সেতু বিভ্রাট যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রাজ্যের। কলকাতার পোস্তা, মাঝেরহাট, উল্টোডাঙা উড়ালপুলের পর এবার বড়সড় ফাটল দেখা দিল বীরভূমের ইলামবাজার সেতুতে। উল্লেখ্য, বীরভূমের সঙ্গে বর্ধমান এবং উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম অজয় নদের উপরের এই সেতু। শুধু তাই নয়, কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক পথে যোগাযোগের অন্যতম উপায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দাঁড়িয়ে থাকা এই সেতু। কিন্তু এহেন গুরুত্বপূর্ণ সেতুর এই জরাজীর্ণ অবস্থায় ভীতসন্ত্রস্ত স্থানীয় মানুষ।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে জল সংরক্ষণে মুখ্যমন্ত্রীর জল প্রকল্পের ছায়া
১৯৬২ সালে কংগ্রেস সরকারের আমলে তৈরি হয় এই ইলামবাজার সেতু। এলাকাবাসীর অবশ্য বক্তব্য, প্রায় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেই তৈরি হয়েছিল এই সেতু। সেতুর দুই প্রান্তে ভারী গাড়ি পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই জরাজীর্ণ সেতুর উপর দিয়েই অব্যাহত যান চলাচল। দিনে প্রায় কয়েকশো মালবাহী ট্রাক থেকে শুরু করে ছোট গাড়ি যাতায়াত করে ফাটল ধরা সেতুর উপর দিয়ে। এলাকাবাসীদের দাবি, দিনের পর দিন ভারী যান চলাচলের কারণে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে সেতু।
অন্যদিকে, বিকল্প রাস্তা হিসেবে অজয় নদীর ফেরিঘাট থাকলেও বর্ষার জলে কার্যত তা নদীগর্ভেই তলিয়ে যায়। ফেরিঘাটের ভগ্ন দশার কারণে কোনো যানবাহনও পারাপার করতে পারে না। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়দেবের একটি সভামঞ্চ থেকে স্থায়ী ব্রিজের শিল্যানাস করেছিলেন। রাজ্য প্রশাসনের তরফে সেই কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেলেও, এখনও একমাত্র ভরসা এই ইলামবাজারের ব্রিজই।
আরও পড়ুন- পানীয় জলে মিশছে নর্দমার জল, সংকটে অণ্ডালবাসী
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুতে ফাটল দেখা দিলেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে, সেতুর নীচে বয়ে যাওয়া অজয় নদীর থেকে বালি চুরির অভিযোগ উঠছে স্থানীয় বালি মাফিয়ার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে যে হারে বালি তোলা হচ্ছে নদী থেকে, তার প্রভাব পড়ছে ইলামবাজার সেতুর উপরেও। স্থানীয়দের আশঙ্কা, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্রিজের উপর ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না করা হলে যে কোনো সময়ে ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। যার জেরে কার্যত বন্ধ হয়ে যেতে পারে উত্তরবঙ্গ-কলকাতা সহ একাধিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। সুতরাং ব্রিজের এই কঙ্কালসার অবস্থা দেখেও কেন কোনও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না প্রশাসন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বীরভূমবাসী।