করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে আপামর রাজ্যবাসীকে। তা নিয়ে অবশ্য অনেকেরই হেলদোল নেই। করোনা বিধি ঘোষণার পরের দিন রাজ্যের নানা দিক থেকে যে চিত্র ভেসে উঠেছে তা মোটেই স্বস্তির নয়। বিশেষত ভোট রাজনীতির চিত্র। তাতে অবশ্য রাজনীতির কারবারিদের বড় অংশের কিছু যে যায় আসে না তাঁদের একাংশের মনোভাবেই স্পষ্ট হয়েছে।
রাজ্যে চার পুরনিগমে ভোট স্থগিত করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকারও সেই সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করেছে। রাজ্যের মানুষ লক্ষ্য করেছে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় করোনা বিধিকে কিভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনও দলই পিছিয়ে নেই। লড়াইয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে মরিয়া তাঁরা। তবে মজার বিষয় হল এই যে তাঁরা মনে করে 'জনপ্রিয়তাই' নাকি এই ভিড়ের কারণ! মানুষ নিজেরাই হাজির হয়ে গিয়েছে! মসনদে বসবে, কিন্তু ভিড়ের দায় তাঁরা নেবেন না। এরই মধ্যে আবার অধিকাংশের মুখেই নেই মাস্ক।
২২ জানুয়ারি বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচন। নির্বাচনী প্রচারের সময় যে করোনা বিধি শিকেয় উঠবে না তার গ্যারান্টি কি কেউ দিতে পারবে? এই প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। অভিজ্ঞ মহলের মতে, বিধিনিষেধ ঘোষণা করার পরও 'দায়িত্বশীল' নাগরিকের মতো রাজনৈতিক নেতাদের একটা বড় অংশ তাঁদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের। সেখানে মাস্ক না পড়লেও কারও চোখে পড়ছে না। কোনও পদক্ষেপও হয় না।
এদিকে ৭টায় শেষ ট্রেন ছাড়ার ঘোষণা করায় যে বিপত্তি ঘটেছে তার দায় কে নেবে? এর ফলে হাওড়া ও শিয়ালদা স্টেশনে জনোজোয়ারের সৃষ্টি হয়েছিল। অভিজ্ঞ মহল মনে করে, করোনা সংক্রমণ বিস্তারের জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি করার জন্যও নিশ্চয় কেউ দায়ী নয়! করোনা বিধি প্রস্তুত করার এমন পরামর্শের ফল কখনও ভালো হতে পারে না বলেই তাঁরা মনে করছেন। যদিও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সোমবারই শেষ ট্রেনের সময় রাত ১০টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- রাজ্যের চিকিৎসক মহলে করোনার থাবা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা! কী বলছেন চিকিৎসকরা
এরই পাশাপাশি এখনও নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশের মাস্ক পড়ার প্রবণতা নেই। বাজারহাটে ঘোরা-ফেরা করলে এই দৃশ্য নজরে পড়বে। এদিকে বিশেষজ্ঞরা করোনার প্রবল তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। করোনা আবহে এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে।
প্রচারের ক্ষেত্রে তখনও বিধিনিষেধ শিকেয় উঠেছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। তারপর দ্বিতীয় ঢেউ দেখেছে বাংলার মানুষ। বহু সংসার ছাড়খার হয়ে গিয়েছে করোনার ছোবলে। এবার তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্কেত শুরু হলেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনই বিধিভঙ্গের ট্রেলর দেখা গিয়েছে। বাংলার মানুষের জীবন-জীবীকা নিয়ে এমন 'খেলা' নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞজনেরা।