/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/10/zamindar-bari-2025-10-10-13-04-00.jpg)
Baruipur Zamindar Bari: বারুইপুরের জমিদার বাড়ি।
Historical Architecture: বারুইপুরের এই রাজবাড়িটি প্রায় ৪৫০ বছর আগে শ্রী রাজবল্লভ রায়চৌধুরী তৈরি করেছিলেন। শোনা যায়, সেই সময় নবাবের কাছ থেকে এই বিশাল এলাকা যৌতুক হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি। এখানে আনন্দময়ী কালীমন্দির এবং রাধাকৃষ্ণের মন্দির রয়েছে। ১৪৫০-এর দশকে বারুইপুরের রাসমাঠে এই জমিদার বাড়িটি তৈরি হয়। আগে এদের উপাধি ছিল দত্ত। তবে নবাব তাঁদের রায়চৌধুরী উপাধি দান করেন।
১৭৯৪ সালের একটি গেজেট অনুযায়ী জানা যায়, বাংলায় নীল চাষের অন্যতম আদিকেন্দ্র ছিল এই বারুইপুর। জমিদার বাড়ির এই আশেপাশের এলাকায় দারুণ নীল চাষ হত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুরের রায়চৌধুরী জমিদার বাড়িটি ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অন্যতম একটি নিদর্শন। জানা যায়, এটি রায়চৌধুরী পরিবারের সদস্যদের থাকার জায়গার পাশাপাশি সেই সময়ে এই বাড়ি থেকেই তৎকালীন প্রশাসনিক ও সামাজিক কাজকর্মও চলত। বাংলায় জমিদারি প্রথা চলার সময় এলাকায় আয়কর সংগ্রহ থেকে শুরু করে ফসল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং সামাজিক অনুষ্ঠান পরিচালনার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হত এই রাজবাড়িটি।
আরও পড়ুন- Lord Canning House: 'লর্ড ক্যানিং হাউস', ব্রিটিশ আমলের ঐতিহাসিক ভবন ঘিরে নানা কাহিনী আজও চর্চায়!
জমিদার বাড়ির স্থাপত্যশৈলী বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যকে ধারণ করে। বড় আঙিনা, উঁচু বারান্দা, খিলান ও অন্দরমহলের সজ্জা বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। প্রাসাদের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল বিস্তীর্ণ বাগান ও জলাশয়, যা বাড়ির সৌন্দর্য্যকে দ্বিগুণ করত। স্থানীয় উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জমিদার পরিবারের মিলনমেলার জন্য এই বাড়ি বিশেষভাবে পরিচিত ছিল।
বর্তমানে রায়চৌধুরী জমিদার বাড়িটি পর্যটক ও ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল। তবে দীর্ঘ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই জমিদার বাড়ির একটি বড় অংশ ভগ্নদশাপ্রাপ্ত। ঐতিহাসিক এই জমিদারবাড়িটিতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয় প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলি এই জমিদার বাড়ি সংরক্ষণে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সময়ে সময়ে সংস্কার কাজ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় এখানে।
রায়চৌধুরী জমিদার বাড়ি শুধু বারুইপুরের ইতিহাসের সাক্ষী নয়, এটি বাংলার জমিদার পরিবারের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি জীবন্ত নিদর্শন। যথাযথ সংরক্ষণ ও পর্যটন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও শিক্ষাগত কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হতে পারে। এই বাড়িটি পর্যটক ও গবেষক উভয়ের জন্যই এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতার সুযোগ দেয়।