সব সমালোচনার বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য মন্ত্রীদের তাঁর সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে "রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট" বলে অভিযুক্ত রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার বলেন, "সংবিধান রক্ষা করার জন্য দ্বিধাহীনভাবে কাজ করে যাব।" কলকাতা চেম্বার অফ কমার্সের ১৮৮তম জেনারেল মিটিং উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেন, "আমার কোনও উদ্দেশ্য নেই। আমি যে শপথ নিয়েছি তা নিয়েই বেঁচে থাকব। আমার শপথ হল সংবিধানকে সমর্থন এবং রক্ষা করা এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সেবা করা। তাই কাজ করতে আমি দ্বিধা বোধ করব না। আর আমি যদি দ্বিধাচিত্ত হয়ে কাজ করি, সেক্ষেত্রে নিজের গ্রহণ করা শপথকেই অপমান করা হবে, যা আমি কখনই করব না।"
আরও পড়ুন, কেন ম্যাথুকে পাঠিয়েছিলেন? মির্জার গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুললেন মুকুল
তবে রাজ্যপালের এমন ক্ষোভের মন্তব্যর পিছনে রয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। যাদবপুর কাণ্ডের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে যাওয়া নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "নতুন রাজ্যপালের বক্তব্যের মধ্য দিয়েই তাঁর অবস্থান সকলের সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে। রাজ্যপাল পদে আসার ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে সুর তুলে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি নিরপেক্ষ নন, এবং তিনি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট।"
আরও পড়ুন, রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা, টুইট মমতার
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র ঘেরাও নিয়ে রাজ্যপালের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যাওয়া এবং বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করা নিয়েই তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল শাসক দলের অন্দরে। তৃণমূলের তরফে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে আমল না দিয়েই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যপাল, যিনি পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও বটে। ঘাসফুল শিবিরের এহেন মন্তব্যর বিরোধিতা করে রাজ্যপাল ধনকড় বলেন, "রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কোনও রকম সমস্যার ক্ষেত্রে আমি বুক পেতে দিতে রাজি।"
তবে রাজ্যের শাসক শিবিরের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন রাজ্যপাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ধনকড় বলেন, "বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর আমলে যেভাবে উন্নতি হয়েছে রাজ্যের, তা প্রশংসার দাবি রাখে। আমি যখন শিলিগুড়ি গেলাম, সেখানেও উন্নয়নের একই চিত্র দেখতে পেলাম। আমি যখন সেখানকার কনভেনশন সেন্টারে গেলাম, দেখলাম সেটা দেশের মধ্যে সেরা। আমি তখনই মুখ্যমন্ত্রীকে মেসেজ পাঠিয়ে বলি, তিনি যা করেছেন তা এক কথায় অসাধারণ।"
আরও পড়ুন, ভয় নেই, বাড়ল রেশন কার্ড সংশোধনের সময়
এমনকি মহানগরের উন্নয়নের প্রসঙ্গেও রাজ্যপালের মত, "ব্রিটিশ আমলে কলকাতা যে জায়গায় ছিল, আমাদের উচিত তা পুনরুদ্ধার করা। রাজ ভবন একটা ঐতিহ্য বহন করছে। শুধু তাই নয়, কলকাতার শক্তি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সাহিত্য আরও অনেক কিছুর সঙ্গেই জড়িত এই রাজভবন। কলকাতার গরিমাকে পুনরুদ্ধার করতে সচেষ্ট হওয়া উচিত আমাদের।"
Read the full story in English