Ahmedabad plane crash survivor:বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মতো, সতীন্দর সিং সান্ধুও গত ১২ জুন আহমেদাবাদের মেডিসিটিতে অবস্থিত ১,২০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভিতরে ছিলেন। স্থানীয় জিভিকে-ইএমআরআই অ্যাম্বুলেন্স অফিসে সহকর্মী প্যারামেডিকদের সাথে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন তিনি। ঠিক তখনই তিনি একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান।
বাইরে দৌড়ে গিয়ে তিনি হোস্টেল ভবনের গেট থেকে একজন লোককে বেরিয়ে আসতে দেখেন, তার পিছনে তখনও আগুন জ্বলছিল। এই ব্যক্তিই ছিলেন ৩৯ বছর বয়সী বিশ্বকুমার রমেশ, আহমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত যাত্রী। লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পরপরই হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হওয়ার পর একমাত্র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি।
সান্ধু রমেশের হাত ধরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। এর একটি ভিডিও তখন থেকেই ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হচ্ছে। সান্ধু বলেন, “আমি আমার দলকে অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স রেডি রাখতে বলেছিলাম। আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে পৌঁছানোর পর বুঝতে পারি এটি একটি বড় ঘটনা। আমি আমার প্রধান কার্যালয়ে ফোন করে পুলিশকে জানাতে এবং আরও অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে বলেছিলাম। ইতিমধ্যে, ততক্ষণে সেখানে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেও গিয়েছিল।”
আরও পড়ুন- Kolkata Airport: মাঝ আকাশে হঠাৎ বিকল ইঞ্জিন? কলকাতায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের জরুরি অবতরণ
৪৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি এক দশক ধরে GVK-EMRI জরুরি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার সাথে কাজ করছেন এবং শহরের ১২০টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে ২০টি নিয়ন্ত্রণকারী একজন সুপারভাইজার। তিনি আরও বলেন, “আমি প্রথমে হোস্টেলের প্রহরীকে রাস্তায় আহত অবস্থায় দেখতে পাই। আমরা তাকে তুলে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠাই। তারপর, আমরা জ্বলন্ত হোস্টেল ভবনের পাশের গেট থেকে একজনকে বেরিয়ে আসতে দেখি। আমি তার কাছে যাই, কিন্তু সে হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ায় এবং দুর্ঘটনাস্থলের দিকে ফিরে যেতে শুরু করে।” রমেশের কথা উল্লেখ করে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সান্ধু বলেন।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Updates:আবারও নৃশংস খুন তৃণমূল নেতাকে, পরপর গুলি, মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্রের কোপ
সান্ধু আরও জানিয়েছেন, রমেশ প্রথমে ঘটনাস্থল থেকে যেতে চাইছিলেন না। বারবার তিনি বলেছিলেন যে তার পরিবারের সদস্য আগুনে পুড়ছেন। সান্ধু বলেন, "আমরা ভেবেছিলাম হোস্টেল ভবনের ভেতরে থাকা কোনও পরিবারের সদস্য। আমরা তখনও জানতাম না যে সে জ্বলন্ত ওই বিমান থেকেই বেরিয়ে আসা একজন যাত্রী। অবশেষে আমরা তাকে কিছুটা শান্ত করতে সক্ষম হয়েছি, একটি অ্যাম্বুলেন্সে বসিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তার মুখে, হাতে এবং পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার সারা শরীরে পোড়া দাগ ছিল, কিন্তু সে সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটছিল।"
আরও পড়ুন- Khidirpur market fire:খিদিরপুর বাজারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, নেপথ্যে বড়সড় চক্রান্তের আশঙ্কা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের
হাসপাতালে যাওয়ার পথে রমেশ প্যারামেডিকদের জানান যে তিনি সদ্য বিধ্বস্ত বিমানটিতেই ছিলেন। তিনি জানান, তিনি এবং তার ভাই ব্রিটেনে বাড়ি যাচ্ছিলেন এবং এমার্জেন্সি এক্সিজেট জানলার পাশে, ১১এ আসনে তাকে বসানো হয়েছিল। তবে, তিনি জানেন না যে তিনি কীভাবে বিধ্বস্ত বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন।
সান্ধু বলেন, রমেশ ওই ঘটনার পর কার্যত হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন। তার ছোট ভাই অজয়কে জ্বলন্ত বিমান থেকে বাঁচাতে পারেননি বলে অনুশোচনা হচ্ছিল তাঁর। অজয়ও এয়ার ইন্ডিয়ান AI-171 ভেঙে পড়ে নিহত হয়েছিলেন। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানটির মোট ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়েছিল।