TMC ON DELHI POLICE: বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি হেনস্থা নিয়ে যখন তৃণমূল কংগ্রেস গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেছে, ঠিক তখনই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষার পরিচিতিকে খর্ব করে ভারতীয় নাগরিকদের ‘বহিরাগত’ হিসাবে চিহ্নিত করার ভয়ঙ্কর অভিযোগে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও দিল্লি পুলিশকে এনিয়ে নিশানা করেছে তৃণমূল।
রবিবার এক্স হ্যাণ্ডেলে এক বার্তায় তৃণমূলের তরফে লেখা হয়, "বাংলাভাষীদের প্রতি বিজেপির ঘৃণার কোনও সীমা নেই কি? একের পর এক বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী শ্রমিকদের হয়রানি ও আটকের ঘটনা ঘটছে। এবার দিল্লি পুলিশ সরকারি নথিতে বাংলাকে 'বাংলাদেশি ভাষা' বলে চিহ্নিত করে সব সীমা অতিক্রম করল।" তৃণমূলের দাবি, এটি কোনও সাধারণ প্রশাসনিক ‘ভুল’ নয়, বরং একটি “সুনির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র”, যাতে সংবিধান স্বীকৃত একটি ভাষাকে ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করে দেশের কোটি কোটি বাংলাভাষী নাগরিককে ‘বহিরাগত’ হিসাবে তুলে ধরা যায়।
শাসক দলের তরফে আরও বলা হয়েছে “বাংলা ভাষা সংবিধানব স্বীকৃত ভাষা, যেটি ভারতের ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি। সারা বিশ্বে প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলায় কথা বলেন। এই ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা শুধু ভাষার অপমান নয়, বরং কোটি কোটি ভারতীয় নাগরিকের ভারতীয় পরিচিতি মুছে দেওয়ার চেষ্টা।” এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিপ্তে দিল্লি পুলিশকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
উল্লেখ্য, মাত্র কয়েকদিন আগেই রাজধানী দিল্লিতে মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারকে চূড়ান্ত হেনস্থার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরবর্তী সময়ে দিল্লি পুলিশ মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে। এরপরই মালদার সেই পরিবারকে নিয়ে পালটা সাংবাদিক বৈঠকে করে তৃণমূল। সাংবাদিক সম্মেলনে ওই পরিবারের সাজনু পারভিন দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তোলেন। মালদার সেই পরিবারের সদস্য সাজনু পারভিনের অভিযোগ, দিল্লিতে থাকাকালীন তাদের বাড়িতে চারজন এসেছিলেন। তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। তার পরিবারকে বাংলাদেশি বলে তকমা দেওয়া হয়েছিল বলে তার দাবি। ওই মহিলা বলেছেন, "আমাকে বলা হয় জয় শ্রীরাম বলতে। আমি বলেছি আমি মুসলিম, ওটা বলতে পারব না। তারপর আমার থেকে ২৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়।"
এদিকে আজকের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশেষ করে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে 'বাঙালি অস্মিতা'কে শান দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে 'বাঙালি বিদ্বেষ' ইস্যুতে সরব শাসক তৃণমূল। 'বাঙালি আবেগ'কে ছুঁয়ে ভোট বৈতরণী পার করতে মরিয়া তৃণমূল।সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসকে আরও কিছুটা বেশি মাইলেজ দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।