২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে হাওয়া তুললেও ফায়দা পায়নি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরকে থামতে হয়েছে ৭৭ আসনে। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে সময় নিয়েছে পদ্মশিবির। একবছর গেরুয়া শিবিরের কার্যক্রমে গতি প্রায় ছিল না বললেই চলে। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ফলপ্রকাশের পর আর বাংলামুখো হননি। তবে পঞ্চায়েতের আগে ফের বিজেপির কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্ব রাজ্যে আসতে শুরু করেছেন। আপাতত পঞ্চায়েত নির্বাচনকেই পাখির চোখ করেছে বিজেপি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনই যে লোকসভা নির্বাচনের ভিত তা জানান দিয়েছে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক ফায়দা পেয়েছে বিজেপি। ২ থেকে একলাফে ১৮টি আসনে জয়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে ৩৪ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন কমেছে ২২-এ। এবার তৃণমূল কংগ্রেসও রাজ্যজুড়ে বড় সমাবেশ করে চলেছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তেড়েফুঁড়ে সভাসমাবেশ করছে। যেন মনে হতে পারে সামনেই বিধানসভা বা লোকসভার নির্বাচন।
এদিন পঞ্চায়েত নির্বাচনেই পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির দিল্লি নেতৃত্ব এরাজ্যে এসেছেন। কেউ সাংবাদিক বৈঠক করছেন তো কেউ সভা করেছেন। তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছে বিজেপি নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের সেই দৃশ্যই দেখতে পাচ্ছে রাজ্যবাসী। জেপি নাড্ডা ও অমিত শাহরা এবার ফের পালা করে বাংলায় আসতে থাকবেন। স্মৃতি ইরানিসহ অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা তো নানা কাজে এরাজ্যে আসছেনই।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সার বুজেছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে না পারলে লোকসভায় ভাল ফল করা সম্ভব নয়। মূল লক্ষ্য লোকসভা। প্রার্থী দিয়ে হামলার স্বীকার হলেও দলেরই লাভ হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখেই তাই বিজেপি নেতৃত্বের আগমন বজায় থাকবে।
আরও পড়ুন- ‘জেলে বসেই বিকাশদার সঙ্গে ফোনে কথা কেষ্টদার’, তোলপাড় ফেলা মন্তব্য কাজল শেখের
বিগত ২০১৮ গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হামলা ও হিংসার অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ ছিল সাধারণ মানুষ ভোট পর্যন্ত দিতে পারেনি। এমনকী তৃণমূল নেতৃত্ব পঞ্চায়েতে অশান্তির কথা পরে স্বীকার করেছে। এবার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে বিজেপির দখলে থাকা আসানসোল লোকসভা আসন হাতছাড়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- কলকাতা বিমানবন্দরে মুখোমুখি শুভেন্দু-কল্যাণ, তার পর যা হল চোখ কপালে ওঠার জোগাড়
অন্যদিকে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ঘাসফুল শিবিরে গিয়ে ভিড়েছেন। আশানুরূপ ফল হয়নি বিধানসভায়। পুরনো বিজেপি নেতা-কর্মীরা অনেকেই বসে গিয়েছেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে, পদ্মশিবিরের লক্ষ্য লোকসভার আসন। পঞ্চায়েতে লড়াই না করলে বিজেপির আশা পূরণ কোনওভাবেই যে সম্ভব নয় তা তাঁরা জানেন। তাই ফের নাড্ডার গলায় শোনা যাচ্ছে সোনার বাংলার কথা।