Alapan Banerjee: তীব্র টানাপোড়েনের মধ্যে অবসর নিলেও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে পিছু হঠতে নারাজ কেন্দ্র। মুখ্যসচিবের অবসর গ্রহণের দিনেই তাঁকে শোকজ নোটিস পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কেন কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে ১৫ মিনিট দেরিতে পৌঁছন তিনি, তার কারণ জানতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে কেন্দ্র। তিন দিনের মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে। এর মধ্যেই রাজ্য ও কেন্দ্রের প্রাক্তন শীর্ষ আমলারা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কেন্দ্রের পদক্ষেপকে নিয়মবিরুদ্ধ, বিরক্তিকর এবং অপ্রত্যাশিত বলে ব্যাখ্যা করেছেন তাঁরা।
প্রাক্তন ক্যাবিনেট সচিব বি কে চতুর্বেদী, প্রাক্তন কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সচিব সত্যানন্দ মিশ্র এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব জি কে পিল্লাই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, এই বিতর্কের জেরে খারাপ উদাহরণ পেশ হল এবং আমলাদের নিরুৎসাহ দেবে। পিল্লাই বলেছেন, "স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথম কোনও সচিব স্তরের অফিসারকে তাঁর অবসরের আগের দিন কেন্দ্রে পোস্টিং দেওয়া হল। এই আদেশ একেবারেই অবৈধ। এবং সেই দিন সকাল দশটায় একজন সচিবকে দিল্লিতে রিপোর্ট করতে বলা হচ্ছে সেটাও কোনও দিন হয়নি। আমলাদের জন্য সাধারণত ছয়দিনের সময়সীমা থাকে। কর্মিবর্গ দফতরের সচিব এমন নোটিস ইস্যু করতে মানলেন দেখে বোঝাই যাচ্ছে, ভারতের আমলাতন্ত্রের কী হাল!"
আরও পড়ুন অবসর নিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা
ইয়াস পরবর্তী পর্যালোচনা বৈঠক নিয়ে মোদী ও মমতা সরকারের সংঘাতের মধ্যে পড়ে গিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এড়ানোর ফলে রাজরোষ পড়েছে মুখ্যসচিবের ঘাড়ে। সোমবারই আলাপনকে নোটিস পাঠিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার জবাব তলব করা হয়েছে। মোদীর বৈঠকে ১৫ মিনিট দেরিতে আসার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে শোকজ নোটিসে। পিল্লাই এই নোটিসে রীতিমতো হতভম্ব। তিনি বলেছেন, "আমার দীর্ঘ কর্মজীবনে এমন পরিস্থিতি দেখিনি। তাও আবার একটা বৈঠকে না থাকার জন্য। দুটি নোটিসই অদ্ভূত। এ ছাড়া কোনও ভাষা পাচ্ছি না।"
আরও পড়ুন ‘নির্দেশ দেখে অবাক হচ্ছি, ছাড়ছি না আলাপনকে’, মোদীকে চিঠি মমতার
প্রাক্তন ক্যাবিনেট সচিব বি কে চতুর্বেদী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে খারাপ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাঁর মতে, "রাজ্যের জন্য আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের গুরুত্ব রয়েছে বলেই তাঁকে তিন মাসের এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে। সেই গুরুত্ব বুঝেই কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে বলে প্রমাণ রয়েছে। নাহলে তো তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হত না। কিন্তু তার পরের যে নোটিস কেন্দ্র ইস্যু করেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে তাঁর উপর ক্ষুব্ধ কেন্দ্র। তবে যাই হোক, এটা কোনও বিষয় ছিল না যার জন্য এমন পদক্ষেপ করতে হবে। এর ফলে সরকার আমলাদের বিশ্বাস হারাবে। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হয়নি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন