New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/22/7ycjQavRuh639qQlE7cO.jpg)
ব্যবসা জমে ক্ষীর! বিফলে গেল চোখ কপালে তোলা ডিগ্রি, জালে বাবা-ছেলে Photograph: (নিজস্ব চিত্র)
Fake Doctors Arrested: ডাক্তারি পাস তো দূরের কথা! মেডিকেল কলেজের চৌকাঠ পেরোননি বাবা, ছেলের কেউ’ই। কিন্তু তাতে কী,বর্ধমানের বুকে রীতিমত ক্লিনিক খুলে এমবিবিএস (MBBS)ডিগ্রি ঝুলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছিলেন চিকিৎসা। বেশ জমে উঠেছিল ব্যবসা।
ব্যবসা জমে ক্ষীর! বিফলে গেল চোখ কপালে তোলা ডিগ্রি, জালে বাবা-ছেলে Photograph: (নিজস্ব চিত্র)
Fake Doctors Arrested: ডাক্তারি পাস তো দূরের কথা! মেডিকেল কলেজের চৌকাঠ পেরোননি বাবা, ছেলের কেউ’ই। কিন্তু তাতে কী,বর্ধমানের বুকে রীতিমত ক্লিনিক খুলে এমবিবিএস (MBBS)ডিগ্রি ঝুলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছিলেন চিকিৎসা। বেশ জমে উঠেছিল ব্যবসা। ছোটখাটো অস্ত্রপচার থেকে শুরু যাবতীয় চিকিৎসা কিছুই তারা বাদ দিচ্ছিলেন না। তবে অবশ্য শেষ রক্ষা হয় নি। পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ তদন্তে নামতেই ফাঁস হয় বাবা অশোক কুমার প্রসাদ ও ছেলে দীপেশ কুমার দীপকের ছলচাতুরি। পুলিশ বাবা ও ছেলে দু’জনকেই গ্রেপ্তার করেছে। শনিবারই তাদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক বৃদ্ধ অশোক প্রসাদের জামিন মঞ্জুর করলেও তাঁর ছেলে দীপেশ কে ৩ দিনের পুলিশি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায় ক্লিনিক খুলে 'ডাক্তারি ব্যবসা' চালাচ্ছিল অশোক কুমার প্রসাদ ও তাঁর ছেলে দীপেশ কুমার দীপক। যথাযথ নথিপত্র ছাড়া ক্লিনিক চালু করে সেখানেই ডাক্তার সেজে বসে তারা রোগী দেখতেন। চলত ছোটখাটো অস্ত্রোপচার। চিকিৎসা করার জন্য ন্যূনতম ডিগ্রী না থাকার সত্ত্বেও বাবা ও ছেলের বেপরোয়া ভাবে ডাক্তারি ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগ পয়েই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর বিষয়টি পুলিশকে জানান ।
শুক্রবার পুলিশ ওই ক্লিনিকে গিয়ে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া বাবা ও ছেলের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্য এবং ক্লিনিকের নথিপত্র দেখতে চায় । কোন নথি দেখাতে না পারায় পুলিশ দুই ভুয়ো ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করে । পুলিশের দাবি অনুযায়ী লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায়
একটি তিনতলা বাড়ির নিচে বেসমেন্টে ক্লিনিকটির হদিশ মিলেছে। সেখানে চিকিৎসক হিসেবে বাবা অশোক কুমার প্রসাদ ও তাঁর ছেলে দীপেশ কুমার দীপকের নাম সংক্ষিপ্ত ভাবে এ কে প্রসাদ ও ডি কে দীপক লেখা রয়েছে। দু’জনের নামের আগেই ডি.আর অর্থাৎ, ডাক্তার বলে লেখা রয়েছে। বাড়িটি তাদেরই বলে জানিযয়েছে পুলিশ। ক্লিনিকের উল্টোদিকেই রয়েছে একটি ওষুধের দোকান। যেটি পরিবারের ছোট ছেলে চালান। ডাক্তারি ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও ডাক্তারি করার দায়ে দীপেশ আগেও গ্রেপ্তার হয়েছিল বলে পুলিশ জেনেছে।
নিজেদেরকে ডাক্তার হিসাবে জাহির করতে বাবা ও ছেলে কোন খামতি রাখেন নি।পুলিশ ও স্থানীয়দের কথায় জানা গিয়েছে, ক্লিনিকে এ কে প্রসাদ এর নামের পাশে জেনারেল ফিজিসিয়ান হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।আর ডি কে দীপকের নামের পাশে সরাসরি এমবিবিএস বলে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও অল্টারনেটিভ মেডিসিনে এম ডি হিসেবে তার নামের পাশে উল্লেখ রয়েছে। এমনকি ভিসিটিং কার্ডেও নামের পাশে এমবিবিএস (MBBS)চিকিৎসক বলে লেখা রয়েছে। ডিগ্রীর বিষয়ে এ কে প্রসাদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন," আমি ছোট থেকে বিহারে পড়াশোনা করেছি। সেখানেই কলেজে পড়াশোনা শেষ করে সিএমএস, সিডিপি বা কমিউনিটি মেডিকেল সার্ভিস সংক্রান্ত ডিগ্রী অর্জন করি। কিন্তু, এইসব ডিগ্রী নিয়ে আদৌ মানুষের চিকিৎসা করা যায় কীনা সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
বাবা অশোক কুমার প্রসাদ জানান," তিনি আগে একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সহকারীর কাজ করতেন। এরপরই তার ছেলে বাড়ির নিচে ক্লিনিক চালু করে । তারপর থেকেই তিনি ছেলের ক্লিনিকে কাজ করা শুরু করেন বলে জানান।তাঁর নামের পাশে চিকিৎসক লেখা থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি রোগী দেখার কথা অস্বীকার করেন। তবে নামের পাশে চিকিৎসক লেখার কারণ নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটেন । স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিবারটি চিকিৎসক সেজে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিল ।