Teacher's Day: শিক্ষকের আকালে স্কুলে তালা পড়ার জোগাড় হয়! পড়ুয়াদের স্বার্থেই 'আপোষহীন সংগ্রাম' ছিয়াত্তরের 'তরুণের'

Teacher's Day 2025: অদম্য ইচ্ছাশক্তিতেই এই ৭৬ বছর বয়সেও নিয়ম করে রোজ স্কুলে গিয়ে বাচ্চা পড়াচ্ছেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর প্রয়াসকে কুর্ণিশ অভিভাবকদের।

Teacher's Day 2025: অদম্য ইচ্ছাশক্তিতেই এই ৭৬ বছর বয়সেও নিয়ম করে রোজ স্কুলে গিয়ে বাচ্চা পড়াচ্ছেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর প্রয়াসকে কুর্ণিশ অভিভাবকদের।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
76-year-old teacher,  retired teacher  ,still teaching,  Jamalpur block,  Basantapur Junior High School,  West Bengal,  teacher shortage,  volunteer teaching,  underprivileged children,  free education  ,keeping school open,  glimmer of hope,Teacher's Day 2025,Sarvepalli Radhakrishnan,সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন,শিক্ষক দিবস ২০২৫, ৭৬ বছর বয়সী শিক্ষক  ,অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক,  এখনও পড়াচ্ছেন  ,জামালপুর ব্লক,  বসন্তপুর জুনিয়র হাই স্কুল  ,পশ্চিমবঙ্গ,  শিক্ষক সংকট,  স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক,  সুবিধাবঞ্চিত শিশু,  বিনামূল্যে শিক্ষা  ,স্কুল চালিয়ে রাখা  ,আলোর সঞ্চার (আশার ঝিলিক)

Teacher's Day 2025: স্কুলের ক্লাসঘরে শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ।

Teacher's Day 2025: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সামনে আসার পর থেকেই বাংলার স্কুলে-স্কুলে দেখা দিয়েছে শিক্ষকের আকাল। তারই জেরে বঙ্গের অনেক শিক্ষাঙ্গণই এখন যেমন ধুঁকছে, তেমনই অনেক শিক্ষাঙ্গণে তালাও পড়ে গিয়েছে। তারই মধ্যে ব্যতিক্রম পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বসন্তপুর গ্রামের মহতী শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ। ৭৬ বছর বয়সেও চিরবসন্তের প্রতীক হয়ে লড়াই জিইয়ে রেখে তিনি শিক্ষকের আকালে জেরবার বসন্তপুর জুনিয়র হাই স্কুল পঠন-পাঠন সচল রাখার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisment

সেই লড়াইয়ে তিনি পাশে পেয়েছেন এলাকারই পাঁচ উচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীকে। জামালপুর ব্লকের পাড়াতল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রত্যন্ত গ্রাম বসন্তপুর ।দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ এই গ্রামেরই বাসিন্দা। তিনি জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন।শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি নিজের গ্রামে একটি স্কুল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। তার জন্য ২০১০ সাল থেকে শুরু হয় তাঁর লড়াই। সেই লড়াইয়ে তিনি এলাকার মানুষজনের প্রভূত  সহযোগিতা পান। 

শেষমেষ প্রশাসনিক উদ্যোগে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে বসন্তপুর জুনিয়র হাই স্কুলের অনুমোদন মেলে। জমি বরাদ্দ থেকে শুরু করে স্কুলঘর নির্মাণ, গেস্ট টিচার নিয়োগ—সব মিলিয়ে এগোতে থাকে স্কুলের পথচলা। বর্তমানে স্কুলটিতে ১৬০ জন পড়ুয়া রয়েছে। সঙ্গে মিড-ডে মিল রান্নার ঘর ও ছ'টি কক্ষও আছে।

Advertisment

আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: পুজোর মুখেও আবহাওয়া নিয়ে স্বস্তির খবর নেই! আজও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। ২০১৮ সালে তিনজন স্থায়ী শিক্ষক অনুমোদিত হলেও বছরের পর বছর পেরিয়ে যায়, তবুও কেউ যোগ দেননি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অবশেষে একজন সরকারি শিক্ষিকা যোগ দেন। বর্তমানে মাত্র একজন স্থায়ী শিক্ষিকা ও একজন অতিথি শিক্ষক নিয়ে চলছে পুরো স্কুল। ফলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রম সামলানো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন- Mithun Chakraborty: আদালতে ১০০ কোটির মানহানি মামলা, দাপুটে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে আসরে বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন

এই অবস্থায় স্কুলে তালা পড়া আটকাতে এগিয়ে এসেছেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ নিজেই।তাঁর পাশে দাঁড়ায়  এলাকার পাঁচজন উচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতী সুমন মাঝি,স্বাগতা ঘোষ,শিল্পা সাহা, সহেলি মণ্ডল এবং বিশ্বজিৎ মিত্রকে। নিঃস্বার্থে এই শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা দ্বিজেনবাবুর পাশে স্কুলটি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে বছরের পর বছর স্কুলটিতে পড়াচ্ছেন। তাঁদের এই নিঃস্বার্থ উদ্যোগকে এলাকাবাসী কুর্ণিশ জানান ঠিকই। কিন্তু স্থায়ী শিক্ষক না পেলে আর কতদিন এভাবে স্কুল চালানো সম্ভব? সেই প্রশ্নের উত্তর 
আজও অধরাই রয়ে আছে।

আরও পড়ুন- Teacher’s Day: এগিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন, 'শিক্ষক দিবস' উপলক্ষে ৭৩ শিক্ষককে 'শিক্ষারত্ন' পুরস্কার

বিষয়টি নিয়ে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, "নিঃস্বার্থে পাঁচ উচ্চ শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা পাশে দাঁড়িয়েছে বলেই বসন্তপুর জুনিয়র হাই স্কুলে তালা পড়া আটকানো গিয়েছে। তো একজন অতিথি শিক্ষক নিয়ে স্কুল চালানো যেত না। ২০২৪ সালে সরকারী
ভাবে একজন শিক্ষিকা পাওয়া গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতে শিক্ষকের ঘাটতি পূরণ হয়নি। সরকার যদি দ্রুত আরও স্থায়ী শিক্ষক না পাঠায়, তাহলে এই স্কুলের ভবিষ্যৎ কিন্তু অন্ধকার!” স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবক সুব্রত ঘোষের আক্ষেপ, “ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন থেকে আজ অবধি দ্বিজেন্দ্রনাথ বাবুকে কঠিন দায়িত্ব বহন করে যেতে হচ্ছে। বয়সের ভারে তিনি আর পেরে না উঠলে আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ কী হবে?” 

Bengali News Today Purba Bardhaman Teachers Day