/indian-express-bangla/media/media_files/2025/03/16/GeyKBbQfZJLLdgAbdEJF.jpg)
SIR থেকে নজর ঘোরাতেই....! সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে মোদী সরকারকে তুলোধোনা অভিষেকের
Abhishek Banerjee: 'বিচার ব্যবস্থাকে অস্বীকার করার চেষ্টা, SIR থেকে নজর ঘোরাতেই লোকসভায় সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ বিজেপির। মোদী সরকার দেশবিরোধী। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলে বিজেপি ১০০ আসন পেত না'। এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের 'স্বৈরাতান্ত্রিক' মনোভাবের কড়া সমালোচনায় সরব তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন আজকে যে বিল অমিত শাহ সংসদে পেশ করেছেন, সেই বিলে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ নেই। এপ্রসঙ্গে তিনি দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মন্ত্রী সতেন্দ্র জৈন, দিল্লির প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগানো হয়েছে, বলেও সরব হন।
আরও পড়ুন- গ্রেফতার হলেই হারাতে হবে পদ! নয়া বিল পেশ ঘিরে লোকসভায় ধুন্ধুমার
বুধবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেন। লোকসভায় বিল পেশ হতেই বিরোধীরা তুমুল হট্টগোল শুরু করেন। এই বিলে বিধান রয়েছে যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হোক বা দেশের প্রধানমন্ত্রী, যদি তার বিরুদ্ধে কোনও গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগ থাকে এবং তিনি টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন, তাহলে তাকে পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। বিরোধীরা এই বিল নিয়ে লোকসভায় হট্টগোল সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, বিরোধী সাংসদরা বিলটি ছিঁড়ে অমিত শাহের দিকে ছুঁড়ে মারেন। এই তিনটি বিল আলাদাভাবে আনা হয়েছে কারণ কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নেতাদের জন্য আলাদা আলাদা বিধান রয়েছে।
বিলটি পেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লোকসভায় প্রচণ্ড হট্টগোল শুরু হয়। বিরোধী সাংসদরা এদিনের বিলের বিরোধিতা বিরোধীতা করেন এবং ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা লোকসভার ওয়েলে পৌঁছে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এই সময় বেশ কয়েকজন বিরোধী সাংসদ বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে বিলের টুকরো ছুঁড়ে মারেন।
কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধীদের টার্গেট করে গণতন্ত্রকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে—এমনই অভিযোগ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অভিযোগ, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoJK) ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বারবার জোরাল বক্তব্য রাখলেও বাস্তবে কেন্দ্রীয় সরকার কোন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সীমান্ত রক্ষা কিংবা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে এই সরকারের কোনও বাস্তবিক উদ্যোগ নেই বলেই অভিযোগ করেন তিনি। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে কেন্দ্রকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, SIR-এর থেকে নজর ঘোরাতেই সংসদে আজ এই বিল সংসদে পেশ করা হয়।
আরও পড়ুন-আরজি করের নির্যাতিতার বাবার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতার
বিলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে অভিষেক এদিন দাবি করেন, "সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কেবল ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা। জনগণের মৌলিক সমস্যা সমাধান, কৃষক-শ্রমিকদের উন্নয়ন কিংবা গরিবদের স্বার্থ রক্ষার বদলে সরকার সংবিধান সংশোধনী বিলের মতো দমনমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই বিলকে ‘স্বৈরাচারী ও গণবিরোধী’ বলে কড়া সমালোচনাও করেন তিনি । পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ অভিযোগ করেন,নির্বাচন কমিশনকে (EC) ব্যবহার করে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার সরকার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-কে সামনে এনে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকারগুলিকে অস্থিতিশীল করা, বিরোধী নেতাদের টার্গেট করা এবং মানুষের ভোটের ম্যান্ডেটকে অবমূল্যায়ন করাই সরকারের নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সরাসরি নিশানা করে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলেন," ২০ জন মার্শাল নিয়ে অমিত শাহ এই বিল পেশ করেছেন। মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা, কৃষক-শ্রমিকদের দুর্দশা, কিংবা সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের কোনও মাথাব্যথা নেই। শুধু বিভ্রান্তি ছড়ানো আর ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখাই এদের উদ্দেশ্য।” তিনি আরও অভিযোগ করেছে, " কেন্দ্রের ২৮ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকার কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমরা মানুষের দাবি নিয়ে লড়তে জানি। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে লড়াই চালিয়ে যাব”। একই সঙ্গে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী মানসিকতার ফলেই সরকার আইনকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে। দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে কেবল ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার চেষ্টাই করছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার"।