ইলিশের পর এবার দামোদরে মিললো ডলফিন। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের সাদিপুর এলাকার জেলেদের পাতা জালে বৃহস্পতিবার আটকে পড়ে একটি ডলফিন। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু
মানুষ ডলফিন দেখার জন্য সাদিপুরে দামোদর নদের পাড়ে ভিড় জমান।তবে জেলে প্রশান্ত পাকড়ে ও তাঁর সঙ্গীরা ডলফিনটির কোন ক্ষতি হতে দেন নি। তাঁরা জাল কেটে ডলফিনটিকে উদ্ধার করে মাঝ নদীতে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেন।
পেশায় জেলে প্রশান্ত পাকড়ে সাদিপুরের বাসিন্দা। তিন জানান,“অন্য দিনের মতো বুধবার রাতেও তিনি নৌকা নিয়ে দামোদর নদে জাল পাতেন।ওই জাল ’ফাঁস জাল’ নামেই স্থানীয় ভাবে পরিচিত।
আরও পড়ুন- বাঙালি হেনস্থা ইস্যুতে আবারও BJP-কে তুলোধোনা মমতার, NRC নিয়ে তুললেন মারাত্মক অভিযোগ
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা মিলে নদী থেকে জাল টানা শুরু করতেই জাল টেনে তোলা একপ্রকার দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। সেই কারণে
প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন জালে হয়তো বড় কোন মাছ পড়েছে। তবে জাল অনেকটা টেনে নেওয়ার পর তাঁদের চোখ কপালে ওঠে। প্রশান্ত পাকড়ে বলেন , জাল কাছ টেনে আনতেই তাঁরা দেখেন প্রায় ৫০- ৫৫ কেজি ওজনের প্রকাণ্ড একটা ডলফিন তাঁর জালে ধরা পড়েছে। এরপর জাল কেটে ডলফিনটিকে উদ্ধার করে মাঝ নদীতে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেন। উৎপল ঘোষ,শেখ আমিরুলরা জানান ,’দামোদর নদে তারা কখনো ডলফিন দেখেন নি।এই প্রথম ডলফিন আটকে পড়লো জালে।’
জামালপুরের বাসিন্দাদের অনেকে বলেন ,এবছর বর্ষায় ভরা জামালপুরের সাদিপুরের দামোদর নদে জেলের পাতা জালে ডলফিন ধরা পড়লো। আর গত বছরের ৪ অক্টোবর জামালপুরেই জেলে
তপন বিশ্বাসের জালে ধরা পড়েছিল রুপোলি শস্য ইলিশ । জামপুরের মাছের আড়তে ওই ইলিশ বিক্রির জন্য ডাকা হয় নিলাম। চড়া দামে ওই ইলিশ মাছটি বিক্রি হয়েছিল।ইলিশ ধরা পড়ার পর গুঞ্জন উঠে ডিভিসি-র ছাড়া জলের বিপরীতে আসতে আসতে মোহনা থেকে কিছু ইলিশ জামালপুরের দামোদরে এসে পড়েছে।
ডলফিন দামোদরে কি করে চলে এল তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে জামালপুরে।এই বিষয়ে কাটোয়া নিবাসী শুশুক বিশেষজ্ঞ গণেশ চৌধুরী যদিও জানান,জামালপুরের সাদিপুরে যে ডলফিনটি উদ্ধার হয়েছে সেটিকে বলা হয় গাঙ্গেয় ডলফিন। শুশুক-ও বলা হয় ।
আরও পড়ুন- বাংলায় কথা বলতেই বেধড়ক মার পুলিশের, হাড়হিম অভিজ্ঞতা শোনালেন বাবা-ছেলে
এদের প্রধান খাবার হল মাছ।গঙ্গায় মাছ কমে যাওয়ায় এরা মাছের খোঁজে এখন বিভিন্ন খাড়ি বা নদীতে ঢুকে পড়ছে।অজয়,ভাগীরথী নদীর কাটোয়ায় এলাকায় ৪৫ থেকে ৪৮ টা শুশুক আছে।মার্চ থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত এদের বাচ্চা হয়।
২০০৪ সালে আমাদের রাজ্যে শুশুকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ হাজার।কিন্তু বর্তমানে রাজ্যে আছে ৭০০ মতো শুশুক আছে। প্রজননের সময় প্রয়োজনীয় খাবার মাছের সন্ধান মেলে বলে কাটোয়ার কল্যাণপুরে বাবলা ও ভাগীরথী সঙ্গমস্থলে শুশুকরা ভীড় করে। এছাড়াও প্রজননের সময় অজয়-ভাগীরথীর সঙ্গমস্থলের উদ্ধারণপুর ঘাটেও প্রচুর সংখ্যক শুশুক জমে।