Accused sentenced to 20 years in prison for raping minor: ঝাড়ফুঁকের নাম করে জনজাতি পরিবারের নাবালিকাকে ধর্ষণ। সেই অপরাধে ওঝাকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমানের পকসো আদালত। সাজাপ্রাপ্তের নাম সুদেব মালিক। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার উলাড়া গ্রামে তার বাড়ি। মঙ্গলবার বর্ধমানের পকসো আদালতের বিচারক বর্ষা বনশল আগরওয়াল এই সাজা ঘোষণা করেছেন।সাজাপ্রাপ্তকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস কারাবাস করতে হবে। জরিমানার টাকা জমা পড়লে তার ৯০ শতাংশ নির্যাতিতা নাবালিকাকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়াও ক্ষতিপূরণ বাবদ নির্যাতিতাকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ৯ জুলাই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার দিনকয়েক আগে মেমারি থানা এলাকার ওই নাবালিকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন তাকে ঝাড়ফুকের জন্য সুদেবের কাছে নিয়ে যান। ঝাড়ফুক করার নাম করে নাবালিকাকে তার ঘরের ভিতর নিয়ে যায় সুদেব। আধঘন্টারও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরও দরজা বন্ধ থাকায় নাবালিকার মা দরজা ধাক্কা দেন। দরজা খুললে তিনি দেখেন, তাঁর মেয়ে মেঝেয় বসে কান্নাকাটি করছে। জিজ্ঞাসা করায় নাবালিকা তাঁর মাকে ওঝার কুকীর্তির কথা খুলে বলে।
মেয়ের মুখ থেকে ওঝার কুকীর্তির কথা শোনার পর ওই দিনই মেয়েকে নিয়ে তাঁর মা সোজা মেমারি থানায় চলে যান মা। থানায় গিয়ে তিনি ওঝা সুদেব মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে ধর্ষণ ও পকসো অ্যাক্টের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্তে নামে । পরের দিন রাতে পুলিশ বাড়ি থেকে সুদেবকে গ্রেপ্তার করে। তদন্তের প্রয়োজনে তাকে হেফাজতেও নেয় পুলিশ। তদন্ত সম্পূর্ণ করে সেই বছরেরই ৪ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী অফিসার হাবিবুল হাসান আদালতে চার্জশিট পেশ করেন ।
আরও পড়ুন- Jagannath Temple: বুধে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন, বিরোধী দলের কোন কোন নেতা আমন্ত্রিতের তালিকায়?
তদন্তকারী অফিসার আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়ার পর ২০২১ সালেরই ৭ অক্টোবর মামলার চার্জ গঠন হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষ্য দেন। অভিযোগ প্রমাণে ফরেন্সিক রিপোর্ট সহ ৪৯টি নথি পেশ করে পুলিশ অভিযুক্তকে জেলে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া (কাস্টডি ট্রায়াল) সম্পন্ন করা হয়।মামলার সরকারী আইনজীবী তপন সামন্ত বলেন ,আদালত নির্যাতিতা নাবালিকা, তাঁর মা ও বর্ধমান মেডিক্যালের চিকিৎসকের বয়ানকে গুরুত্ব দিয়েছেন। মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণ প্রমাণিত হয়।
আরও পড়ুন- Calcutta HighCourt: 'জেলে পাঠাব', ফের হাইকোর্টের তোপের মুখে SSC চেয়ারম্যান
আদালতে ওই নাবালিকা ও তাঁর মা ‘ওঝা’কে শনাক্ত করে। নির্যাতিতার মা আদালতে জানিয়েছিল, ‘বিশ্বাসের উপর ভর করে মেয়েকে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়েছে’।সাজাপ্রাপ্ত ওঝা যদিও এদিন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, “আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হল।”