RG Kar Case: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে প্রিন্সিপ্যালকে সরানোর দাবি জোরলো হচ্ছে। ইতিমধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এই হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠকে। তাঁকে বদলি করা হয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। কী এমন বড় বিষয় যে প্রিন্সিপ্যাল ডা. সন্দীপ ঘোষকে এমন একটা ভয়ঙ্কর অপরাধের ঘটনার পরেও তাঁর পদে বসিয়ে রাখা হয়েছে। প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসক সংগঠনের কর্তারা। পাশাপাশি আরজি করের চিকিৎসক খুন সংক্রান্ত একটা টেলিফোনিক অডিও ভাইরাল হয়েছে, সেটিকে তদন্তের আওতায় আনার দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক ড. মানস গুমটা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "প্রথমত কর্মরত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করার দাবি তো আছেই। তাছাড়া আমদের ও জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, আরজি করের প্রিন্সিপ্যালকে দিয়ে কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে না। বিগত দু'বছর বছর ধরে ওনার বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ উঠেছে। ওনার বিরুদ্ধে কতরকমের অভিযোগ তাঁর সীমা নেই। প্রিন্সিপ্যালের ট্রান্সফার নিয়ে নাটকের চূড়ান্ত হয়েছে। কী এমন বিশেষ ব্যক্তি ওনাকে ওই পদে রাখতেই হবে?"
সাধারণত কোনও বড় ধরনের ঘটনা ঘটলে তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভা নানা ক্ষেত্রে এমন নজির আছে। অথচ এখানে বহাল তবিয়তে আছেন প্রিন্সিপাল ড. সন্দীপ ঘোষ। মানস গুমটার বক্তব্য, "এত বড় একটা অপরাধ হওয়া সত্বেও অ্যাডমিনিস্ট্রটরকে বসিয়ে রাখবো, সেটা হয় না। ওনাকে রেখেই তদন্ত করতে হবে। সচরাচর এমন দেখি না। একটা বাড়ি ভেঙে পড়লে ইঞ্জিনিয়ারকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সুপারকে সরানো লোক দেখানো, এটা আমার মনে হয়েছে।"
প্রিন্সিপালকে সরানোর দাবি তুলেছে সার্ভিস ডক্টরস ফোরামও। দীর্ঘ দিন ধরে এই হাসপাতালে অরাজকতা সৃষ্টি করে রখেছে। তার ফলেই এই ঘটনা। এর জন্য সম্পূর্ণ প্রিন্সিপালকে দায়ী করেছেন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক। ড. সজল বিশ্বাসের দাবি, "এই অধ্যক্ষ থাকাকালীন কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে না। তাহলে তাঁর। প্রভাব সেখানে খাটবে। অবিলম্বে আরজি করের প্রিন্সিপালকে সরিয়ে দেওয়ার দরকার ছিল। শুধু তাই নয়, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সুপারকে সিরিয়ে দিয়েছে ভাল কথা। কিন্তু প্রিন্সিপালকে আগে সরাতে হবে।"
আরও পড়ুন- Junior Doctor Protests: জরুরি বিভাগেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি, আর জি করে অচলাবস্থা অব্যাহত
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ আরজি কর সংক্রান্ত একটি টেলিফোন কলের কথোপথনের অডিও ক্লিপ ইউটিউবে পোস্ট করে সেটি তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। অডিওটির সংক্ষিপ্তসার এমন-- "আরজি করের আন্দোলনটা মেকি। প্রিন্সিপাল ও তাঁর সাগরেদরা চালাচ্ছে। তাছাড়া পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে দিদির যা ইনজুরি আছে তাতে একজনের কাজ তো নয়। এটা ইনটার্নের কাজ। পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও উচ্চপদস্থ। সে আমার ব্যাচমেট। তাঁকে সেভগার্ড করার জন্য এই মেকি আন্দোলন করছে।"
আরও পড়ুন- Bangladesh Crisis: ৪ দিন ধরে মুর্শিদাবাদের গ্রামে লুকিয়ে ছাত্রলিগ নেতা, জানতে পেরে BSF যা করল…
যদিও এই অডিও ক্লিপের সত্যতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা যাচাই করেনি। ঘটনাক্রম দেখে আরও অনেক কথা বলা হয়েছে এই অডিওতে। দুটি সংগঠনের কর্তারাই মনে করে আরজি করের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা আছে। "বাকিরা এতটাই প্রভাবশালী তাঁদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।" বলেছেন ড. সজল বিশ্বাস।