Netaji Subhas Chandra Bose: অযোধ্যায় (Ayodhya) রাম মন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধন ও রামলালার (Ram Lalla) প্রাণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল পড়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) মূল অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। এদিকে গতকাল কলকাতায় (Kolkata) সংহতি মিছিল (Sanghati Rally) করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের জন্মদিবস (Netaji Subhas Chandra Bose Birthday) পালিত হয়েছে দেশ জুড়ে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসুর (Chandra Basu) বক্তব্য, নেতাজি কখনও ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মেশাননি। সিঙ্গাপুরের (Singapore) এক মন্দিরে শুধু নিয়ম ভঙ্গ হয়েছিল সুভাষচন্দ্র বসুর ইচ্ছায়।
চন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'রাম মন্দির হল ভাল কথা। এটা সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) রায় দিয়েছে। নেতাজি ধার্মিক ছিলেন, আধ্যাত্মিক ছিলেন। উনি রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) পরমহংস দেব, বিবেকানন্দর (Vivekananda) খুবই ভক্ত ছিলেন। একইসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে (Dakshineswar Temple) যেতেন। আমার পিতা অমিয়নাথ বসুর কাছে শুনেছি, রাতে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে গিয়ে ধ্যান করতেন নেতাজি (Netaji)। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বা সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে উনি কিন্তু কখনও ধর্মকে মেশাননি। ধার্মিক বা আধ্যাত্মিক মানুষ হতেই পারে। যে যে ধর্মে বিশ্বাসী সেই ধর্ম করতে পারেন। কিন্তু এটা একটা ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। নেতাজিও একটা ধর্মনিরপেক্ষ ও সাম্যবাদী রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করেছিলেন।' চন্দ্র বসুর
দাবি, নেতাজি থাকলে হয়তো রাম মন্দিরে থাকতেন কিন্তু ধর্মীয় আচার-আচারণে অংশ নিতেন না। নেতাজি সেই মান্যতা দিতেন না। নেতাজির ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে তাঁর জীবনের একটি কাহিনী শুনিয়েছেন একসময়ের বিজেপি (BJP) নেতা চন্দ্র বসু। যদিও এখন কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নেই তিনি। তাঁর দাবি, 'উন্নয়ন ও মোদীকে দেখেই তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন।' চন্দ্র বসু বলেন, 'দেশ স্বাধীনের লড়াইয়ের সময় সিঙ্গাপুরে থাকার সময় ঘটনাটি ঘটেছিল। ১৯৪৩ সালে নেতাজি আজাদ হিন্দ ফৌজের (Azad Hind Fauj) সুপ্রিম কমান্ডার। সিঙ্গাপুরের চেতিয়া সম্প্রদায়ের মন্দিরের প্রধান পুরোহিত নেতাজিকে বলেছিলেন, আজাদ হিন্দ বাহিনীকে মোটা ডোনেশন দেব। যাতে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন।' বাবার কাছে এই কাহিনী শুনেছেন চন্দ্র বসু।
তিনি বলেন, 'তবে ওই পুরোহিত একটা শর্ত দিয়েছিলেন। আপনি শুধু হিন্দু অফিসারদের নিয়ে মন্দিরে আসবেন। তখন নেতাজি বলেছিলেন, এমন আমন্ত্রণে আমি খুব আনন্দিত। তবে আমার আজাদ হিন্দ ফৌজে হিন্দু অফিসার নেই। এই ফৌজে ভারতীয় অফিসার আছেন। সমস্ত সম্প্রদায় আছে। ভারতীয় অফিসারদের নিয়ে আসার অনুমতি দিলে আসব। সেই সময় ওই চেতিয়া সম্প্রদায়ের মন্দিরে বহু বছরের নিয়ম ভাঙা হয়েছিল। তখন পুরোহিত বলেছিলেন, আপনি আপনার ভারতীয় অফিসারদের নিয়েই আসবেন। আবিদ হাসান আমার বাবাকে বলেছিলেন সেই টিমে তিনি ছিলেন। তাছাড়া মহম্মদ জামান কিয়ানি, এসএ আইয়ার, গুরুবক্স সিং ধিঁলোদের নিয়ে মন্দিরে গিয়েছিলেন নেতাজি। সবার কপালে টিকা লাগানো হয়েছিল। ইউনিটি ও রিলিজিয়ন নিয়ে তুখোর বক্তব্য রেখেছিলেন নেতাজি। তবে মন্দির থেকে বেরিয়ে টিকা মুছে দিয়েছিলেন সকলেই। এখানে নেতারা টিকা লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।' চন্দ্র বসুর কথায়, "মেরুকরণ বা বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে নেতাজি লড়াই করেছিলেন।"