China-Pakistan military partnership: ‘অপারেশন সিন্দুর’–এর মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বাড়ার এক মাস পর, ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং শুক্রবার একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে থাকা সামরিক সরঞ্জামের ৮১ শতাংশই চিনের তৈরি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রকাশিত এক ভিডিওতে জেনারেল রাহুল বলেন,"আমার কাছে এটা মোটেই আশ্চর্যের নয়। গত পাঁচ বছরে পাকিস্তান যে অস্ত্র পেয়েছে, তার ৮১ শতাংশই চিনের। একটি সীমান্ত, দুটি প্রতিপক্ষ । সামনের শত্রু পাকিস্তান, আর পিছনে থেকে চিন পাকিস্তানকে সবরকম ভাবে সাহায্য করছে।" তিনি আরও বলেন,“চিন সম্ভবত তার অস্ত্রব্যবস্থাগুলিকে মাঠে বাস্তব পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। এটা যেন তাদের কাছে একটা ‘জীবন্ত ল্যাবরেটরি’।"
উল্লেখ্য, ৭ মে ভোররাতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’ ছিল ১৯৭১ সালের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘর্ষ। এই অভিযানের সময় পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা নটি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি সফলভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অপারেশন সিন্দুরে ভারতের কাছে কৌশলগতভাবে পরাজয়ের পর, পাকিস্তান তাদের বিমান বাহিনীর ক্ষমতা বাড়াতে ফের চিনের কাছে হাত পাতছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে পকিস্তান চিনের কাছ থেকে অত্যাধুনিক KJ-500 AEW&C বিমান কেনার পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপকে বিশেষজ্ঞরা ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আকাশ নজরদারি ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে দেখছেন।
চিনের তৈরি KJ-500 হল একটি আধুনিক এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল (AEW&C) বিমান, যা শানসি Y-9 পরিবহন বিমানের উপর ভিত্তি করে তৈরি। তিনটি AESA (Active Electronically Scanned Array) রাডার বিশিষ্ট এই বিমানটি ৩৬০ ডিগ্রি কভারেজ প্রদান করে এবং শত্রুর বিমান কার্যকলাপ শত শত কিলোমিটার দূর থেকেও শনাক্ত ও ট্র্যাক করতে পারে।
KJ-500 এর ক্ষমতা একনজরে-
- ৪৭০ কিমি দূর পর্যন্ত যুদ্ধবিমান শনাক্ত করতে সক্ষম
- ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত টানা আকাশে থাকতে পারে
- সর্বোচ্চ ৫,৭০০ কিমি দূরত্ব পর্যন্ত উড়তে সক্ষম
- রিয়েল-টাইমে ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পারে
- দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কন্ট্রোল কমান্ডে সহায়তা করে
ভারতের জন্য কতটা চিন্তার বিষয়?
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, “লাহোর থেকে উড়ন্ত একটি KJ-500 নয়াদিল্লি পর্যন্ত ভারতীয় বিমানবাহিনীর গতিবিধি ট্র্যাক করতে সক্ষম।” এর ফলে, আকাশপথে যুদ্ধ পরিকল্পনা হবে আরও জটিল।ভারতের প্রতিরক্ষা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে কারণ পাকিস্তানের কাছে KJ-500 চলে এলে, ভারতীয় বিমানবাহিনীকে আরও ব্যাপক ইলেকট্রনিক যুদ্ধ পরিবেশে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।
চিনের এই কৌশলে শুধুমাত্র পাকিস্তানকেই নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের সামরিক প্রভাবও বিস্তার করছে ড্রাগনের দেশ। KJ-500 এর মাধ্যমে চিন একটি ‘কিল চেইন’ সিস্টেম তৈরি করছে, যার মধ্যে পাকিস্তান একটি কৌশলগত অংশীদার।