Flood Situation in Bengal: বাংলার বন্যা 'ম্যান মেড' বলে কেন্দ্রের উপর আগেই দায় চাপিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে কেন্দ্রের দাবি নস্যাৎ করে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বাংলার বন্যা নিয়ে কড়া চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে ডিভিসির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। এবার বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। রাজ্য-কেন্দ্রের সংঘাতে ডিভিসি-র বোর্ড এবং ডিভিআরআরসি থেকে ইস্তফা দিলেন রাজ্যের দুই শীর্ষ আধিকারিক। ডিভিসি বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ দফতরের সচিব শান্তনু বসু। ডিভিআরআরসি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাজ্যের প্রতিনিধি তথা সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার।
বিরোধীদের গণপিটুনির নিদান, শাসক বিধায়কের মন্তব্যে শোরগোল বাংলা
পুজোর আগে বাংলায় বন্যাপরিস্থিতি। এনিয়ে এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে জল ছাড়ার জন্য কার্যত ডিভিসিকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই সঙ্গে মমতার মুখে শোনা গিয়েছিল 'ম্যান মেড বন্যার' তত্ত্বও। ডিভিসির সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। এর পর কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে রাজ্যকে লেখা চিঠিতে মমতার সেই দাবিতে নস্যাৎ করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করে জানানো হয় রাজ্যের সম্মতি নিয়ে জল ছাড়ে ডিভিসি। এবার সেই চিঠির পালটা সাড়ে চার পাতার চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের দাবিকে উড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
নিন্মচাপের জেরে বাংলায় বন্যা পরিস্থিতি। পুজোর আগে বানভাসি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। জল কিছুটা কমলেও এখনও দুর্ভোগ কাটেনি। এরই মধ্যে মমতার মুখে উঠে এসেছে 'ম্যান মেড বন্যার' তত্ত্ব। ডিভিসির অতিরিক্ত জল ছাড়ার ফলেই যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা প্রায় একপ্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মমতা কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, 'নিজেদের রাজ্যকে বাঁচাতে বাংলাকে ডুবিয়েছে'। বন্যাপরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে এনিয়ে চিঠিও লিখেছেন মমতা। সেই চিঠিতে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকেই দায়ি করা হয়েছে। এর পালটা রাজ্যকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক। সেই চিঠিতে দাবি করা হয় রাজ্যের সম্মতি নিয়েই ডিভিসি জল ছাড়ে। এই চিঠির পালটা ফের মমতা মোদীকে একটি চিঠি লেখেন, তাতে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, 'রাজ্যের সম্মতি নিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ে এই দাবি মানতে পারছি না'। সাড়ে তিন ঘন্টা নোটিসে ৯ ঘন্টা ধরে জল ছাড় হয়েছে। কোন কোন সময়ে জল ছাড়ায় বিষয়ে রাজ্যকে কিছু জানানোও হয় না। সব সিদ্ধান্ত একাই নেয় কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক'।
'RG Kar করে দেব', সরকারি হাসপাতালে নার্সকে 'ভয়ঙ্কর' হুমকি! গ্রেফতার এক
এর আগে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিকে দুষে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মমতা। সেই চিঠির পালটা জবাব দিয়ে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী চিঠি দিয়ে মমতার দাবিকে নস্যাত করে। এবার চার পাতার চিঠি লিখে গোটা বিষয়কে অস্বীকার করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল রাজ্যকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই জল ছাড়া হয়। ২০ তারিখ মোদীকে লেখা প্রথম চিঠিতে মমতা দাবি করেন ঝাড়খণ্ডের ডিসিভি রিজার্ভার থেকে জল ছাড়ার ফলেই ভেসেছে বাংলা। জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে পালটা চিঠিতে জানানো হয়েছে, যে কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে জল ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাতে থাকেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিও। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর তরফে চারপাতার চিঠিতে জলশক্তি মন্ত্রকের বক্তব্যেকে মান্যতা দিতে রাজি নয় রাজ্য। পাশাপাশি চিঠিতে বলা হয়েছে যে কমিটির কথা বলা হচ্ছে সেই কমিটিতে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা একক ভাবে নেন। অনেক সময় রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়া হয়।