Durga Puja 2024: এখানে সন্ধে নামলেই হানা দেয় হিংস্র জন্তু-জানোয়ার। গ্রামের একপাশে জঙ্গল আরেক পাশে চা-বাগান। এরই মাঝে বনবস্তি। সেখানেই এবার দুর্গাপুজোর আয়োজন। ডুয়ার্সের তোতাপাড়া বনবস্তিতে হাতির হামলা প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। সন্ধে নামলেই চা-বাগানের রাস্তায় ঘোরাফেরা করে চিতাবাঘ। আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকেন গ্রামবাসীরা।
এই কারণেই শহরের পুজো দেখার ইচ্ছা থাকলেও উপায় হয় না তাঁদের। তাই তাঁরা নিজেদের বনবস্তিতে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ডুয়ার্সের মরাঘাট রেঞ্জের অন্তর্গত তোতাপাড়া জঙ্গলের বুক চিরে গিয়েছে গ্রামীন রাস্তা। প্রায় ৮ কিমি জঙ্গলের পথ পেরিয়ে তোতাপাড়া বনবস্তিতে যেতে হয়। সেখান দেবী পূজিত হন বনদুর্গা হিসাবে।
অনেক আগে থেকেই তোতাপাড়া বস্তিতে পুজো এবং মেলা দুটোই আয়োজন হয়। কিন্তু টাকার অভাবে সেই জৌলুস এখন আর নেই।
আর্থিক সমস্যা থাকলেও তোতাপাড়া বনবস্তির বাসিন্দারা বেঁচে থাকার তাগিদে দিনের আলোয় মেহনত করেন আর সন্ধে হলেই বন্য হাতি, জন্তুর হামলার আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকেন। তার পরেও না পাওয়ার মধ্যে পাওয়া দুর্গাপুজোর কটা দিনে আনন্দ-উচ্ছ্বাস।
প্রায় ১৪ বছর আগে তৎকালীন বনা আধিকারিক কল্যাণ দাসের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই বনদুর্গার পুজো। কিন্তু শহরে পুজো দেখতে যাওয়ার উপায় নেই। বনবস্তি থেকে গয়েরকাটা শহরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিমি। অন্যদিকে, ধূপগুড়ি শহরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিমি। তার মধ্যে জঙ্গলের রাস্তা ধরেই যেতে হয়। ডুয়ার্সের গয়েরকাটা থেকে নাথুয়াঘাট যাওয়ার রাস্তায় খট্টিমারি বিট অফিস রয়েছে। সেখান থেকে ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে কাঁচা রাস্তা ধরে গেলে ৬ কিমি দূরে তোতাপাড়া বিট অফিস। সেখানেই রয়েছে বন দফতরের কমিউনিটি হল।
আরও পড়ুন মন্ডপজুড়ে বৃষ্টির 'টাপুর টুপুর' শব্দ, আলোআধারির খেলা, 'সেরার সেরা'র থিমে কলকাতার কোন পুজো?
এলাকার বাসিন্দা রিমা ওঁরাও বলেছেন, 'পুজোর সময় ধান পাকে বলে হাতির আনাগোনা অনেকটাই বেড়ে যায়। চা-বাগানের নালায় থাকে চিতাবাঘ। সন্ধে নামলেই তারা শিকারে বের হয়। তাই পুজোতে দিনের বেলাতেই আনন্দ। রাতে বাইরে থাকা নিরাপদ নয়।'
আরও পড়ুন কোথাও পোড়ামাটির কাজ, কোথাও ফিরে দেখা শৈশব, দারুণ চমক মালদার পুজোয়
মোরাঘাটের নয়া রেঞ্জ অফিসার চন্দন ভট্টাচার্য বলেছেন, 'পুজো প্রস্তুতি নিয়ে তোতাপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শুধু তোতাপাড়া নয়, জঙ্গলের রাভা বস্তি, খুংলুং বস্তির বাসিন্দারাও শামিল হন পুজোয়। মণ্ডপেই থাকেন তাঁরা। নাম-গান-উৎসবের মধ্যেই দুবেলা ভোগ খাওয়া হয়। মন্দিরের পাশেই বসে ছোট মেলা।'