ভূপতিনগরের বিস্ফোরণস্থলে তীব্র উত্তেজনা। সোমবার সকালে এলাকায় বিজেপি কর্মীরা ঢুকলেই তাড়া করেন তৃণমূল কর্মীরা। আটকে রাখা হয় বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে। পুলিশের সামনেই হাতাহাতি-মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি ও তৃণমূলকর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করতে দেখা যায় পুলিশ ও Raf বাহিনীকে। তৃণমূলের দাবি, তদন্ত প্রভাবিত করতেই বিস্ফোরণস্থলে যায় বিজেপি। পাল্টা বিজেপির দাবি, পুলিশকে কাজে লাগিয়ে তদন্তকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা শাসকদলের। এলাকায় তুমুল উত্তেজনা থাকায় বসেছে পুলিশ পিকেট।
কাঁথিতে গত শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার ঠিক আগের রাতেই ভূপতিনগরের অর্জুন নগর পঞ্চায়েতের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণে স্থানীয় তৃণমূল বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না-সহ মোট ৩ জনের ঝলসে মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণের জেরে তৃণমূল নেতার বাড়ির চাল সম্পূর্ণ উড়ে গিয়েছে। সন্ত্রাস ছড়াতেই ওই বাড়িতে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল বলে অভিযোগ তুলে সুর চড়াতে থাকে বিজেপি। ঘটনার এনআইএ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে গেরুয়া দল। যদিও বিজেপির তোলা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে শাসকদল।
এদিকে, সোমবার সকালে ভূপতিনগরে বম্ব স্কোয়াড তল্লাশি চালাচ্ছিল। সেই সময় বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী ঘটনাস্থলে যেতেই তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের দেখেই তাড়া করেন এলাকার তৃণমূলকর্মীরা। বিস্ফোরণস্থলে হাতাহাতি-মারামিরেত জড়িয়ে পড়েন বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীরা। বিজেপি কর্মীদের পিছু ধাওয়া করে তৃণমূল। পুলিশের সামনেই বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- এবার গড়ে দাঁড়িয়েই তৃণমূলের যুবরাজকে ঝাঁঝালো জবাবে মুখিয়ে শুভেন্দু, নামছেন একুশেই
এলাকার তীব্র উত্তেজনা সামাল দিতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ ও Raf। এরপর পুলিশের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বেশ কিছু মহিলা। এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের পিছনে বিজেপির যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। যদিও তৃণমূলের তোলা সেই অভিযোহ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপি।
ভূপতনিগরের এদিনের গন্ডগোল প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ''বিজেপির কাজ হচ্ছে প্ররোচনা দেওয়া। কিছু একটা গন্ডগোল পাকিয়ে রহস্যজনক গল্প ছেড়ে এনআইএ-কে চিঠি দেওয়াই বিজেপির কাজ। এনআইএ এলে তৃণমূলের ছেলেদের নাম দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওদের হেনস্থা করাই কাজ বিজেপির। ওই এলাকায় অপরাধীদের রাখতে চায় বিজেপি। ওই জায়গায় ওরাই ইন্ধন দিচ্ছে।''
আরও পড়ুন- দিঘা যাচ্ছেন? মানতেই হবে এই নিয়মগুলি, অন্যথায় কপালে নাচছে ঘোর ‘বিপদ’
অন্যদিকে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ''সত্য যাতে কোনওভাবে প্রকাশিত না হয় সেই চেষ্টা করছে তৃণমূল। রাজ্যে বোমা সংস্কৃতি চালু করেছে তৃণমূল। এখন ওরা বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। ওরা বিজেপি কর্মীদের যাওয়া আটকাতে চাইছে। কারণ তথ্য যাতে বেরিয়ে না আসে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। অবিলম্বে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি।''