Bangladesh Crisis: বাংলাদেশ জুড়ে বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়ে পড়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে হিংসার আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। "ইন্ডিয়া হটাও" স্লোগান উঠেছে বাংলাদেশের রাজপথে। পাশাপাশি ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিও জানানো হয়েছে। প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতিতে কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ জুড়ে অস্থিরতা তুঙ্গে। গত অগাস্ট থেকে ধীরে ধীরে কলকাতায় আসা বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা কমতে শুরু করলেও এখন তা একেবারে তলানিতে। ধর্মতলার নিউ মার্কেট চত্ত্বর বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। পর্যটকদের অভাবে নিউমার্কেটের অনেক মানি এক্সচেঞ্জ কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড সংলগ্ন সারি সারি হোটেল,গেস্ট হাউসে অন্যান্য বছরের এই সময় বাংলাদেশি পর্যটকদের ঢল নামত। হোটেলে ঘর মিলত না। এবারের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। এই এলাকার অভিজাত হোটেল অর্কিড প্লাজার তরফে জানানো হয়েছে, আগে যেখানে প্রতিদিন ৩০-৪০ টা বাস আসত সেখানে এখন বাসের সংখ্যা হাতে গোণা ১-২টো। সেখানে মেরে কেটে ৩৫-৪০ জন পর্যটক আসছেন। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় ব্যবসা বেশ অনেকটাই মার খাচ্ছে। একই সঙ্গে যে স্বল্প সংখ্যক বাংলাদেশি পর্যটক আসছেন তারাও বাজার দর থেকে কম মূল্যে হোটেলের রুমের সন্ধান করছেন। কারণ তারাও জানেন সেভাবে বাংলাদেশি পর্যটকরা আসছে না। তারা সরাসরি ১৫০০-২০০০ টাকার রুম ৮০০-১২০০ টাকার বাজেটে দেওয়ার দাবি করছেন।
অপর এক হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, মেডিকেল ভিসা যাদের আছে, তারাই শুধুমাত্র চিকিৎসার প্রয়োজনে কলকাতায় আসতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা অপেক্ষায় আছি, কখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি আবার কবে স্বাভাবিক হবে। আমরাও আশা করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ঘাড়ে কামড়, বেঙ্গল সাফারি পার্কে মৃত্যু তিন রয়্যাল বেঙ্গল শাবকের
যদিও এসবই প্রত্যাশা। আদৌ কবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেই প্রশ্ন বিশ বাঁও জলে। কট্টোরপন্থী মৌলবাদীদের দাপটে ছন্নছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের জীবন। একের পর এক বাড়িঘর থেকে মন্দিরের ঘটছে অগ্নিসংযোগের ঘটনা। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রায় তলানিতে। এর মাঝেই গত মাসে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করেছে। নিরাপত্তাহীনতায় বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা। বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার অনেকাংশে বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান নৃশংসতার বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ চলছে। বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে আগামী সপ্তাহে ঢাকা সফর করবেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি।
হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে প্রতিবেশী দেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা অব্যাহত। ভাংচুর চালানো হচ্ছে মন্দিরে, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হিন্দুদের বাড়িঘরে। এনিয়ে ইতিমধ্যে ভারত বাংলাদেশের ইউনূস সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা রুখতে ইউনূস সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে ভারতের তরফে। এদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই ৯ ডিসেম্বর ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফর করবেন।
প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে ভারত বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। দু'দেশের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে, ভারত শুক্রবার ঘোষণা করেছে যে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি আগামী সপ্তাহে ঢাকা সফর করবেন।
হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে, বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন যে ভারত এই মামলায় একটি ন্যায্য, ন্যায়সঙ্গত এবং স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া আশা করে। তিনি বলেন, “আমরা এর আগেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। আমরা আমাদের প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই যে বাংলাদেশে চলমান প্রাসঙ্গিক আইনি প্রক্রিয়াগুলি সুষ্ঠু, ন্যায়সঙ্গত এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে অনুসরণ করা হবে”।
বাংলাদেশে ফের মৌলবাদীদের নিশানায় ISKCON
শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে। প্রতিবেশী দেশটিতে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর ক্রমাগত হামলার বিষয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে।
ভারত গত সপ্তাহে বলেছিল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সব সংখ্যালঘু মানুষের সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে। হিন্দুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান হামলার ঘটনা নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। উল্লেখ্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গত মাসে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর থেকে জেলবন্দী রয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।