Advertisment

শাহ-নাড্ডাদের ছাতাই এখনও ভরসা সুকান্ত-শুভেন্দুদের, বঙ্গ বিজেপি 'ম্যাচিওরড' হবে কবে?

রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কেন্দ্রীয় নির্ভরতা কাটার কোনও লক্ষ্ণণই দেখতে পাচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Bengal BJP is not able to break the dependence of the central leadership

কেন্দ্রীয় নির্ভরতা কাটছে না বঙ্গ বিজেপির, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

বীরভূমের বগটুই গণহত্যা, নদিয়ার হাঁসখালিতে গণধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে বাংলায় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এবার রাজ্যে প্রতিনিধি দল এসেছে বিজেপির নবান্নে অভিযানে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সেদিনের ঘটনার কাটাছেঁড়া করে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে রিপোর্ট পেশ করবে এই প্রতিনিধি দল। সম্প্রতি এরাজ্যে নয়া কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ও সহকারি পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্ভরতা কাটার কোনও লক্ষ্ণণই দেখতে পাচ্ছে না রাজনৈতিক মহল।

Advertisment

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতারা নিত্যদিন দিল্লি-কলকাতা যাতায়াত করেছেন। তখন তাঁদের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। দীর্ঘ দিন এরাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। প্রকাশ্য মঞ্চে মুকুল-কৈলাসের কানে কানে ফিসফিসানির কথা এখনও ভোলেনি বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। সেই বিজয়বর্গীয় বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পরে একেবারে ভ্যানিস হয়ে গেলেন। তারপর থেকে তিনি বাংলায় পা রাখেননি। শেষমেশ তাঁকে সরিয়ে একমাসের জন্য পর্যবেক্ষক করা হয় সুনীল বনশলকে, আবার বনশলকে সরিয়ে মঙ্গল পান্ডেকে বাংলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছেন আদিবাসী নেত্রী আশা লাকড়া। অমিত মালব্য তো আছেনই। সর্বভারতীয় দল স্বভাবতই পর্যবেক্ষক নিয়োগের রীতি চলছেই!  

গত বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপির একটা অংশ তৃণমূলে না গেলেও তাঁরা বসে গিয়েছেন। এবারের নবান্ন অভিযানে তাঁদের অনেককেই দেখা যায়নি। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, রাজ্যে নেতৃত্ব তৈরি না করে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাঠিয়ে এরাজ্যে সংগঠনকে কতটা শক্তিশালী করতে পারবে? পাশাপাশি তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে আনার পরিস্থিতি আপাতত রাজ্য বিজেপির নেই। একটা কথা প্রচলিত আছে, আর যাই হোক ভাড়াটে সৈন্য দিয়ে যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায় না।

এরাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বে কেউ তৃণমূল থেকে দলবদলে এসেছেন, নতুবা অন্য পেশা থেকে সরাসরি যোগ দিয়েছেন। বিরোধী দলেনতা শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে গিয়ে দাবি করেন, তিনি কলেজ রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। রাজনৈতিক মহলের বড় প্রশ্ন, এই মুহূর্তে মাটি থেকে আন্দোলন করে উঠে আসা বঙ্গ বিজেপির কজন নেতা রয়েছেন? সেই চেষ্টাও কি দল করছে? সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কখনও প্রতিনিধি পাঠিয়ে, পর্যবেক্ষক পরিবর্তন করে দলকে মজবুত করে দেবে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।

আরও পড়ুন- ‘চারটে বোমা মেরে এলেই সব ফাঁকা হয়ে যাবে’, নাম না করে শুভেন্দুকে বেনজির হুমকি মদনের

সংঘ পরিবার বা বিজেপি ঘরানার নেতৃত্বের যাঁরা কখনও দল পরিবর্তন করেনি তাঁদের অনেককেই দলের কোনও অনুষ্ঠানেই দেখা যাচ্ছে না। বিদ্যার্থী পরিষদ থেকেও সেভাবে নজরকাড়া নেতা এখনও এই বঙ্গে উঠে আসতে দেখেনি রাজনৈতিক মহল। অভিজ্ঞমহলের মতে, দল ভাঙিয়ে, দিল্লির পর্যবেক্ষক এনে, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পাঠিয়ে বাজিমাত করতে চেষ্টার কসুর করেনি বিজেপি। রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি ইডি, সিবিআইকে ব্যবহার করছে, দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ করে আসছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

গত কয়েক বছরে চিটফান্ড থেকে গরুপাচার, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি এমন নানা মামলায় একাধিক তৃণমূলের শীর্ষ নেতা গ্রেফতার হয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে জনমানসে তীব্র প্রতিক্রিয়াও তৈরি হয়েছে। বিজেপি নবান্ন অভিযানও করেছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এতদ সত্বেও পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারছে না গেরুয়া শিবির। কমছে না কেন্দ্রীয় নির্ভরতা।

আরও পড়ুন- বাংলার মফস্বলের পথকুকুর গবেষক শিক্ষক বিশ্বে সমাদৃত, অনাদর দেশের মাটিতে  

রাজনৈতিকমহল মনে করছে, দল ভাঙিয়ে আনা, দিল্লির প্রতিনিধি বা পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে ভোটযুদ্ধে জয় পাওয়া সহজ নয়। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলেও নয়া নেতৃত্ব বা বুথ ভিত্তিক সংগঠন মজবুত না হলে নবান্ন দখলের জন্য ভিন্ন পথ ছাড়া বিজেপির কাছে কোনও উপায় নেই।

bjp amit shah Suvendu Adhikari JP Nadda Bengal BJP Sukanta Majumder
Advertisment