রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে হাওড়ার শিবপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ও উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এই ঘটনার জন্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরঙ্গ দল, বিজেপিকে দোষারোপ করেছেন। অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শিবপুরসহ অন্যত্র রাজ্যে অশান্তির জন্য় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, সংখ্যালঘু ভোট কমে যাওয়ার জন্য এসব ঘটনাকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন মমতা। যদিও এই হিংসার ঘটনার পিছনে বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলকেই দায়ী করেছে সিপিএম।
আরও পড়ুন- মুসলিমদের মমতার বড় বার্তা, ‘শান্ত থাকুন, আমার উপর ছাড়ুন’
এদিকে শুক্রবারের ঘটনার পর শনিবারও হাওড়ার শিবপুরে ব্যাপক উত্তেজনা ছিল। বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। দোকান-পাট বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি একেবারে থমথমে। একদিকে সাগরদিঘির ফলাফল, তারপর ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের টানা আন্দোলন, রাজ্যে দোরগোরায় পঞ্চায়েত নির্বাচন, সেই সময়ে ঘটল এই অশান্তি। এই গন্ডগোলের পিছনে অন্য় গন্ধ পাচ্ছে পর্যবেক্ষক মহল।
আরও পড়ুন- শিবপুরে অশান্তি: দায়ী মমতাই! তদন্তে NIA,CBI চেয়ে হাইকোর্টে শুভেন্দু
সাগরদিঘিতে সংখ্য়ালঘু ভোট হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। ওই কেন্দ্রে বিজেপি তৃতীয় স্থান পেয়েছে। তার আগে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে বিজেপির প্রাক্তনী বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূল প্রার্থী হওয়ায় বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশন তীব্র বিরোধিতা করেছিল। ভোটও কম পড়েছিল। বৃহস্পতিবারের হাওড়ার ঘটনা নিয়ে কিছু বলতে পারব না বলে জানালেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক হিসাবে অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন, এরাজ্য়ে বিরোধী দল হিসাবে বিজেপিকেই চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন- শিবপুরে হিংসার ঘটনায় উদ্বিগ্ন অমিত শাহ, রাজ্যপালকে ফোন করে খোঁজ নিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস যে কোনও মূল্য়ে রাজ্যের রাজনীতিটাকে তৃণমূল ভার্সেস বিজেপি করতে চাইছে। তাতে তৃণমূলের ফায়দা আছে। ফলে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কার্যত সমস্ত চেষ্টাই করছেন যে কোনও ভাবে সংখ্য়ালঘু মনটাকে ফিরে পেতে। তার জন্য় মন্ত্রীসভার সদস্য়কে সরিয়েছেন। দলের সংখ্য়ালঘু সেলের নতুন নেতা মনোনীত করেছেন। পাশপাশি নতুন কর্মসূচি নিয়েছেন। সংখ্য়ালঘু উন্নয়ন বোর্ড করেছেন। একটা বেপরোয়া তৎপরতা দেখাচ্ছেন মমতা। রাজনীতিতে সব কিছুই সম্ভব। এখন দেখার বিষয় এই বায়োনারি পলিটিক্স আবার ফিরে আসছে কিনা।' তিনি মনে করেন, 'তাহলে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের শাসনকাল দীর্ঘমেয়াদী হবে তা না হলে দিনগণনা শুরু হয়ে যাবে।'
আরও পড়ুন- লজ্জিত শতরূপ! কুণালকে কোন শব্দে বিঁধে অনুতাপে ‘মরছেন’ বামেদের তরুণ তুর্কি?