Burdwan Accident News: ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া বাবার দেহাংশ রাস্তা থেকে তুলতে বাধ্য করানো হলো ছেলেকে—এমন মর্মান্তিক ও নির্মম ঘটনায় তোলপাড় পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহর। পুলিশের বিরুদ্ধে এই অমানবিক ভূমিকার অভিযোগ উঠতেই নিন্দার ঝড় বইছে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে।
সোমবার রাত প্রায় ৮টা নাগাদ গুসকরা বাস টার্মিনাসের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। একটি পাথর বোঝাই ডাম্পার ধাক্কা মেরে পিষে দেয় বছর ৬০-এর লটারি বিক্রেতা প্রদীপ কুমার দাসকে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি গুসকরা পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শিরিষতলার বাসিন্দা ছিলেন। জানা গেছে, প্রদীপবাবু শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে লটারি টিকিট বিক্রি করতেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান তাঁর ছেলে সুদীপ দাস। তাঁরই বর্ণনায়, ঝড়-বৃষ্টির পরে রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন প্রদীপবাবু। ঠিক তখনই পিছন দিক থেকে আসা একটি ডাম্পার ধাক্কা মেরে তাঁকে ফেলে দিয়ে শরীরের উপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর দেহ। আর এরপরেই পুলিশ তাঁকে—একজন শোকার্ত ছেলেকে—বাবার দেহাংশ রাস্তা থেকে তুলতে বলে।
সুদীপ বলেন, “পুলিশ বলল, আমি যেন দেহাংশ গুলি রাস্তা থেকে তুলে দিই। ওরা কিছু করল না, আমাকেই তুলতে হলো। এটা আমি কোনওদিন ভুলতে পারব না।”
এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ। কলকাতা হাইকোর্টের সিনিয়ার আইনজীবী রবিশংকর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আইনত পুলিশের এমন নির্দেশ দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী। এটি নির্মমতার এক জ্বলন্ত উদাহরণ।” জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “তৃণমূল সরকারের আমলে পুলিশ তাদের বিবেক হারিয়েছে। গুসকরার ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।”জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় জানান, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
গুসকরার এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে—সংবেদনশীলতা কি আজ পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছে প্রশাসন?