Advertisment

Gurap rape-murder case: গুড়াপে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ-খুনে ফাঁসির সাজা, কান্নায় ভেঙে পড়লেন নির্যাতিতার মা

Gurap rape and murder case verdict: গত বছর ২৪ নভেম্বর হুগলির গুড়াপ থানা এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে চকোলেটের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নেয় প্রতিবেশী প্রৌঢ় অশোক সিং।

author-image
Uttam Dutta
New Update
Gurap rape and murder case: ফাঁসি সাজা ঘোষণার পর আদালত থেকে আসামীকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

Gurap rape and murder case: ফাঁসি সাজা ঘোষণার পর আদালত থেকে আসামীকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

Gurap rape and murder case verdict: গুড়াপে ৫ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় ৫২ দিনের মধ্য়ে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত আর ৫৪ দিনের মাথায় ফাঁসির সাজা! বলা যেতে পারে নতুন বছরে নতুন আইনে এত কম সময়ের মধ্যে সাজা প্রদান করে দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল চুঁচুড়া পকসো আদালত। শুক্রবার বিকেলে এই মামলার মূল আসামি অশোক সিংয়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন চুঁচুড়া পকসো আদালতের বিচারক চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তী। 

Advertisment

পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর ২৪ নভেম্বর হুগলির গুড়াপ থানা এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে চকোলেটের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নেয় প্রতিবেশী প্রৌঢ় অশোক সিং। মেয়ে মাংস খেতে চেয়েছিল তাই ওই শিশুর বাবা বাজার থেকে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বেশ কিছুক্ষণ তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাড়া-প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে এসে শিশুটির খোঁজ শুরু করেন। 

এরপর অভিযুক্তের বাড়ি থেকে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ধনিয়াখালি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ঘটনা জানাজানি হতে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। গণধোলাই দেওয়া হয় অভিযুক্তকে। পরে পুলিশ গিয়ে রাতেই অভিযুক্তকে আটক করে। আহত থাকায় তাকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন শিশুর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল ঘিরে পুলিশ পিকেট বসানো হয়। ফরেনসিক দল এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। 

হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, এই মামলায় অভিযুক্ত ৪২ বছরের প্রতিবেশী অশোক সিংকে 'জেঠু' বলে ডাকত শিশুটি। ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর অর্থাৎ ঘটনার রাতেই তাকে গ্রেফতার করে গুড়াপ থানার পুলিশ। পরদিন, ২৫ নভেম্বর, ডিএসপি প্রিয়ব্রত বক্সির নেতৃত্বে গঠিত হয় স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন হুগলি (গ্রামীণ) জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। মামলায় তদন্তকারী অফিসার নিযুক্ত হন ধনেখালির সার্কেল ইনস্পেকটর রামগোপাল পাল। 

Advertisment

আরও পড়ুন মা-বাবা এবং বোনকে নৃশংস হত্যা, ৩ বছর পর ফাঁসির সাজা প্রমথেশ অঙ্কের মাস্টারের

২৪ নভেম্বরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞরা। ময়নাতদন্ত হয় কলকাতায়, মেডিক্যাল কলেজে গঠিত হয় তিনজন অটপ্সি সার্জেন-এর মেডিক্যাল বোর্ড। আগাগোড়া পরিবারের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন সিট-এর সদস্য তথা গ্রিভান্স অফিসার সাব-ইনসপেক্টর শশধর বিশ্বাস, যিনি প্রতি মূহুর্তে শিশুটির বাবা-মাকে তদন্ত এবং বিচারপর্বের খুঁটিনাটি সম্পর্কে অবগত রাখেন।  

প্রথম থেকেই এই মামলায় পেশাগত তাগিদ ছাড়াও যেন বৃহত্তর কোনও এক চালিকাশক্তি কাজ করছিল মামলায় সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যেই। হয়তো সেই কারণেই চার্জশিট জমা পড়ে ঘটনার মাত্র ১৩ দিনের মাথায়। হুগলির বিশেষ পকসো আদালতে বিচারক চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তীর এজলাসে বিচারপর্ব শুরু হয় ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪। পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত হন শ্রী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায়, দ্রুত বিচারের স্বার্থে মামলাটি 'ফাস্ট ট্র‍্যাক' করেন বিচারক। 

আরও পড়ুন জয়নগরে ধর্ষণ-খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা মুস্তাকিন সর্দারকে, ৬৩ দিনের মধ্যে রায়দান আদালতের

৯ ডিসেম্বর এই মামলায় চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।  চার্জ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। মোট ২৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এই মামলার সরকারি আইনজীবী  জানান, "নতুন যে বিএনএস আইন এসেছে, তাতে এত দ্রুত বিচার পর্ব শেষ হওয়া একটা দৃষ্টান্ত। বিচারপর্ব শুরু হওয়ার পর বড় দিনের সময় সাত দিন ছুটি ছিল। না হলে আরও আগে নিষ্পত্তি হত মামলার। এদিন মামলার রায় বের হওয়ার পর হুগলি পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন সিঙ্গুরে নিজের অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন।

আদালতের রায়ের পর কেঁদে ফেলেন নির্যাতিতার মা। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, 'আজ মেয়েটার জন্মদিন ছিল। জন্মদিনে কেক খেতে চেয়েছিল মেয়েটা! সেটা তো আর খাওয়াতে পারলাম না।' তবে পুলিশি তদন্ত এবং আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে খুশি তিনি। বলেন, 'পুলিশের উপরেই সব ছেড়ে দিয়েছিলাম। পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।'
 

pocso Hooghly Minor Rape and Murder POCSO Act hooghly news
Advertisment