দলের যুব সংগঠন থাকতেও তৈরি হয়েছিল যুবা। সেই যুবার শিখরে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সংগঠনে সেই যাত্রা শুরু 'যুবরাজ'-এর। তারপর যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি। শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন যুবর সভাপতি। পর্যায়ক্রমে এখন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দলে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের দায়িত্ব বেড়েছে বহুগুন। বৃদ্ধতন্ত্র এখন দলে পৃষ্টপোষকের ভূমিকায়। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর অভিষেকের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ আজকের শহিদ দিবস, দলের সর্বোচ্চ কর্মসূচি। যদিও দল এখন রাজ্যে সমস্ত ক্ষেত্রে ক্ষমতার গ্রাফিক্সে শীর্ষে।
সাধারণত তৃণমূল যুবর ব্যানারেই ২১ জুলাই কর্মসূচি পালিত হয়। এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদ দিবসের কর্মসূচিতে অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয়। তিনি শহিদ দিবস সফল করতে বড় সভা করেছেন আলিপুরদুয়ারে। শহরে বাইরে থেকে আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের থাকা শিবির পরিদর্শন করেছেন তিনি। তাঁদের কাছে খোঁজ নিয়েছেন, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা কেমন হয়েছে? কোনও অসুবিধা হচ্ছে কিনা? শরীর-স্বাস্থ্য কেমন আছে? ধর্মতলার সভাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মোদ্দা কথা, শহিদ দিবসের প্রস্তুতি সভা থেকে জনসংযোগ, এদিনের কর্মসূচি সফল করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন 'যুবরাজ'।
২ বছর পর তৃণমূলের এই মেগা ইভেন্টের দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে মঞ্চে দাঁড়িয়ে দূরে নজর রাখতেন মুকুল রায়। পরবর্তীতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয় সুব্রত বক্সীকে। অবশেষে দলের দায়িত্ব বর্তায় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের উত্তরসূরীর হাতেই। অভিষেক দায়িত্ব নিয়েই ভিন রাজ্যে দলের সংগঠন বিস্তারে উদ্যোগ নেন।
আরও পড়ুন- 21 July TMC Sahid Diwas Live: একুশের বিপুল জয়ের পর আজ প্রথম ২১শে, মমতার বার্তার দিকে নজর
ইতিমধ্যে গোয়া ও ত্রিপুরার নির্বাচনে অংশ নিলেও দাগ কাটতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। একইসঙ্গে এরাজ্যে সংগঠন মজবুত করতে মাঝে-মধ্যে নানা নির্দেশ দিয়েছেন। দলের বর্ষীয়ান নেতাদের একাংশের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। একটা সময় সমস্ত কমিটি ভেঙে দেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরে জাতীয় কর্মসমিতি গঠন করেন তিনি। পাশাপাশি ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
কার্যত দলের শহিদ দিবসে নয়া অভিষেক হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একাধিকবার 'এক ব্যক্তি এক পদ' নিয়ে সরব হয়েছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই নীতির আওতা থেকে বাদ রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, এছাড়া কয়েকজনকে ছাড় দিতে গিয়ে সেই সংখ্যাটা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। তবে এখনও 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতি থেকে সরে আসেননি অভিষেক। তিনি নিজেও ঘোষণা করেছেন, এখন তিনি কোনও মন্ত্রিত্ব নেবেন না সংগঠনের কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
এবারের ২১ জুলাই শুধু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কী বার্তা দেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রথমত বাংলায় টানা তিনবার ক্ষমতায় আসার পর এই শহিদ দিবস, একইসঙ্গে সামনেই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। দল কী অবস্থান নেয়, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।