West Medinipur heavy rain alert: দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে মঙ্গলবার থেকে অবিরাম বৃষ্টি চলছে। পাঞ্চেত, মাইথন থেকে জল ছাড়ার পরে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও জল ছাড়া শুরু হয়। শুক্রবারও ৪৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন। এদিন সেচমন্ত্রী দুর্গাপুর ব্যারাজের সংস্কারের কাজের পর চালু রাস্তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এদিন সেচমন্ত্রী বলেন, "৪৫ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করা হয়েছে। বর্ষা এসে গিয়েছে। ফলে বাকি যেসব কাজ রয়েছে তা বর্ষার পরেই শুরু হবে।" এদিকে, ব্যারাজের ছাড়া জলে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নিচু এলাকায় জল ঢুকেছে। বাঁকুড়ার তালডাংরায় জলের তোড়ে বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়েছে। এলাকায় ত্রাণ শিবির পর্যন্ত চালু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-সহ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার দুর্গাপুর ব্যারাজ পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেচমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে না। রাজ্যের হকের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। তাই ড্রেজিং করা সম্ভব হচ্ছে না।" রাজ্য ও DVC-এর মধ্যে বারবার জল ছাড়া নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দেয় তা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে সেচমন্ত্রী বলেন, “এই মুহুর্তে এই বিতর্কে যাব না। ৪৫ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করা হয়েছে। মাঝে ৬ দিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছিল বলে কাজে কিছু অসুবিধা দেখা দিয়েছিল। তবু কাজ ৪৫ দিনের মধ্যেই শেষ করা গিয়েছে। হায়দ্রাবাদ থেকে রাবার সিল আসছে, তা দিয়ে কাজ করা হবে।"
সেচমন্ত্রীর কথায়, "দেড় মাস দুর্গাপুর ব্যারাজে জল ধরে রাখা হয়। এরপরে দুর্গাপুর, মাইথন ও পাঞ্চেত নিয়ে একটি সেল গঠন করা হয়েছে এবং মনিটরিং করা হচ্ছে জল ছাড়া নিয়ে যেন মানুষের ক্ষতি না হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে এবং বিভিন্ন জেলা এবং ঝাড়খণ্ডের জল নামছে, ফলে সমস্ত বিষয়ের উপরে নজর রাখা হয়েছে।" তেনুঘাট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেচমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, সেচ দপ্তরের কর্তারা এবং আমি নিজে বারবার কথা বলেছি। তেনুঘাটকে নিয়ন্ত্রণে রেখে অপারেট করা যায়।"
আরও পড়ুন- Purulia road accident:পুরুলিয়ায় ভয়াবহ ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় মৃত্যুমিছিল! স্বজনহারাদের বুকফাটা কান্না-আর্তনাদে হাহাকার!
সেচমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী এবং সেচ দপ্তর মাইথন, পাঞ্চেত এবং দুর্গাপুর ব্যারাজের জল ছাড়ার উপরে রাখছে। শুক্রবার ৪১ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি এড়াতে সজাগ রয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
এরই পাশাপাশি সেচমন্ত্রী ব্যারাজগুলির গভীরতা কমে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা না দেওয়াকেই দায়ী করেছেন। এই বিষয়ে মানস ভুঁইয়া বলেন, "১২ বছর ধরে কেন্দ্রের জলসম্পদ দপ্তর, প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার দেখছি দেখছি করে পার করে দিচ্ছে। রাজ্যের হকের টাকা দিচ্ছে না।"
আরও পড়ুন- Sukanta Majumder: বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ দিবসে হৈ-হৈ কাণ্ড কলকাতা, পুলিশের সঙ্গে তুমুল বচসা, রণক্ষেত্র পরিস্থিতি
ব্যারাজগুলি নাগাড়ে জল ছাড়তে থাকলে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এই আশঙ্কা নিয়ে সেচমন্ত্রী বলেন, "আমরা প্রার্থনা করছি, যেন বন্যার মুখে পড়তে না হয়। দেড় মাস জল ধরে রাখা হয়। এখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে জলের চাপ বাড়ছে, সেদিকেই নজর রাখতে হচ্ছে।"
দুর্গাপুর ব্যারাজের এক নম্বর গেটে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে এদিন মানস ভুঁইয়া বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এক কানা কড়ির সাহায্য পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজের রাজ্যের কোষাগার থেকেই খরচ করে কাজ করছেন। একটা নয়া পয়সা কেন্দ্রের সরকার দেয়নি। তবু একের পর এক কাজ হচ্ছে এবং এটাও করা হবে।"