AC Monsoon Care Tips and tricks: বর্ষায় এসি ব্যবহার করছেন? এই পাঁচ ভূলেই ডেকে আনছেন সর্বনাশ! না শুধরালে যেমন বাড়বে বিদ্যুৎ বিল, তেমনই বারোটা বাজবে এসি মেশিনের।
আজকের এই প্রতিবেদনে জেনে নিন বর্ষায় এসি কীভাবে সঠিক ভাবে ব্যবহার করবেন? সঠিক তাপমাত্রা, সঠিক মোডের ব্যবহার এবং গুরুত্বপূর্ণ টিপস জেনে বর্ষার মরশুমে হাজার হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল থেকে রেহাই পান।
তীব্র তাপদাহের পর অবশেষে রাজ্যে বর্ষা প্রবেশ করেছে। তবে ভ্যাপসা গরমে এসির ব্যবহার কিন্তু কমেনি। বর্ষায় সামান্য স্বস্তির পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ার কারণে, আঠালো ভাব অনুভূত হয়, যার কারণে অনেকেই বর্ষাকালেও এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ব্যবহার করেন।
যদি আপনিও বর্ষাকালে এসির ঠান্ডা বাতাস উপভোগ করেন, তাহলে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনই জেনে নেওয়া উচিত। কারণ এই ঋতুতে এসি চালানোর পদ্ধতি গ্রীষ্মের থেকে কিছুটা আলাদা। আপনার সামান্য অবহেলা কেবল আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি নয়, বরং বিদ্যুৎ বিলও বাড়িয়ে দিতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ৫টি ভুল সম্পর্কে যেগুলি ৯৫ শতাংশ মানুষই করে থাকেন।
১. ভুল তাপমাত্রায় এসি চালানো
গ্রীষ্মকালে, আমরা সাধারণ ভাবে ১৮-২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এসি চালালে স্বস্তি পাই, কিন্তু বর্ষাকালে এই তাপমাত্রায় এসি চালানোটা বড় ভূল। বর্ষাকালে বাইরের তাপমাত্রা এমনিতেই কম থাকে। এমন পরিস্থিতিতে, খুব কম তাপমাত্রায় এসি চালালে ঘর অতিরিক্ত ঠান্ডা করে তোলে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে ঠান্ডা লাগা এবং জয়েন্টে ব্যাথায় মতো সমস্যা হতে পারে।
সঠিক উপায় কী:
বর্ষাকালে এসির তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখুন। এই তাপমাত্রা ঘর আরামদায়ক রাখার জন্য যথেষ্ট এবং কম্প্রেসারের উপর খুব বেশি চাপ পড়ে না, যা আপনার বিদ্যুৎ বিলও অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
২. 'ড্রাই মোড' -এ এসি মেশিন না চালানো
বর্ষাকালে এটিই সবচেয়ে সাধারণ এবং সবচেয়ে বড় ভুল। বেশিরভাগ মানুষই সবসময় 'কুল মোডে' এসি চালান। কিন্তু বর্ষার জন্য, এসিতে একটি বিশেষ মোড দেওয়া হয় - 'ড্রাই মোড' অথবা 'মনসুন মোড'।
কিভাবে এটা কাজ করে:
ড্রাই মোডের প্রধান কাজ হল ঘর ঠান্ডা করা এবং বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করা। বাতাসের আর্দ্রতা কমে গেলে, আপনি ২৫-২৬ ডিগ্রিতেও একই রকম শীতলতা অনুভব করেন যেমনটি আপনি ২২ ডিগ্রিতে কুল মোডে অনুভব করেন। এই মোড কম বিদ্যুৎ খরচ করে এবং আঠালো তাপ থেকে প্রকৃত স্বস্তি দেয়।
৩. ভারী বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের সময় এসি চালু করুন
যদি বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় অথবা বজ্রপাত হয়, তাহলে এসি বন্ধ করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। অনেক সময় ভারী বৃষ্টিপাতের সময় এসির বাইরের ইউনিটে জল প্রবেশ করতে পারে, যার ফলে এসির আউটডোর ইউনিটের অভ্যন্তরীণ অংশ এবং তারের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও, বজ্রপাতের সময় ভোল্টেজের ওঠানামা হতে পারে যা আপনার এসির সার্কিট বোর্ডের ক্ষতি করতে পারে।
নিরাপত্তাই প্রাধান্য
এমন আবহাওয়ায়, কেবল রিমোট দিয়ে এসি বন্ধ করলেই হবে না, বরং মেইন সুইচ বা স্টেবিলাইজার থেকে পাওয়ার সাপ্লাইও বন্ধ করে দিন।
৪. ফিল্টার এবং ব্লোয়ার পরিষ্কার না করা
আর্দ্রতার কারণে, বর্ষাকালে ধুলো এবং ময়লা সহজেই এসি ফিল্টার এবং ব্লোয়ারে আটকে যায়। যদি এগুলি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে বায়ুপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর ফলে এসি ঘর ঠান্ডা করার জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করে, যা বিদ্যুৎ খরচ বাড়ায় এবং শীতলতাও কমায়।
কিভাবে পরিষ্কার করবেন:
প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর, এসি ফিল্টারটি খুলে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, শুকিয়ে আবার লাগিয়ে দিন। আপনি নরম ব্রাশ দিয়ে আলতো করে ব্লোয়ারটি পরিষ্কার করতে পারেন।
৫. শুধুমাত্র রিমোট দিয়ে এসি বন্ধ করুন
বেশিরভাগই মানুষই রাতে বা ঘর থেকে বেরোনোর সময় রিমোট ব্যবহার করে এসি বন্ধ করে থাকেন। বর্ষাকালে এই ভুলটি করবেন না। এই ঋতুতে ভোল্টেজের ওঠানামার ঝুঁকি বেশি থাকে। এমনকি যখন এসি স্ট্যান্ডবাই মোডে থাকে (শুধুমাত্র রিমোট দিয়ে সুইচ অফ করা হয়), তখনও এর সার্কিট বোর্ড বিদ্যুতের সংস্পর্শে থাকে ভোল্টেজ ওঠা নামার কারণে সার্কিট ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
সঠিক অভ্যাস:
যখন এসি ব্যবহার করা হচ্ছে না, তখন সর্বদা মেইন সুইচ থেকে এটি বন্ধ করে দিন। এটি আপনার এসি নিরাপদ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়।