Damodar river lorries stuck: জলাধার থেকে জল ছাড়ার খবর থাকা সত্ত্বেও লাগাম পড়েনি দামোদর থেকে বালি তোলায়। তার মাশুল গুনতে হল একধিক বালি বোঝাই লরিকে। জলে ভেসে দামোদরের হাবু ডুবে খেয়ে বিকল হল প্রায় ১৫ টি বালি বোঝাই লরি। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের গলসির গোহগ্রাম এলাকায়। লরিগুলিকে উদ্ধারের জোরদার তৎপরতা শুরু হয়েছে।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দুদিন ধরে লাগাতার জল ছাড়া হচ্ছে। জলধার থেকে যে জল ছাড়া হবে তা ডিভিসি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জল থেকে আগাম ঘোষণা করা হয়েছিল। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে বুধবার জল ছাড়া হয় ৪০ হাজার কিউসেক। তারই মধ্যে নিম্ন দামোদর অববাহিকায় দু’দিন ধরে বৃষ্টিপাতও হয়ে চলেছে। তার কারণে বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎতই দামোদর নদে জলের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাতেই ভয়ানক বিপত্তি ঘটে যায়। গোহগ্রাম এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল শেখ ও কালীপদ ঘোষ এদিন বলেন বলেন, “১৫ টি বালি বোঝাই লরি এলাকায় দামোদর নদের জলে আটকে পড়ে।তার উপর বৃহস্পতিবার বেলা বাড়তে নদের জল আরও হু হু করে বাড়তে শুরু হয়।বিপদ বুঝে লরি গুলি নদী থেকে তোলার জন্য
তৎপরতা শুরু করে দেয় চালকরা । ওই সময়েই সামনে থাকা দুটি লরি বিকল হয়ে যাওয়ায় লরিগুলি নদ থেকে পাড়ে তোলা আর সম্ভব হয় না। জেসিবি মেশিন দিয়ে বিকল হওয়া দু'টি লরিকে জল থেকে তোলার চেষ্টা করা হলেও তাতে লাভের লাভ কিছু হয় না।
আষাঢ় মাস পড়তেই বৃষ্টিপাতের বহর বেড়েছে। বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম থাকলেও বেলার পর বৃষ্টির পরিমাণ দামোদরের উচ্চ অববাহিকায় বেড়েছে। বৃহস্পতিবার মাইথনের বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৫৯.৮০ মিলিমিটার, পাঞ্চেত ৩৬.৬০ মিলিমিটার, তেনুঘাট ৪৩.০০ তিলাইয়া ৫৬.৪০ মিলিমিটার, আসানসোল ৯.৪০ মিলিমিটার, দুর্গাপুর ২৬.০০ মিলিমিটার। পাঞ্চেত এবং মাইথনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় ওই দুই জলাধার থেকে জল কম ছাড়া হচ্ছে। তাই দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ কমেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার সময় দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ৩৫২০০ কিউসেক। কিন্তু বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ড পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। তাই হয়তো শুক্রবার পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার থেকে জল জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
গোহগ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বর্ষাকালীন সময়ে দামোদরে লরি নামিয়ে বালি লোড করাটা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা এদিন ভালভাবেই বুঝে গিয়েছে লরি চালকরা। জল না কমা পর্যন্ত লরিগুলি দামোদর থেকে তোলাও দুঃসাধ্যের বিষয়।