/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/cats-2025-10-12-14-48-53.jpg)
পাকিস্তানের ঘুম ওড়াল তালিবান
কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছেন, গত রাতে (১১ অক্টোবর) আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও পাকিস্তানি সেনার মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই সংঘর্ষে আফগান বাহিনীরও ২০ জনের বেশি সদস্য আহত হয়েছেন। মুজাহিদের বক্তব্য অনুযায়ী, আফগান বাহিনী অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে।
আরও পড়ুন- ফের ভয়ঙ্কর মহামারির আঘাত জাপানে! আক্রান্ত হাজার হাজার, শতাধিক স্কুল বন্ধের ঘোষণা, চরম আতঙ্ক
মুজাহিদ অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ও আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। তাঁর দাবি, করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে এই জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আফগানিস্তানে পাঠানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, তেহরান ও মস্কোতে হামলার পরিকল্পনাও পাকিস্তানের এসব ঘাঁটি থেকেই করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ডুরান্ড লাইনের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে সীমান্তে কঠোর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সম্প্রতি সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাবিউল্লাহ মুজাহিদের দাবি, আফগানিস্তানের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বর্তমানে “নিয়ন্ত্রণে” রয়েছে। গত আট মাসে দেশে কোনও বড় ধরনের রাজনৈতিক বা নিরাপত্তাজনিত সংকট দেখা দেয়নি। প্রতিবেশী দেশগুলির মদতে সংঘটিত হামলয় দোষীদের অধিকাংশই নিহত বা গ্রেপ্তার হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মা দুর্গা, মা লক্ষ্মী”, আর বিরোধীদের কী বললেন কুনাল?
মুজাহিদ আরও জানান, আইএসকেপি-র শীর্ষ নেতারা বর্তমানে পাকিস্তানে লুকিয়ে আছেন। তাঁর কথায়, “আমরা পাকিস্তান সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, তাঁদের আফগানিস্তানের হাতে তুলে দিন অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করুন।”পাকিস্তানকে সতর্ক করে তালেবান মুখপাত্র বলেন, জঙ্গি নেতা ও আইএসকেপির সদস্যদের হস্তান্তর না করা হলে এর “ অপ্রত্যাশিত পরিণতি” ভোগ করতে হবে পাকিস্তানকে। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, সীমান্তে যদি আবারও আগ্রাসন ঘটে, তবে আফগান বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জবাব দেবে।
সংঘর্ষের পর প্রাথমিকভাবে তোরখাম সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা দুই দেশের মধ্যে অন্যতম প্রধান বাণিজ্য রুট। পরে পাকিস্তান আফগানিস্তানের সঙ্গে সব প্রধান সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।
আরও পড়ুন- ভয়াবহ এয়ারস্ট্রাইক আফগান সেনাবাহিনীর, নিহত ১২ পাক সেনা, সীমান্তে তুমুল উত্তেজনা
গত রাতে পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতে আফগান তালিবান বাহিনী পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হামলা চালায়। তালিবান জানিয়েছে, আফগান বাজারে পাকিস্তানের হামলার জবাব হিসেবেই এই অভিযান চালানো হয়। পাল্টা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও পালটা হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকটি ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি করে। তবে মিডিয়া রিপোর্ট ও ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, কিছু ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে এবং তালিবান বাহিনী অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দখল করেছে। ড্রোন ও রাডার সিস্টেমও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর।