Fake Call: ১০১-এ ডায়াল করে কখনও মুখরোচক খাবারের অর্ডার। আবার কখনও FM-এ হিন্দি গান শোনার আবদার! এমনকী এই ডায়ালে ফোন করে আবেদন করা হচ্ছে বান্ধবীর কথা শোনার। প্রায় প্রতিদিনই ঘনঘন এমনই 'যন্ত্রণাদায়ক' ফোন পেয়ে রীতিমতো তিতিবিরক্ত মালদার ইংরেজবাজার দমকল বিভাগের অফিসার ও কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে ১০১ ডায়ালে টেলিফোন কলার আইডি (ভুয়ো ফোন নম্বর চেনার যন্ত্র) বসানো যায় কিনা সেই ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকেরা।
ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। বছরের অধিকাংশ দিনই দমকল বিভাগের ১০১ ডায়ালে ভুয়ো কলে রীতিমত সমস্যায় পড়ে যাচ্ছেন অফিসার কর্মীরা। শুধু তাই নয়, পুজোর কটা দিন ১০১ ডায়ালে শতাধিক ভুয়ো ফোন আসে। সেখানেই নাকি বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলা হয়। কখনও পাওয়ারের আবদার করা হচ্ছে। আবার কখনও গান শোনার কথা বলা হচ্ছে।
বেশ কিছু মানুষ দমকলের এই জরুরি নম্বরে রসিকতামূলক ফোন করেই অফিসার ও কর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মালদা ইংরেজবাজার দমকল আধিকারিক স্বপন কুমার দাস নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েই মানুষকে বিপদকালীন অবস্থায় যোগাযোগ করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে চলেছেন। পাশাপাশি দমকলের এই জরুরি পরিষেবা ১০১ ডায়ালে ভুয়োফোন বন্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে ইংরেজবাজার দমকল বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার দমকল বিভাগের অধীনে মালদা জেলার নটি ব্লক রয়েছে। বাকি ছয়টি ব্লক চাঁচল এবং হরিশ্চন্দ্রপুর দমকল বিভাগের অন্তর্গত রয়েছে। যদিও এবারে অধিকাংশ পুজো কমিটি কর্মকর্তারা প্রশাসন এবং দমকল বিভাগের নির্দিষ্ট নিয়মাবলী মেনেই দুর্গাপুজো সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সমস্যা দাঁড়িয়েছে ভুয়ো ফোনের নির্যাতন নিয়ে।
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: কামাল দেখাল মেট্রো! পাতালরেলের যাত্রীরা এখবর জানলে চমকে উঠবেন!
দমকল বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, এই ১০১ ডায়াল নম্বরটি ট্রোল ফি। ফলে যে কোনও মানুষ বিপদে পড়লে বা কোথাও অগ্নিসংযোগের মত দুর্ঘটনা ঘটলে ফোন করে দফতরে জানিয়ে থাকেন। কিন্তু ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে অধিকাংশ সময় এই ১০১ ডায়ালে ফোন করে অযৌক্তিক কথাবার্তা বলা হচ্ছে। কখনও ফোন করে শিশুর আওয়াজ, মাকে দেখার জন্য কান্নাকাটি করছে। আবার কখনও ফোন করে পিৎজা অথবা মুখরোচক খাবারের অর্ডার দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তো FM মনে করে গান শোনার অনুরোধ জানাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- Indian Railway: বাংলার বুকে নতুন ইতিহাস রেলের! পুজোর মরশুমে যাত্রী-পরিষেবায় 'সেরার সেরা' রেকর্ড
প্রতিটি মুহূর্তে এমন ফোন আসায় সংশ্লিষ্ট দফতরের অফিসার ও কর্মীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। কিছুদিন আগেই একটি ভুয়ো ফোন থেকে ১০১ নম্বরে ডায়াল করে বলা হয় মালদার জেলা প্রশাসনিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তড়িঘড়ি দুটো দমকলের ইঞ্জিন সমেত অফিসারেরা ছুটে যান। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় সম্পূর্ণভাবে ভুয়ো ফোন করা হয়েছিল। বিপদকালীন একটি জরুরি পরিষেবামূলক দফতরে যদি এভাবেই ফোনে হয়রানি করা হয়, তাহলে সমস্যা বাড়বে। তাই ভুয়ো ফোন নম্বর ধরার ক্ষেত্রেই টেলিফোন কলার আইডি বসানো যায় কিনা সে ব্যাপারেও ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।
মালদার ইংরেজবাজার দমকল বিভাগের আধিকারিক স্বপন কুমার দাস বলেন, "১০১ ডায়াল সম্পূর্ণ টোল ফ্রি নম্বর। বিপদকালীন ক্ষেত্রে মূলত মানুষ দমকলে ফোন করে থাকে। কিন্তু এখন ভুয়ো ফোনে যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছে। পুজোর মধ্যে অফিসার ও কর্মীরা সবরকমভাবে পরিষেবা দিয়েছেন। কিন্তু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যেভাবে এই ১০১ ডায়য়ালে একের পর এক ভুয়ো ফোন আসছে, তাতে সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। পুরো বিষয়টি আমরা জেলা পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়েছি। পাশাপাশি এই ভুয়ো নম্বর ধরার ক্ষেত্রে বিকল্প কি ব্যবস্থা করা যায় সেব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।"