/indian-express-bangla/media/media_files/2025/03/16/57e7KVfHVMobWHaP71kQ.jpg)
আগুনের দহনে জঙ্গলে থাকা প্রাণী ও পক্ষীকুলের মৃত্যুর আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। Photograph: (প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় )
Fire at Ausgram Forest: আগুন জ্বলছে আউশগ্রামের জঙ্গলে। ময়ূর সহ অন্য বন্যপ্রাণ, উদ্ভিদকূল নিয়ে ব্যাকুল বাসিন্দারা
জঙ্গলে লেগেছে আগুন। সেই আগ্নিকাণ্ডের জেরে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জঙ্গলে বিপন্ন সবুজ। আগুন ক্রমান্বয়ে গ্রাস করে যাচ্ছে আউশগ্রামের আদুরিয়া,আকুলিয়া,কালিকাপুর ও হেদগড়ার জঙ্গল আবৃত এলাকা। আগুনের দহনে জঙ্গলে থাকা প্রাণী ও পক্ষীকুলের মৃত্যুর আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। তাঁরা চাইছেন জঙ্গল বাঁচাতে অবিলম্বে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার সদর্থক পদক্ষেপ নিক বনদফতর। নচেৎ জঙ্গল মহল হিসাবে আউশগ্রামে পরিচিতিটাও কগজে কলমে রয়ে থাকলেও জঙ্গল বলে কিছু থাকবে না।
আউশগ্রামের বাসিন্দাদের কথা অনূযায়ী,জঙ্গল তিন চার দিন ধরে জ্বলছে। মোড়বাঁধ থেকে ১১ মাইল যাওয়া বা আসার পথের ধারে আকুলিয়া, কালিকাপুর,হেদগড়া ও তার সংলগ্ন এলাকার জঙ্গল আগুনে দগ্ধ হয়েছে। আগুনে জঙ্গল বিপন্ন হতে দেখে যারপরনাই উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিশিষ্ঠ লেখক রাধামাধব মণ্ডল। তিনি বলেন,বিগত দশ বছরে আউশগ্রামের জঙ্গল এলাকায় এমন আগুন লাগেনি। এখনও জঙ্গলের কোনো কোনো জায়গায় আগুন জ্বলছে । বন দফতরে প্রতি এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাধামাধব মণ্ডল বলেন,জঙ্গল মহলের পরিচিতি দেওয়া বোর্ড এলাকায় থাকলেও নজরদারি বলে কিছু নেই।জঙ্গল জ্বললেও খোঁজ রাখার কেউ নেই । জঙ্গলে লাগা আগুন নেভানোর জন্য জলের ট্যাঙ্কের ব্যবস্থাও নেই।
ভোটে বড় ফ্যাক্টর 'শুভেন্দুগড়', ২৬-এর নির্বাচনে 'মাস্টারপ্ল্যান' অভিষেকের
আউশগ্রামের জঙ্গল মহল এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই ময়ূরের সংখ্যা বাড়ছিল। জঙ্গলে আগুন লাগার পর থেকে ময়ূর আর দেখা যাচ্ছে না । সেইসব ময়ূরগুলি কোথায় গেল,কি অবস্থায় আছে তা নিয়ে রাধামাধব বাবু উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আউশগ্রাম সংলগ্ন পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার দেউল এলাকাতেও রয়েছে জঙ্গলমহল।
কয়েক বছর আগে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই জঙ্গল মহল এলাকায় কয়েকটি ময়ূর ছাড়া হয়েছিল। উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে সেখানে ময়ূরের বংশবিস্তার ঘটে। ময়ূর আশেপাশের জঙ্গলেও ছড়িয়ে পড়ে। ময়ূরের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে আদুরিয়া জঙ্গল এলাকাতেও আদুরিয়া জঙ্গল মহল এলাকার মূরের সংখ্যা প্রায় তিনশোর কাছাকাছি পৌছে ছিল। অথচ গত দু’বছর আগে এই এলাকায় ময়ূরের সংখ্যা ৪০-৪৫টির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আদুরিযা এলাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হেদোগরিয়াতেও বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে দাবি আউশগ্রামের বাসিন্দাদের।
'গোষ্ঠী কোন্দল' নিয়ে কড়া বার্তা, ২৬-এ টার্গেট বেঁধে দিলেন অভিষেক
তাঁরা আরও জানান,আদুরিয়া ও হেদোগরিয়া ছাড়াও প্রেমগঞ্জ,রাঙাখুলা প্রভৃতি এলাকাতেও ঝাঁক ঝাঁক ময়ূরের দেখা পেতেন এলাকার বাসিন্দারা। ময়ূর ছাড়াও ইণ্ডিয়ান উলফ বা হেঁরোল,খরগোশ,অজগর, বনমুরগি, বনবিড়াল,প্যাঙ্গোলিন,সজারু প্রভৃতি প্রাণীর আশ্রয়স্থল আউশগ্রামের জঙ্গল মহল । এহেন জঙ্গল মহল আগুনে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে দেখে হতাশ আউশগ্রামের আপামোর বাসিন্দা।
আউশগ্রামের গেঁড়াইগ্রামের বাসিন্দা সেখ সঞ্জু বলেন,আগুনে জঙ্গলের প্রচুর ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আগুন সম্পূর্ণ ভাবে নেভাতে না পারলে জঙ্গল ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে বনদফতরের পানাগড় রেঞ্জের অফিসার প্রণব দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,ফায়ার ব্লো নিয়ে জঙ্গলে আগুন নেভানোর কাজ করা হয়েছে। আগুন নেভানোর কাজ আপাতত শেষ হয়েছে। তবুও জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মধ্যে আগুন ধরে যাচ্ছে। ওই আগুন মেভানোর চেষ্টাও আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।