Burdwan University: ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নকে থোড়াই কেয়ার! ঘটা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণেশ পুজোর আয়োজন উপাচার্যের, তুঙ্গে বিতর্ক

Burdwan University: গনেশ পুজো উপলক্ষে উপাচার্যের ঘরের পাশে ছোট একটি জায়গাকে সুন্দর করে সাজানো হয়। উপাচার্যের নামে পুজো দেওয়া হয়। পুজোর হোমে উপাচার্য নারকেল আহুতি দিয়েছেন।

Burdwan University: গনেশ পুজো উপলক্ষে উপাচার্যের ঘরের পাশে ছোট একটি জায়গাকে সুন্দর করে সাজানো হয়। উপাচার্যের নামে পুজো দেওয়া হয়। পুজোর হোমে উপাচার্য নারকেল আহুতি দিয়েছেন।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
cats

ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নকে থোড়াই কেয়ার! ঘটা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণেশ পুজোর আয়োজন উপাচার্যের,

Burdwan University: পরীক্ষা হয় না নির্দিষ্ট সময়ে। পরীক্ষার ফল বের হলেও নির্দিষ্ট সময়ে মেলেনা মার্কশিট। 'NAAC'- এর  মূল্যায়নে ’গ্রেড’ কমে গিয়েছে। এহেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্কর কুমার নাথ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের দফতরের সামনে ঘটা করে সিদ্ধিদাতা গনেশের পুজো করালেন। বেদি তৈরি করে সেখানে গনেশের মূর্তি বসিয়ে জাঁকজমক করে হল পুজো ও হোম যজ্ঞ। যতক্ষণ পুজো চলে ততক্ষণ উপাচার্য সিদ্ধিদাতার মূর্তির সামনে বসে থাকেন। সর্ব কাজে ’এগিয়ে’ যাওয়ার কৃপা লাভের জন্য সিদ্ধিদাতা গনেশের পুজো অর্চনা করেছেন বলে উপাচার্য জানালেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। বিশ্ববিদ্যালের প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়া, অধ্যাপক ও আধিকারিকদের বক্তব্য,“বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম উপাচার্যের ঘরের সামনে হল গনেশ পুজো। এতে খুন্ন হল বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র“।

Advertisment

আরও পড়ুন- রাজপথে জনজোয়ার! TMCP প্রতিষ্ঠা দিবসে 'অচল' কলকাতা, বিধানসভা নির্বাচনের বড় চ্যালেঞ্জের মুখে শীর্ষ নেতৃত্ব

গনেশ পুজো উপলক্ষে উপাচার্যের ঘরের পাশে ছোট একটি জায়গাকে সুন্দর করে সাজানো হয়। উপাচার্যের নামে পুজো দেওয়া হয়। পুজোর হোমে উপাচার্য নারকেল আহুতি  দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গনেশ পুজোর আয়োজন নিয়ে সমালোচকরা যাই সমালোচনা করুন না কেন, তা উপাচার্যের কাছে মান্যতা পায় নি। উপাচার্য শঙ্করকুমার নাথ পরিস্কার জানিয়ে দেন,“ গনেশ পুজো করার মধ্যে কোনও অন্যায় বা বিতর্কের কিছু তিনি দেখছেন না। তাঁর দাবি, “গণেশ পুজোর মধ্য দিয়ে শারদীয়া উৎসবের সূচনা হল। ঈশ্বরের আশীর্বাদ, কৃপা ছাড়া আমরা তো এগতে পারব না। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো, বিশ্বকর্মা পুজোও করব।“

Advertisment

উপাচার্য আরও বলেন,“আমি দেবতা গণেশের বড় ভক্ত। আইআইটির টেকনোলজি ক্লাবেও পুজো করতাম। গণেশ হচ্ছেন সিদ্ধিদাতা। কোনও কাজ করতে গেলে গণেশের আশীর্বাদ ছাড়া করতে পারবেন না। সে জন্যেই গণেশের পুজোটা ভীষণভাবে করা দরকার।” গণেশের মূর্তি সারা বছর উপাচার্যের ঘরের সামনেই থাকবে এবং প্রতিদিন পুজো করাও হবে বলে উপাচার্য এদিন জানিয়ে দেন।“ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে গনেশ পুজো করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ক্ষুন্ন হয়েছে,এই কথা উপাচার্য মানতে চান নি বরং তিনি দাবি করেন,“আমাদের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বধর্ম সমন্বয়ের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। আমরা যেমন ইদে অংশ নিয়ে থাকি, তেমন বড়দিনে গির্জাতেও যাই।“ যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন উপাচার্য বলেন, “কেউ ঈশ্বরে বিশ্বাসী  হতেই পারেন। পুজো  করার জন্যে বাড়ি, বাংলো রয়েছে। দফতরের পাশে এ ভাবে পুজো করাটা শোভনীয় হয়নি।” 

বর্ধমান ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’ বা বুটার কর্তা ভাস্কর গোস্বামী গোটা বিষয়টি নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন,“কার মদতে এই পুজো হল জানতে আমি চাই। ঠিক যে জায়গাতে পুজো হচ্ছে, সেখানে অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলে তার  অনুমতি মিলবে তো ? পুজোর খরচ নিয়েও ভাস্কর গোস্বামী প্রশ্ন তুলেছেন। এর জবাবে উপাচার্য উপাচার্য জানিয়েছেন,“উপাচার্য তাঁর নিজস্ব তহবিল থেকে পুজোর খরচ করেছে। এ নিয়ে কারুর  দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।“

আরও পড়ুন-তৃণমূল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তৈরি খাবারে শৌচাগারের জল!শুভেন্দুর ভিডিও-র পালটা কী জানালো শাসক শিবির?

বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির দাবি, স্নাতকস্তরে ফল যথা সময় বের হচ্ছে না, পরীক্ষা ঠিক সময়ে নেওয়া হচ্ছে না। আবার ফল বের হলেও সময়ে মার্কশিট দিতে পারছে না। NAAC-এর গ্রেড কমে গিয়েছে। এইসব কাজে মন না দিয়ে শুধু পুজোয় মন দিলে কী বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যেতে পারবে? যদিও বিজেপির জেলা নেতা আশিস পালের দাবি ,বিদ্যাতে সিদ্ধিলাভের জন্যে সিদ্ধিদাতা গণেশ পুজো করা যুক্তিযুক্ত।  

Ganesh The University of Burdwan