Advertisment

Flood affected people: বন্যা কেড়েছে পুজোর আনন্দ, সব খুইয়ে এবার মা দুগ্গার কাছে ওঁদের একটাই আর্তি...

Durga Puja 2024-Jamalpur Flood situation: একটানা বৃষ্টির জেরে DVC-র বাঁধগুলি থেকে নাগাড়ে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হয়। তারই জেরে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যুতে কড়া সমালোচনা করেন কেন্দ্রের।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
আপডেট করা হয়েছে
New Update
Flood affected people,Purba Bardhaman,jamalpur,durga puja 2024, east burdwan, west bengal flood 2024,দুর্গাপুজো ২০২৪, পূর্ব বর্ধমান, জামালপুর, বন্যা পরিস্থিতি

বন্যার জেরে ভিটে হারানো মানুষজন মা দুর্গার কাছে কী চাইছেন জানেন?

Flood affected people: পুজোর সময়েও চোখের কোনে জল কেন? উত্তরে অসহায় মানুষগুলো চোখের জল মুছে বললেন, “জানেন বাবু, মা দুগ্গা আসছেন বলে আমাদের মনেও আনন্দ জেগেছিল। কিন্তু মায়ের আগমনের আগেই প্রকৃতি আমাদের মত গরিব মানুষ গুলোকে এমন চরম দুর্দশায় ফেলবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। টানা ভারী বৃষ্টির জেরে দামোদর উপচে জল ঢুকে বন্যা। তছনছ করে দেয় আমাদের একমাত্র সম্বল ছিটে বেড়া আর মাটির দেওয়ালের ঘর। প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিতে হয় বাঁধে। জল কমার পর ধার দেনা করে ঘর সারাচ্ছি। পুজোর আনন্দ আমাদের কপালে নেই!"

Advertisment

দেবীপক্ষে এটাই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের শিয়ালী ও কোরা গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন দুর্দশার বাস্তব কাহিনী। মহাপঞ্চমীর দিন চোখের জল মুছতে মুছতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তাঁরা তাঁদের জীবন দুর্দশার এমন করুণ কাহিনীর কথাই শোনালেন। মা দুর্গার কাছে এখন তাঁদের চাওয়া একটাই, সরকারি আবাস যোজনায় একটা ঘর।

কথায় আছে, 'নদীর পাড়ে বাস দুঃখ বারো মাস'! ঠিক এই কথাটাই এখন প্রতি মুহূর্তে ভাবাচ্ছে জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম শিয়ালী ও কোরার বাসিন্দাদের। তাঁদের  গ্রামের কাছ দিয়েই বয়ে গিয়েছে দামোদর। কোনও বছর বৃষ্টি একটু বেশি হলেই DVC জল ছাড়ে। বিপদ বাড়ে। নিম্ন দামোদর এলাকায় বন্যা আর নদী পাড়ের ভাঙন অবধারিত হয়ে পড়ে। বন্যায় শুধু ঘর বাড়ি জলের তলায় চলে যায় না, চাষের জমিও নষ্ট হয়ে যায়। 

কোরা গ্রামের বৃদ্ধা মেনকা বাউরি বলেন, "বন্যা আর ভাঙন, এই দুইকে ভবিতব্য মেনে নিয়েই আমাদের জীবন কাটে। আমরা গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। ছিটেবেড়ায় মাটির প্রলেপ দেওয়া ঘরই আমাদের সম্বল। এবারের বন্যা আমাদের সেই বাসস্থানটাই তছনছ করে দিয়েছে। বাঁশের ঠেকনায় ঘরটা কোনও রকমে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরের আশেপাশে হরদম সাপ ঘোরা-ফেরা করছে। তবুও কোনও উপায় না থাকায় ওই ঘরেই এখন আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে। মা দুর্গা আমাদের দিকে মুখ ফিরে চাইলে তবেই হয়তো আমাদের সরকারি পাকা বাড়ি পাওয়ার সৌভাগ্য হবে।"

আরও পড়ুন- Kolkata Metro-Durga Puja 2024: পুজোয় মেট্রোয় চড়ে ঠাকুর দেখার উৎসাহ আরও বাড়বে, ফাটাফাটি বন্দোবস্তের ঢালাও প্রশংসা!

আরও পড়ুন- Junior Doctor's Hunger Strike: আন্দোলনের সমর্থনে গণইস্তফা আরজি করের ৫০ সিনিয়র ডাক্তারের, কী বলছেন চিকিৎসক সংগঠেনর নেতারা?

বন্যা পরবর্তীতে জীবন দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না কোরা গ্রামের দরিদ্র পরিবারের তিন বধূ মামনি বাউরি, কল্পনা বাউরি ও ফুলেশ্বরী বাউরি। তাঁরা বলেন, “দেবীপক্ষ তখনও পড়েনি। কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় গ্রামের মানুষের কাছে খবর পাই DVC নাকি প্রচুর জল ছেড়েছে। তারপর রাত পেরোতে না পেরোতেই দেখি দামোদরের জলে টইটুম্বুর হয়ে গিয়েছে। আমাদের গ্রামেও হু-হু করে ঢুকতে শুরু করে। মুহুর্তের মধ্যে আমাদের ঘর বাড়ি ও এলাকার চাষ জমি সব জলে ডুবে যায়। জীবন বাঁচাতে শিশু সন্তান সহ পরিবারের সবাই নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধে গিয়ে উঠি। ত্রিপল খাটিয়ে দু’তিন দিন বাঁধেই কাটাতে হয়।" বন্যার বিভৎসতার একই রকম অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন শিয়ালী গ্রামের বিকাশ রায়,বাপি রায়,কনকলতা রায়, চাঁপা রায় ও মিঠু রায়’রা । 

আরও পড়ুন- Abhishek Banerjee: অভিষেকের মেয়েকে নিয়ে কুমন্তব্য, পুলিশি হেফাজতে দুই তরুণীকে 'বেধড়ক মারধরে' CBI নির্দেশ

দিন দুয়েক আগেও শিয়ালী ও কোরা গ্রাম পৌঁছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়ির অবস্থা নিজে দেখে যান জেলাশাসক আয়েষা রাণি এ। ওই দিন জেলাশাসক জানিয়ে যান, যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের নাম 'বাংলা আবাস যোজনার' তালকায় তুলে দেওয়ার জন্য তিনি  জামালপুর ব্লকের বিডিও-কে নির্দেশ দিয়েছেন।

Flood Like Situation Bengal Floods Bengal Flood Durgapuja Flooded Purba Bardhaman
Advertisment