের বিডিও দিব্যি নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপেই সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেটা দেখেও পুলিশ ও পরিবহণ দফতর নিশ্চুপ থাকায় লাল বা নীল বাতির গাড়ির অপব্যবহার বন্ধে প্রশাসনের সদ্বিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। 

Advertisment

লাল-‌নীল বাতির গাড়ি ব্যবহার করে প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিল প্রতারকেরা। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করতেই নবান্ন নড়ে চড়ে বসে। কারা কারা লাল-নীল বাতির গাড়ি ব্যবহারের অধিকারী হবেন তা তিন বছর আগেই নবান্ন নির্দিষ্ট করে দেয়। নবান্নের নির্দিষ্ট করে দেওয়া তালিকায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা তো রয়েছেনই। এছাড়াও রয়েছেন, মুখ্যসচিব, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, প্রধান সচিব, ডিভিশনাল কমিশনার, রাজ্য পুলিশ ও দমকল বিভাগের ডি.জি, আয়কর ও শুল্ক দফতরের কমিশনার, পুলিশের আই.জি এবং ডি.আই.জি। এই উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকদের পাশাপাশি প্রতিটি জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং মিউনিসিপাল কমিশনাররা তালিকায় স্থান পেয়েছেন। তাঁরা নিজস্ব এলাকায় নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপে ঘুরতে পারবেন। সর্বশেষ তালিকায় যাঁরা জায়গা পেয়েছেন তাঁরা হলেন, প্রশাসনের সাব ডিভিশনাল অফিসার (SDO) ও পুলিশের সাব ডিভিশনাল অফিসার (SDPO)।

লাল-নীল বাতির গাড়ি ব্যবহার নিয়ে নবান্নের এই নির্দেশের বিষয়ে জামালপুর ব্লকের বিডিও পার্থসারথী দে সহ জেলার বাকি বিডিও’রা একেবারেই কিছু জানেন না এমনটা সম্ভবত ঠিক নয়। তবুও 'VIP' হিসেবে জাহির করতে এই বিডিও’রা সরকারি নির্দেশকে অমান্য করেই চলেছেন। নীল বাতি লাগানো গাড়ি ছাড়া জামালপুর ব্লকের বিডিও কোথাও যাতায়াত করেন না। তাঁর ওই গাড়িতে আবার হুটারও লাগানো আছে। রাজ্যের উচ্চ পদস্থ কোনও আধিকারিক কিংবা জেলাশাসক বা মহকুমা শাসক ব্লকে কোনও প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এলে তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিতে বিডিও পার্থসারথী দে নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপেই পিছু-পিছু যান। তখনও 'কালো কভার' দিয়ে নীল বাতি ঢেকে রাখার কোনও ধার তিনি ধারেন না। 

আরও পড়ুন- West Bengal News Live: কল্যাণী বিস্ফোরণে কাণ্ডে রাজ্যকে তুলোধোনা, NIA তদন্তের দাবি, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য শুভেন্দুর

Advertisment

পার্থসারথী দে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে জামালপুর ব্লকের বিডিও পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই থেকেই তাঁকে এমন VIP চালেই ঘোরা-ফেরা করতে দেখে আসছেন ব্লকের বাসিন্দারা। জেলার ভাতার, খণ্ডঘোষ, আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লক,রায়না ১ ও ২ ব্লক গলসি ২ ব্লক সহ আরো কয়েকটি ব্লকের বিডিও’র গাড়িতে নীল বাতি লাগানো রয়েছে। অভিযোগ, এই বিডিও’রাও নিজ-নিজ এলাকায় ঘোরার সময় ওই নীল বাতি কালো কভারে ঢেকে রাখার ধার ধারেন না । নীল বাতি জ্বালিয়েই তাঁরা ওই গাড়িতে চড়ে দেদার ঘুরে বেড়ান। তবে অবশ্য জেলায় অনেক বিডিও আছেন, যাঁরা সরকারি নির্দেশিকাকে অমান্য করে ভিআইপি সাজতে চাননি। তাঁরা সরকারি নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে নীল বাতি বিহীন সাদামাটা গাড়িই ব্যবহার করেন।

আরও পড়ুন- Ammonium Nitrate Recovered in Bengal's Birbhum: ১৬ চাকার ট্রাক যেন বারুদের স্তূপ, হাজার হাজার কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার বীরভূমে

জেলার যে বিডিও-রা নীল বাতি বিহীন গাড়িতে চেপে ঘোরাফেরা করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মেমারি ১ ব্লকের বিডিও শতরুপা দাস। নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার না করার কারণ নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “কে কী করছেন তা আমি বলতে পারব না। তবে বিডিও পদে থেকে আমি নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর অধিকারী নই। তাই আমি আমার গাড়িতে নীল বাতি লাগাইনি।" মেমারির পাশের জামালপুর ব্লকের বিডিও পার্থসারথী দে বলেন, “অনেক বিডিও’ই গাড়িতে নীল বাতি ব্যবহার করছেন, তাই আমিও করছি।" গাড়িতে নীল বাতি লাগিয়ে ঘোরার বিশেষ অনুমতি প্রশাসন থেকে আপনি কি পেয়েছেন? এর উত্তরে পার্থসারথী দে বলেন, “না না.. সেই রকম কিছু নেই।"

আরও পড়ুন- Taslima Nasreen: তসলিমা নাসরিনের নিশানায় ইউনূস, বইমেলায় স্টল ভাংচুরের তীব্র প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন লেখিকা

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) আয়েষা রাণী এ এই ঘটনার কথা শুনে বলেন, "সরকারি নির্দেশিকা সবাইকেই মানতে হবে। নির্দিষ্ট পদাধিকারী না হলে কেউ নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। এমনটা কোন কোন বিডিও করছেন তার তদন্ত আমরা করব।" তবে 
জেলাশাসক এই কথা জানালেও জেলার পরিবহণ আধিকারিক (RTO) গোবিন্দ নন্দী এই ব্যাপারে ফোনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

news of west bengal news in west bengal Bengali News Today Purba Bardhaman