/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/26/pp-2025-08-26-19-35-17.jpg)
college student murder: ঘটনার তদন্তে নেমে নানা বিষয় খেয়ালে রাখছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
কাঁচড়াপাড়া থেকে কৃষ্ণনগরে চলে আসার পর দেবরাজকে পাত্তা না দেওয়ার কারণেই কি অকালে চলে যেতে হলো ইশাকে। অথাৎ প্রেমের সম্পর্কে টানাপোড়েন থেকেই কি গুলিবিদ্ধ হলেন ইশা মল্লিক(১৯)? তাই কি দিনে দুপুরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে প্রেমিক কৃষ্ণনগর মানিকপাড়ার বাড়ির দোতলায় উঠে গিয়ে খুন করলো?অস্ত্র কি সহজলভ্য হয়েছে? এই প্রশ্ন এখন তদন্তকারী ওই এলাকার পাড়া-প্রতিবেশী থেকে কৃষ্ণনগরবাসীর মধ্যে উঁকি দিচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে, উত্তর চব্বিশ পরগণা থেকে আসা একসময়ের সহপাঠী কিভাবে জানতে পারলো দুপুর ২ টো থেকে আড়াইটে-এই সময়টায় বাড়ির দোতলায় মা বাবা ভাই নেই। অথাৎ মল্লিকবাড়ির থাকার স্থানে ইশা ছাড়া আর কেউ নেই। তবে কি সর্ষের মধ্য ভূত! নাকি কোন ভাবে ইশার সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছিল! এর মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে কৃষ্ণনগর মানিকপাড়ার বাড়িতে প্রথম আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিত কুমার। তিনি তদন্ত করেন।
তবে পুলিশ সুপারের অফিস বা একাধিক প্রশাসনিক ভবন, জেলার একাধিক মুখ্য প্রশাসনিক কর্তাদের বাংলোর ৫০০ মিটারর মধ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও সহপাঠীকে গুলি করে চলে যাওয়া সম্ভব হয়েছে এই খুনের ঘটনায় নাম উঠে আসা দেবরাজ সিংয়ের, তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। ওই যুবকের বাড়ি কাঁচরাপাড়ায়। তবে আদি বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। মনে করছে তদন্তকারীরা। কিন্ত কেন একসময়ের সহপাঠীকে সে খুন করবে?
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝেই হইহই-কাণ্ড! শেষমেশ যা হল...
এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়ে তদন্তকারীরা তদন্ত করছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁচরাপাড়ায় কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে দেবরাজ সিং ও ইশা মল্লিক পড়াশুনা করতো। ইশা মল্লিকের বাড়ি কৃষ্ণনগরে হলেও তারা কাঁচরাপাড়ায় পড়াশুনা করার জন্য ভাড়া বাড়িতে থাকত। তাঁর বাবা একসময় আর্মিতে কাজ করতো। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কর্মরত। দেবরাজ সিং, ইশা মল্লিকের সঙ্গে পড়াশুনা করলেও সে বয়সে বছর পাঁচেকের বড় ছিল। দেবরাজকে স্কুল থেকে টিসিও দেওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ ও মল্লিক পরিবার সূত্রে জানাগিয়েছে, দুজনে একসঙ্গে পড়াশুনার মধ্যে বছর তিনেক আগে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ইশা মল্লিক উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে তাঁর কৃষ্ণনগরের বাড়িতে চলে আসায় দুজনের সম্পর্কে একটা টানাপোড়েন শুরু হয় বলে পুলিশের সঙ্গে পরিবারের লোকজনের অনুমান।
আর এতেই আগ্রাসী হয়ে ওঠে দেবরাজ। সোমবার দুপুরে মানিকপাড়ার বাড়ি থেকে ইশার মা কুসুমকলি মল্লিক কিছুটা দূরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে তার ছোট ছেলেকে নিয়ে আসতে যায়। সেই ফাঁকা সময় দেবরাজ সিং বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে যায়। এই সময় নিজের ঘরে স্নান সেরে ছিল ইশা। বাইরে খাবারের টেবিলে তাঁর খাবারও দেওয়া ছিল।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee:'ডাবল ইঞ্জিনের সরকার সবচেয়ে বড় চোর', বর্ধমানের সভা থেকে সুর চড়ালেন মমতা
নিখুঁত খবর ছিল অভিযুক্তের কাছে। তাই বাড়ি থেকে কুসুমকলিদেবী বের হতে সেই সময়ের মধ্যে তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে বুঝে নিতে চেয়েছিল 'হিসেব'। মিনিটখানেকের এই মূল্যবান সময়কে কাজে লাগিয়ে বাড়িতে চলে আসে দেবরাজ সিং। উপরে উঠে ঘরে ঢুকে খুব কাছ থেকে ইশাকে গুলি করা হয়। মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে ইশা। এই সময় কুসুমকলিদেবী তার ছেলেকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে গিয়ে ওই যুবকের মুখোমুখি হয়ে যায়। তাদের মধ্যে ঠেলাঠেলি হয়।
এই সময় ওই যুবক গুলিও চালায়। সেই গুলি না বের হলে কুসুমকলিদেবী তার ছেলেকে নিয়ে পাশের ঘরে ঢুকে যায়। পরে ইশার ঘরে ঢুকে দেখে মেয়ে মাটিতে পড়ে আছে। এই সময় চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। মল্লিকবাড়ির বাদিকে রাস্তা দিয়ে রেল পথ। ডানদিক দিয়ে যায় ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেক্ষেত্রে এই যুবক কোন রাস্তা দিয়ে এসেছিল? রাস্তার ধারে থাকা সিসিটিভি দেখছে তদন্তকারীরা।
তবে সম্পর্ক বা মল্লিক বাড়িতে না আসা থাকলে যে এই ধরনের অপারেশন কোন ভাবে সম্ভব নয় জানাচ্ছেন পুলিশের একটি সূত্র। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিত কুমার বলেন, দুজনে একসঙ্গে পড়াশুনা করতো। একটা সম্পর্ক পরিচিতি ছিল। তবে ওই যুবককে ১১ ক্লাসে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয় ।' এদিন মিত কুমার বলেন, 'আমরা অনেক কিছু জিনিষ সংগ্রহ করেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে।'